Sania Mirza suffering Panic Attack

শরীরে কাঁপুনি, দমবন্ধ হয়ে যেত, বিচ্ছেদের পর ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হত সানিয়ার, রোগটি কতটা আতঙ্কের?

পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ঘন ঘন ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হত সানিয়া মির্জার। এই সমস্যায় এখন ভুগছেন কমবয়সিরাও। ছোটরাও এমন মানসিক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৩৮
Share:

প্যানিক অ্যাটাক কখন আতঙ্কের? ছবি: সংগৃহীত।

ভয় বলেকয়ে আসে না। আতঙ্ক যখন থাবা গেড়ে বসে তখন অনেকেরই বুক ধড়ফড় করে, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, হাত-পা ঝিমঝিম করে, মাথা ঘোরে, এমনকি দমবন্ধ হয়ে জ্ঞান হারানোর মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘প্যানিক অ্যাটাক’ বলে। এমন সমস্যায় দিনের পর দিন ভুগেছেন সানিয়া মির্জা। পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানের দায়িত্ব একাই নেন সানিয়া। বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ও ছেলেকে একাহাতে মানুষ করার দায়িত্ব— সবটা মিলিয়ে মাঝেমধ্যে উদ্বেগের পাহাড় জমত মনে। আর তার থেকেই এই রোগে আক্রান্ত হন টেনিস তারকা।

Advertisement

ইউটিউব চ্যানেলের এক ‘টক শো’-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সানিয়া জানান, যখন তখন আচমকাই শরীর ঠান্ডা হয়ে আসত। থরথর করে কাঁপুনি হত। সেই সঙ্গে ঘামে ভিজে যেত শরীর। চোখের সামনেটা যেন দুলে উঠত বার বার। মনে হত, সারা শরীর অবশ হয়ে আসছে। হারিয়ে ফেলতেন মনের জোর। বহু দিন পর্যন্ত এই সমস্যাকে বয়ে চলেন তিনি।

‘প্যানিক অ্যাটাক’ কোনও দুরারোগ্য ব্যাধি নয়। এটি মনের এমন এক অবস্থা, যার প্রভাব পড়ে শরীরেও। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, কোনও বড় আঘাত পেলে অথবা আকস্মিক ট্রমা, কর্মক্ষেত্রে জটিলতা, প্রত্যাশা পূরণ না হওয়া, উচ্চাকাঙ্ক্ষা— সব মিলিয়ে এই ধরনের উদ্বেগ জন্ম নেয়। খারাপ স্মৃতি কিংবা কোনও অনিশ্চয়তা মনের মধ্যে চেপে বসলেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে। মাথার মধ্যে ঝিমঝিম করে। অস্থির লাগে। বুক ধড়ফড় করে। অনেকের সারা শরীর কাঁপতে থাকে, দম বন্ধ হয়ে আসে। বুকে ব্যথাও শুরু হয়। এমন লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে, প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে। প্যানিক অ্যাটাক একবার বা দু’বার হলে তা অতটা চিন্তার ব্যাপার নয়। তবে যদি ঘন ঘন হতে থাকে এবং প্রায় বিনা কারণেই হতে থাকে, তখন তা চিন্তার। সেই সময়ে বিষয়টি শুধু উদ্বেগে সীমাবদ্ধ থাকবে না, রোগের পর্যায়ে চলে যাবে, যার নাম ‘প্যানিক ডিজ়অর্ডার’।

Advertisement

প্যানিক অ্যাটাক কখন আতঙ্কের?

অতিরিক্ত উদ্বেগে অ্যাড্রিনালিন নামক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোন অধিক পরিমাণে ক্ষরিত হতে থাকলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, শ্বাসপ্রশ্বাসের গতিও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় সুস্থ মানুষের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এর থেকে মানসিক অবসাদও জন্ম নেয়। অনিদ্রা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, ওজন বৃদ্ধি তো আছেই, স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দেয়। ‘স্ট্রেস হরমোন’ কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তখন কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দেয়। কর্টিসল প্রভাব ফেলতে পারে স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও। তাই সে ক্ষেত্রে দেরি না করে মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীর অবস্থা বুঝে চিকিৎসাপদ্ধতি ঠিক করা হয়। ‘কগনিটিভ বিহেভেরিয়াল থেরাপি’ করেও চিকিৎসা করা হয় অনেক সময়েই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement