ছবি : সংগৃহীত।
মাখানা যা আদতে পদ্মবীজের খই, তা স্বাস্থ্য সচেতনদের মধ্যে বছর কয়েক হল জনপ্রিয় হয়েছে। এ বার দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সেই খাবারকে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হলেন। শুধু মাখানার জন্য গঠন করলেন ন্যাশনাল মাখানা বোর্ড। বরাদ্দ করলেন ৪৭৫ কোটি টাকা। কেন? কারণ মোদীর মতে, মাখানা কেবল পদ্মের বীজের খই নয়। সেটি সাক্ষাৎ ‘কালো হিরে’।
স্বাস্থ্য সচেতন হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খ্যাতি আছে। তিনি নিয়মিত সাতসকালে উঠে যোগাভ্যাস করেন, পরিমিত আহার করেন বলে বহু বার নিজে মুখেই জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে দেশবাসীকে নানা উপদেশও দেন সুযোগ পেলেই। সেই তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০ দিনই মাখানা খাই আমি।’’
মাখানাকে ‘সুপারফুড’ বলে আখ্যা দিয়ে মোদী বলেছেন, ‘‘এই খাবারকে ভারতের সর্বত্র তো বটেই, বিশ্বের দরবারেও পৌঁছে দিতে হবে।’’ তাই মাখানার জন্য বিশেষ বোর্ড গঠন করেছেন বিহারে। এই বোর্ডের কাজ হবে পদ্মের বীজ সংগ্রহের পর তা থেকে খই বানানোর প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন। এর পাশাপাশি মাখানাকে কোনও ভাবে আরও পুষ্টিকর বানানো যায় কি না, সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা করবে বোর্ড। একই সঙ্গে, মাখানা প্রস্তুতকারকদের পর্যাপ্ত সাহায্য দেওয়ার কাজও করবে ওই বোর্ড। কিন্তু সব জায়গা ছেড়ে মাখানার বোর্ড বিহারে কেন?
মোদী প্রশাসনের যুক্তি, বিহারের মিথিলায় যে মাখানা তৈরি হয়, তা উৎকৃষ্ট মানের। ভারতীয় খাবারের জগতেও তার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এ ছাড়াও বিহারের আরও বহু জায়গায় পুকুরে, জলাধারে পদ্মের চাষ করা হয় এবং স্থানীয়েরা তার বীজ থেকে মাখানা তৈরি করেন। বিহারের মিথিলাঞ্চল এবং সীমাঞ্চলের মানুষের কাছে মাখানা তৈরিই মূল জীবিকা। তাই বিহারকেই মাখানা বোর্ডের শ্রেষ্ঠ জায়গা বলে মনে হয়েছে তাঁর।
সমালোচকেরা যদিও বলছেন, বিহারে ভোট এগিয়ে আসছে। ‘কালো হিরে’ মাখানায় ৪৭৫ কোটির বিনিয়োগের বার্তা দিয়ে আদতে ‘ভোটের খনি’ নিজের দিকে রাখতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।