Menstrual Pain

পুজোর মধ্যে ঋতুস্রাবের দিন? ঋতুচক্র পিছিয়ে দেওয়ার বা ব্যথা কমানোর ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে

পুজোর মধ্যে যদি ঋতুস্রাবের দিন পড়ে, তা হলে ঋতুচক্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার বা ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা না করাই ভাল। এতে বিপদ বাড়বে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৩
Share:

পুজোর মধ্যে ঋতুস্রাবের দিন, ব্যথা সামাল দেবেন কী ভাবে? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে, কোমরে যন্ত্রণা কমবেশি সব মেয়েরই হয়। মাসের ওই ক'টা দিন হরমোনের ওঠানামার জন্য মেজাজেও নানা রকম ওঠাপড়া লেগেই থাকে। রোজকার কাজেও তার প্রভাব পড়ে। ক্যালেন্ডারে ঋতুস্রাবের দিনগুলি নিয়েই বড় চিন্তা। হয়তো কোনও অনুষ্ঠান রয়েছে, অথবা উৎসব-পার্বণে যোগ দেবেন ভাবছেন, ঠিক সেই সময়টিতেই ঋতুস্রাবের দিন পড়লে উদ্বেগে ভোগেন অনেকেই। বিশেষ করে পুজোর মধ্যে যদি ঋতুস্রাবের দিন পড়ে, তা হলে ঋতুচক্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার বা ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা না করাই ভাল। এতে লাভ কিছুই হবে না, উল্টে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটিকে পিছিয়ে দিতে গিয়ে বিপদ আরও বাড়বে।

Advertisement

ঋতুস্রাব পিছোনোর ওষুধ খাওয়া ভাল না খারাপ, তা না জেনেই ইন্টারনেট ঘেঁটে এমন অনেক রকম ওষুধ খেয়ে ফেলেন মেয়েরা বা ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করতে শুরু করেন, যার পরিণতি পরবর্তী সময়ে গিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এ বারও পুজোর সময়ে যাঁরা এমন ওষুধ খাবেন বলে ভেবে রেখেছেন বা সংগ্রহে রেখেছেন, তাঁরা সাবধান হয়ে যান। এই বিষয়ে চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের মত, “ঋতুস্রাব স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে নানা সংস্কার ও কুসংস্কার জুড়ে গিয়েছে বলেই এত রকম সমস্যা হচ্ছে। ঋতুস্রাব নিয়ে মহিলাদের এখনও নানা জায়গায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তার থেকেই এই পিছিয়ে দেওয়ার ভাবনা এসেছে। এবং গাদা গাদা ওষুধ খেয়ে মারাত্মক সব শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।”

সাধারণত ঋতুস্রাব যে দিন থেকে শুরু হবে, তার দুই থেকে তিন আগে ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হয়। ঋতুস্রাব যত দিন পিছোতে চাইছেন, তত দিন ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করার তিন থেকে চার দিনের মাথাতেই ঋতুচক্র শুরু হবে। এই যে একটানা ঋতুকালীন চক্রকে থামিয়ে রাখার প্রক্রিয়া, তাতেই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মাসিক চক্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। অনিয়মিত রক্তপাত, শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি ফুলে ওঠা, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, মাইগ্রেন, হাঁপানির সমস্যা, মস্তিষ্কে ও ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। হজমের গন্ডগোল শুরু হতে পারে, ওজন বাড়তে পারে, স্তনে শক্ত পিণ্ড বা টিউমারও তৈরি হতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক। এমনকি, ব্যথা কমানোর ওষুধও একই সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে মত চিকিৎসকের। তা হলে উপায়?

Advertisement

ঋতুস্রাবের ব্যথা কমাতে প্রাকৃতিক উপায়ই ভরসা হোক

ঋতুস্রাব সময়কালীন যন্ত্রণাকে ‘ডিসমেনোরিয়া’ বলে। এটি দু’ধরনের হতে পারে। ঋতুস্রাবের প্রথমে তলপেটে বেশি ব্যথা হয়, একে ‘প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া’ বলে। কমবয়সি, অবিবাহিতদের ক্ষেত্রেই এটা বেশি দেখা যায়। অন্য দিকে, তলপেটে সংক্রমণ, ফাইব্রয়েড, পলিপ বা এন্ডোমেট্রিয়োসিসের কারণে ব্যথা হলে তাকে ‘সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া’ বলে। ব্যথা কমাতে ওষুধ না খেয়ে ভেষজ চা খেতে পারেন। আদা, লবঙ্গ, দারচিনি, ছোট এলাচ দিয়ে ফোটানো চা ব্যথা উপশমে অনেকটাই সাহায্য করবে।

হলুদ প্রদাহনাশক। হালকা গরম জলেও হলুদ গুলে খাওয়া যেতে পারে। হলুদ জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়াও হলুদ হল

হলুদ ব্যথা ও প্রদাহনাশক। হালকা গরম জলেও হলুদ গুলে খাওয়া যেতে পারে। হলুদ জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়াও হলুদ হল ইস্ট্রোজেনের প্রাকৃতিক উৎস। দুধে হলুদ গুলেও খেতে পারেন।

ঋতুস্রাবের সময় চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। মিষ্টি খেলে বেড়ে যাতে পারে ব্যথা। চটজলদি ব্যথা কমাতে তিলের তেল গরম করে মাখতে পারেন পেটে। এতেও ব্যথা অনেকটা কমতে পারে।

তলপেটে বা পিঠের দিকে গরম প্যাড বা উষ্ণ তোয়ালে রাখুন। গরম জলে স্নান করলেও ব্যথা কমে।

পালংশাক, বাদাম, কলা, ডার্ক চকোলেট ম্যাগনেশিয়ামের ভাল উৎস। এগুলি খেলেও যন্ত্রণা কমবে অনেকটাই।

হাঁটাহাঁটি, হালকা স্ট্রেচিং ও কিছু যোগাসন যেমন ভুজঙ্গাসন, পশ্চিমোত্তাসন করলেও ব্যথা কমবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement