Heart Disease

ভ্রূণের হার্টে ছিদ্র? শিশুর স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটির ত্রিমাত্রিক ছবি দেখিয়ে বিপদ ঠেকাবে এমআরআই মডেল

হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মাতে পারে শিশু। নবজাতকের হার্টে ছিদ্র বা ব্লকেজ থাকলে, আতঙ্ক কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তাই আগে থেকে হার্ট ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গের অস্বাভাবিকতা ধরতে এমআরআই-এর নতুন ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছেন গবেষকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:১৬
Share:

গর্ভেই শিশুর অস্বাভাবিকতা ধরবে নতুন এমআরআই মডেল। ছবি: ফ্রিপিক।

গর্ভেই শিশুর শরীরে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা দিচ্ছে না তো? হার্ট ও মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা আগে থেকেই জানতে নতুন এক ধরনের ম্যাগনেটিক রেজ়োন্যান্স ইমেজ়িং (এমআরআই) মডেল তৈরি করেছেন আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-র গবেষকেরা। এখানে শিশুর হার্ট ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ত্রিমাত্রিক ছবি ফুটে উঠবে, যা দেখে কোনও দুরারোগ্য ব্যাধির আশঙ্কা আছে কি না, তা বুঝতে পারবেন গবেষকেরা।

Advertisement

বিপাশা বসুর কন্যা দেবীরও জন্মের পরে হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে। জানা গিয়েছিল, ছোট্ট দেবী ‘ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট’-এ ভুগছে। তার হার্টে দু’টি ছিদ্র ধরা পড়েছিল। অত ছোট শিশুর অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকেরা। তিন মাস পরে ওপেন হার্ট সার্জারি হয় দেবীর। শুধু দেবী নয়, এমন সমস্যা নিয়ে জন্মায় অনেক শিশুই। তাই আগে থেকেই যাতে এই সমস্যা ধরা পড়ে ও তার প্রতিকার করা যায়, সে জন্যই নতুন এক এমআরএই স্ক্যানের মডেল তৈরি করেছেন গবেষকেরা।

এমআইটির কম্পিউটার সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ল্যাবরেটরির গবেষকেরা এই থ্রিডি এমআরআই মডেল তৈরি করেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে ‘মেশিন লার্নিং’-এর সহায়তায় এর অ্যালগরিদ্‌ম তৈরি হয়েছে। গবেষণায় সাহায্য করেছে বস্টন চিলড্রেন স্কুল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল। নতুন এই পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফিটাল এসএমপিএল’। এর সাহায্যে স্ক্যান করে ধরা যাবে, গর্ভস্থ শিশুর হার্টে কোনও সমস্যা আছে কি না। এ থেকে শিশুর শারীরিক গঠন কেমন জানা যানে এবং সেখানে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা থাকলে তা-ও ধরা পড়বে।

Advertisement

গর্ভস্থ ভ্রূণের হার্টে কোনও সমস্যা আছে কি না তা জানা যায় ‘ফিটাল ইকো কার্ডিওগ্রাফি’ করে। জন্মের আগে ‘ফিটাল ইকো কার্ডিওগ্রাফি’ করানো হয়। এ ক্ষেত্রে আগে থেকে বোঝা সম্ভব যে, গর্ভস্থ ভ্রূণের হার্টের সমস্যা রয়েছে কি না। কিছু ক্ষেত্রে গর্ভেই অস্ত্রোপচার করতে হয়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এর থেকেও উন্নত পদ্ধতি হল ‘ফিটাল এসএমপিএল’। এখানে হার্টের ত্রিমাত্রিক ছবি চিকিৎসকদের কাছে থাকবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত এই অ্যালগরিদ্‌মের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসকেরা সঠিক পদ্ধতিতে নির্ভুল অস্ত্রোপচারও করতে পারবেন।

হৃৎপিণ্ডের সমস্যার রোগী মানেই বয়স্ক ব্যক্তি, এমন ভাবনার দিন গিয়েছে। ৩০-৪০-এর কোঠায় এসে হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যায় কাবু অনেকেই। এখানেই থেমে নেই। ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট (ভিএসডি) অর্থাৎ হৃদযন্ত্রে ছিদ্র বা চলতি ভাষায় হৃদযন্ত্রের নীচের অংশের দুটো প্রকোষ্ঠ (নিলয়) বিভাজনকারী পর্দায় ছিদ্র নিয়ে জন্মায় বহু শিশু। হার্টে ছিদ্র আছে কি না, তা আগে থেকে বোঝা যায় না বলেই রোগটি থেকে যায়। এই সমস্যা সঙ্গে সঙ্গে ধরা না পড়লেও জন্মের কিছু দিন পরে তা ধরা পড়ে। আর তখনই প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েন অভিভাবকেরা। শিশুটির শ্বাস নিতে সমস্যা হবে, হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যাবে, বারে বারে ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেবে। এই অবস্থা সঙ্কটজনকও হয়ে উঠতে পারে। তাই আগে থেকেই যদি সমস্যা ধরা পড়ে, তা হলে সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব। শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্যই এমআরআই-এর এই নয়া পদ্ধতি তৈরি করেছেন গবেষকেরা। নতুন মডেল নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে জোরকদমে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement