Fruit that eats you back

আপনি ফল খান, কিন্তু ফলও কি আপনাকে ‘খেতে’ পারে? এক চেনা ফল সম্পর্কে তেমনই বলা হয়! কেন?

এটি সেই জাতের খাবার, যার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ শক্তি। যাতে কোনও জীবজন্তু তাদের সহজে না খেতে পারে। আর তাই এই ফল মুখে যাওয়া মাত্রই অনেকের মুখে জ্বালা বা চুলকানির অনুভূতি হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ ১৭:৪২
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

শিরোনাম পড়ে অবাক হলেন? ফলের নাম শুনলে আরও চমকে যাবেন! কারণ ওই ফল খুব চেনা এবং তাকে উপকারী বলেই চিনে এবং জেনে এসেছেন আপনি। ফলের নাম আনারস।

Advertisement

খাবার এবং তার পুষ্টিগুণ নিয়ে প্রতি মুহূর্তে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায় যে দুনিয়া, সেই জগতের অনেকেই আনারসকে একটি বিশেষ নামে ডাকেন। ‘ফ্রুট দ্যাট ইটস ইউ ব্যাক’। অর্থাৎ, যে ফল পাল্টা আপনাকে খায়!

কেন এমন বলা হয়?

Advertisement

উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, আন্তর্জাতিক স্তরের বহু পুষ্টিবিদ এ ব্যাপারে তাঁদের মতামত লিখেছেন। এমনকি, এই বিষয়ে বেশ কিছু গবেষণাও হয়েছে। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-এর জার্নাল ‘মেডিলাইন প্লাস’-এর একটি প্রতিবেদনে যেমন স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে আনারসের এই বৈশিষ্ট্যের কথা। কেন এমন হয়, তার কারণও ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, এর জন্য দায়ী আনারসে থাকা এক বিশেষ এনজ়াইম। যার নাম, 'ব্রমেলাইন'।

ব্রমেলাইন কী করে?

খাবার এবং তার গুণাগুণ নিয়ে লেখালিখি করা আমেরিকার এক লেখক কেভিন এল নাইটস লিখছেন, “এক বার আনারস খাওয়ার পরে আমার ঠোঁট ফেটে রক্ত বেরিয়েছিল। দেখে প্রথমে অবাক হলাম। তার পরে খোঁজখবর শুরু করলাম। বহু গবেষকের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, আনারস হল সেই জাতের খাবার, যার মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে রয়েছে কিছু প্রতিরোধ শক্তি। যাতে কোনও জীবজন্তু সহজে ওই ফল না খেতে পারে তার জন্যই থাকে ওই ব্যবস্থা। আনারস মুখে যাওয়া মাত্রই অনেকের মুখে যে জ্বালা বা চুলকানির অনুভূতি হয়, তা ওই প্রতিরোধ শক্তির কারণেই।”

আনারসের ওই প্রতিরোধন শক্তিই হল ব্রমেলাইন। শরীরে ব্রমেলাইনের প্রভাব কী, তা বুঝিয়ে বলেছেন পুষ্টিবিদ শ্রেয়া চক্রবর্তী। তিনি বলছেন, “ব্রমেলাইন শরীরে যাওয়া মাত্রই শরীরের পেশিতন্তুতে থাকা প্রোটিনকে আক্রমণ করে তাকে ভাঙতে শুরু করে।”

আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-এর জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রেও বলা হচ্ছে, ‘‘ব্রমেলাইনের ওই কাজের জন্যই এটি খাওয়ার পরে মুখে অস্বস্তি হয়। কারণ, মুখের ভিতরের পেশিতন্তুতে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে। ব্রমেলাইনের সংস্পর্শে তা ভাঙতে শুরু করলে জিভে বা মুখের পেশিতে পিন বেঁধার মতো অনুভূতি হয়।’’ বিষয়টি এতটাই কার্যকরী যে, অনেকে রান্না করার আগে মাংসকে নরম করার জন্যও আনারসের রস ব্যবহার করেন।

তবে কি আনারস ক্ষতিকর?

একেবারেই নয়। বরং তার এই বৈশিষ্ট্য সাধারণত শরীরের উপকারেই লাগে। বহু গবেষণাতেই দেখা গিয়েছে যে, ব্রমেলাইন শরীরের সেই সমস্ত প্রোটিনগুলিকেই আক্রমণ করে, যেগুলি প্রদাহের কারণ। তাতে ক্যানসারের মতো অসুখ দূরে থাকে। পুষ্টিবিদ শ্রেয়া বলছেন, ‘‘শুধু আনারস খেয়ে ক্যানসার সারানো যাবে না। তবে আনারসে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্যানসার রোধ করতে সাহায্য করে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement