স্তন ক্যানসারের নতুন টিকা আসছে।
স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় নতুন ওষুধ ইতিপূর্বে এসেছে। তবে টিকা এই প্রথম। এ বার ইঞ্জেকশনের ডোজ়ে ক্যানসার কোষ নির্মূল করার নতুন পথ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। সূচ ফোটালেই টিউমার কোষ পালাবার পথ পাবে না। কেমোথেরাপির যন্ত্রণা কমাতে স্তন ক্যানসারের নতুন প্রতিষেধক নিয়ে আসতে চলেছেন গবেষকেরা।
ক্য়ালিফোর্নিয়ার বায়োটেকনোলজি সংস্থা অ্যানিক্সা বায়োসায়েন্সেস স্তন ক্যানসারের টিকা আনতে চলেছে। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল নাকি সফল। এ বার মানুষের শরীরে পরীক্ষা করে দেখার কাজ চলছে। টিকাটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে তা আগেভাগেই ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি থামিয়ে দিতে পারে। টিকা নেওয়া থাকলে টিউমার কোষ তৈরিই হবে না। আর যদি কোনও ভাবে ম্যালিগন্যান্ট (ক্যানসার সৃষ্টিকারী) টিউমার তৈরি হতে শুরু করে, তা হলেও টিকার কাজ হবে সেই টিউমারের বিভাজন থামিয়ে দেওয়া।
কী ভাবে কাজ করবে প্রতিষেধক?
দু’সপ্তাহের ব্যবধানে তিনটি ডোজ় নিতে হবে। টিকার ওষুধ রক্তে মিশে গিয়ে শরীরের প্রতিরোধী কোষগুলিকে জাগিয়ে তুলবে। ক্যানসার তৈরি করতে পা্রে, এমন অ্যান্টিজেন বা প্রোটিনগুলিকে চিনিয়ে দেবে, যাতে পরবর্তী সময়ে তেমন প্রোটিনকে কোষে কোষে ঘোরাফেরা করতে দেখলে তার যোগ্য জবাব দেওয়া যায়। সরাসরি সেই প্রোটিনকে নিশানা করে তাকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়। অর্থাৎ, ক্যানসার তৈরি হওয়ার আগেই তার বিষকে নষ্ট করে দেওয়াই এই টিকার মূল কাজ হবে।
‘ট্রিপল নেগেটিভ ব্রেস্ট ক্যানসার’ সবচেয়ে বিপজ্জনক। এ ক্ষেত্রে এইচআর২ প্রোটিন সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে এই ধরনের ক্যানসার যেমন তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে, তেমনই বার বার ফিরেও আসতে পারে। ক্যানসার হলে রক্তে এক ধরনের প্রোটিনের বাড়াবাড়ি হয়, যার নাম ‘আলফা-ল্যাক্টালবুমিন’। এটিকে ‘মিল্ক প্রোটিন’ বলা হয়। মহিলাদের শরীরে এই প্রোটিন থাকেই, তবে ক্যানসারের সময়ে এর মাত্রা বেড়ে যায়। টিকার কাজ হবে এই প্রোটিনটিকেই নিশানা করা, যাতে ক্যানসার কোষ তৈরিই না হতে পারে। ক্যানসারের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, এমন সমস্ত প্রোটিনকে নষ্ট করে দিয়ে ক্যানসারের আশঙ্কাকে নির্মূল করে দেওয়াই হবে এর কাজ।
টিকার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা চলছে। আপাতত ৩২ জন মহিলার উপরে টিকার ডোজ় পরীক্ষা করা হয়েছে। আরও কয়েকটি পর্যায়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে তবেই টিকাটি নিয়ে আসার অনুমোদন চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।