Dead Heart Transplantation

জীবন্ত হল ‘মৃত’ হার্ট, শরীরে বসতেই স্পন্দন ফিরল শিশুর, অঙ্গ প্রতিস্থাপনে নতুন আবিষ্কারের দাবি

অঙ্গ প্রতিস্থাপনে এত দিনের সব ধারণা ভেঙে দিলেন ডিউক ইউনিভার্সিটির হার্টের চিকিৎসকেরা। ‘ব্রেন ডেড’ হওয়া রোগীর হার্টকে কৃত্রিম ভাবে সচল রেখেই প্রতিস্থাপন করা হত এত দিন। কিন্তু এ বার ‘মৃত’ হার্টকেও বাঁচিয়ে তুলে প্রতিস্থাপন করছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১২:২৩
Share:

স্পন্দন ফিরবে ‘মৃত’ হার্টে, নতুন আবিষ্কার। ছবি: ফ্রিপিক।

‘মৃত’ হৃদপিণ্ডকে পুনরায় জীবন্ত করে তুললেন চিকিৎসকেরা। সেই হৃদপিণ্ডই প্রতিস্থাপন করে প্রাণ বাঁচল মাস তিনেকের শিশুর। অঙ্গ প্রতিস্থাপনে এত দিনের সব ধারণা ভেঙে দিলেন ডিউক ইউনিভার্সিটির হার্টের চিকিৎসকেরা। ‘ব্রেন ডেড’ হওয়া রোগীর হার্টকে কৃত্রিম ভাবে সচল রেখেই প্রতিস্থাপন করা হত এত দিন। কিন্তু এ বার মৃত মানুষের হার্ট যা সম্পূর্ণ ভাবে থেমে গিয়েছে, তাকেই পুনরায় বাঁচিয়ে তুলে প্রতিস্থাপন করার নতুন পন্থা আবিষ্কার হল। এই পদ্ধতি সফল হতে থাকলে, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জটিলতা ও খরচ কমবে বলেই আশা রাখছেন চিকিৎসকেরা। ‘ব্রেন ডেড’ রোগীর হার্টের জন্য আর হা পিত্যেশ করে বসে থাকতে হবে না।

Advertisement

হৃৎপিণ্ডের প্রতিস্থাপন খুবই জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। অধিকাংশ প্রতিস্থাপনে দেখা গিয়েছে, অস্ত্রোপচার সফল হলেও কখনও সংক্রমণের, কখনও প্রতিস্থাপিত অঙ্গ ঠিক মতো না কাজ না করায় ভুগতে হয়েছে রোগীকে। , হৃদপিণ্ডের অন্যান্য অস্ত্রোপচারের তুলনায় প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সাফল্যের হার কম। এতে রোগীর জীবনের ঝুঁকিও থাকে। তার চেয়েও বড় কথা হল, মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে, এমন রোগীর হার্ট পাওয়াও দুষ্কর। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বন্ধ হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই হার্ট বার করে নিতে হয়। কৃত্রিম ভাবে তাকে সচল রেখে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিস্থাপন করতে না পারলে, কোনও লাভই হবে না। তাই হার্ট প্রতিস্থাপন করার জটিলতা অনেক। গ্রহীতা যদি অন্য শহর বা রাজ্যে থাকেন, তা হলে দাতার থেকে নেওয়া হার্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেওয়াও ঝক্কির কাজ। অনেক সময়েই দেখা যায়, সঠিক সময়ে দাতার থেকে নেওয়া হার্ট পৌঁছতে না পারায়, তা আর প্রতিস্থাপনই করা যায়নি। তাই যদি হার্ট সংরক্ষণ করার পরিকাঠামো তৈরি করা যায়, তা হলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়। সেই চেষ্টাই এত দিন ধরে করছিলেন উত্তর ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটির হার্টের চিকিৎসকেরা। সে কাজে প্রথম বার সাফল্য এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এমন হার্টকে সংরক্ষণ করে রেখে তাকে ফের বাঁচিয়ে তোলার পদ্ধতি সহজ নয়। তবে সেই অসাধ্যসাধনই করছেন চিকিৎসকেরা। এই পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘অন-টেবিল রিঅ্যানিমেশন’। বিশেষ এক যন্ত্রের সাহায্যে মৃত হার্টে ফের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া শুরু করে, তাকে জীবন্ত করে তুলছেন চিকিৎসকেরা। সেই হার্ট প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে গ্রহীতার শরীরে। মাস তিনেকের এক শিশুর শরীরে এমনই জীবন্ত করে তোলা হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিস্থাপনের পর ছ’মাস পেরিয়ে গিয়েছে এবং শিশুটিও সুস্থ আছে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকেরা। এই গবেষণার খবর ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ –এ প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisement

গবেষক অ্যারন উইলিয়ামস জানিয়েছেন, হৃদপিণ্ড সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপনের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে এই গবেষণায়। হার্ট প্রতিস্থাপনের জটিলতার কথা মাথায় রেখেই ধাতব হার্ট তৈরি করছিলেন গবেষকেরা। ব্রেন ডেথ হওয়া রোগীর অভাবে রক্তমাংসের হার্টের বদলে টাইটানিয়ামের যান্ত্রিক হার্টও প্রতিস্থাপন করে দেখা হয়েছে। তবে এই গবেষণা সফল হলে, আর যান্ত্রিক হার্টের প্রয়োজন হবে না বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement