এডস নির্মূল করতে টিকা কি তবে আসতে চলেছে? ছবি: ফ্রিপিক।
এডসের টিকা কি তবে আসতে চলেছে? তা বলা যায় না। তবে টিকা তৈরির পথে নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমন এক সূত্র হাতে এসেছে, যা এডসের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে দাবি করা হয়েছে। এডস নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়েই। ওষুধ, ইঞ্জেকশন-সহ নানা রকম চিকিৎসা পদ্ধতির কথা প্রকাশ্যে আসছে। তবে কোনওটিই যে খুব সাফল্যের মুখ দেখেছে, তা বলা যায় না। রোগীদের উপর প্রয়োগ করে ফলাফল পরীক্ষা করে চলেছেন গবেষকেরা। তার মধ্যেই সুইডেনের বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা সাড়া ফেলেছে।
সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা এডসের টিকা তৈরির পথে এক ধাপ এগিয়েছেন বলে খবর। ‘ইমিউনিটি’ মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক রিচার্ড ওয়াট জানিয়েছেন, এমন এক অ্যান্টিবডির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যা এইচআইভি-র সঙ্গে লড়াই করতে পারে। ভাইরাসের কোষ বিভাজন ও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পারে। এই অ্যান্টিবডির নাম বিএনএবিএস।
গবেষক জানাচ্ছেন, হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি এক বার মানব শরীরে প্রবেশ করলে তা আক্রমণ করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে। এই ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এমন ভাবে তছনছ করে দেয় যে, সামান্য অসুখও তখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এই ভাইরাস ঢুকলেই শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলি (ইমিউন কোষ) ওই বিএনএবিএস অ্যান্টিবডি তৈরি করে। তবে সংখ্যায় কম। এই অ্যান্টিবডিই যদি বাইরে থেকে শরীরে প্রবেশ করানো যায়, তা হলে ভাইরাসের বিভাজন বন্ধ হতে পারে বলেই মনে করছেন গবেষকেরা। তাই এমন টিকা তৈরি করা হচ্ছে, যা প্রয়োগ করলেই রক্তে ওই অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে।
প্রতিষেধকটি আপাতত গবেষণার স্তরেই রয়েছে। জানা গিয়েছে, সেটি বুস্টার ডোজ় হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ১২ সপ্তাহ অন্তর টিকার একটি করে ডোজ় দেওয়া হবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে এখন ক্যানসারের চিকিৎসাতেও আশার আলো দেখা গিয়েছে। ক্যানসার সারিয়ে সুস্থ হচ্ছেন বহু মানুষ। এডসের চিকিৎসা এখনও সেই পর্যায়ে না গেলেও ধীরে ধীরে এইচআইভিকে রোখার উপায়ও হাতে আসছে গবেষকদের। এই মুহূর্তে বিশ্বে এডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩.৮ কোটি। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই রোগে মৃত্যুর শিকার হলেও এখনও পর্যন্ত বিশেষ কোনও চিকিৎসা পদ্ধতি নেই, যা এডস নির্মূল করতে পারে। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, এই টিকা সাফল্য পেলে মোড় ঘুরে যেতে পারে মারণ রোগের চিকিৎসার।