রাতে ঘুমের সমস্যা ক্রনিক হয়ে গেলে সতর্ক হোন। ছবি: ফ্রিপিক।
দিনভর ঝিমুনি, ক্লান্তি ভাব, রাতে ঘুম না আসাও লিভারের রোগের লক্ষণ? যত গন্ডগোল লিভারেই। সেখানে গোল বাধলে, সারা শরীরে তার প্রভাব পড়ে। লিভারের সমস্যা যদি গুরুতর হয়, তা হলে এমন কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখা দেয়, যাকে রোজের সমস্যা ভেবে ভুল করেন অনেকে। ‘জার্নাল অফ হেপাটোলজি’ ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুসারে, লিভারের জটিল রোগ হল ‘হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি’। এই রোগের বিষয়ে অনেকেই জানেন না। তাই এর উপসর্গ সম্পর্কেও সচেতনতা কম। ফলে চিকিৎসাও শুরু হয় দেরিতে।
হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি কী?
লিভারে টক্সিন জমতে থাকলে তখন লিভারের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই টক্সিন যদি শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে না পারে এবং পরতে পরতে জমা হতে থাকে, সে ক্ষেত্রে তা রক্তস্রোতে বাহিত হয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের কোষগুলিরও ক্ষতি করে। ফলে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি সাধারণত সেই সব ব্যক্তিদের হয়, যাঁদের যকৃতের গুরুতর রোগ আছে। যেমন কারও যদি ফ্যাটি লিভার দীর্ঘ সময় ধরে থাকে অথবা লিভার সিরোসিস থাকে, তা হলে এনসেফ্যালোপ্যাথির ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার বারে বারে জন্ডিস হয়েছে বা হেপাটাইটিস বি অথবা সি-এর সংক্রমণ ঘটেছে, তাঁরাও ঝুঁকিতে থাকবেন।
লক্ষণ কী কী?
হেপাটিক এনসেফ্যালোপ্যাথি হলে হরমোনের গোলমালও হয়। ঘুমের জন্য দায়ী যে হরমোন মেলাটোনিন, তার ক্ষরণে তারতম্য ঘটে। ফলে ক্লান্তি ভাব, ঝিমুনি বেড়ে যায়। দিনের বেলায় ক্লান্তি আসে, কিন্তু রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। পাশাপাশি, শরীরের তাপমাত্রাও ওঠানামা করে, প্রদাহ অনেক বেড়ে যায়।
এই রোগের কারণে স্নায়বিক সমস্যাও দেখা দেয়। লিভারে জমা টক্সিন রক্তস্রোতে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছয়, ফলে বিভ্রান্তি, মনোযোগের অভাব ও সাময়িক স্মৃতিনাশ হতে পারে।
মুঠো মুঠো ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ বেশি খেলে এবং রাতের পর রাত জাগলে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।