করিনা কপূরের ফিটনেসের নেপথ্যে জাদু নয়, লুকিয়ে কঠোর শ্রম। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
‘‘কোনও ফিল্টার নয়, শর্টকার্ট নয়, কঠোর পরিশ্রমেই, আসল ফল মেলে।’’
দেওয়ালে পা দিয়ে কখনও মেঝেতে হাত রেখে ব্যায়াম করছেন করিনা কপূর। ডাম্বেল, কেটল বেল, বাম্পার প্লেট নিয়ে অনায়াস দক্ষতায় শারীরিক কসরত করছেন অভিনেত্রী। বছর ৪৫-এর নায়িকা, দুই সন্তানের মায়ের ফিটনেস চর্চিত। তবে তা যে সহজ পথে মেলে না— রিল ভাগ করে নিয়ে সে বিষয়টি জনসমক্ষে তুলে ধরলেন তাঁর ব্যক্তিগত ফিটনেস প্রশিক্ষক মহেশ ঘনেকর।
নিজের ইনস্টাগ্রামে অভিনেত্রীর শারীরিক কসরতের ছবি, ভিডিয়ো মাঝেমধ্যেই ভাগ করে নেন মহেশ। তেমনই একটি রিল পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘তারকাদের ফিটনেস ভাগ্যগুণে পাওয়া নয়, নেপথ্যে থাকে পরিশ্রম।’’
এক সময়ের তন্বী অভিনেত্রীরও বয়স বেড়েছে। দুই সন্তানের মা হয়েছেন তিনি। দৈহিক বদলও হয়েছে কিছুটা। তবে সেই সব ছাপিয়ে এখনও চোখে পড়ে করিনার সৌন্দর্য, ফিটেনস, ছিপছিপে শরীর। অনুরাগীরাও মুক্ত কণ্ঠে সে কথা স্বীকার করেন। ইনস্টাগ্রাম রিলের পোস্টে প্রশংসাসূচক মন্তব্য এসেছে একের পর এক। কেউ বলেছেন, ‘‘সন্তানের জন্মের পর এমন চেহারা বজায় রাখা মুখের কথা নয়।’’ কেউ বলছেন, ‘‘দেখে অনুপ্রেরণা মেলে।’’
তৈমুর এবং জাহাঙ্গির দুই ছেলেকে বড় করছেন অভিনেত্রী। পাশাপাশি রয়েছে তাঁর বিজ্ঞাপন থেকে অভিনয় জগতের কাজকর্ম। দৈনন্দিন ব্যস্ততা, সন্তানের দেখভালের পর নিজেকে ফিট রাখা খুব সহজ কথা নয়। জীবনে দরকার হয় ভারসাম্যের, বলছেন পুষ্টিবিদ কণিকা মলহোত্র।
কী ভাবে কাজ সামলে শরীরচর্চা সম্ভব?
· অনেক সময়েই সন্তানের দায়িত্ব সামলে মায়েদের পক্ষে নিজেদের যত্ন নেওয়া, শরীরচর্চা করার সময় হয় না। তবে সন্তানকে স্কুলে দিতে-নিতে যাওয়ার সময়েও কিছুটা ব্যায়াম হয়ে যায়। আবার সন্তানকে স্কুলে দিয়ে আসার সময়ও জিমে বা বাড়িতে কিছু ক্ষণ ব্যায়াম, হালকা এক্সারসাইজ় বা ওজন নিয়ে ব্যায়াম করা যেতে পারে।
· খুদেকে শরীরচর্চায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য এবং নিজে ফিট থাকার জন্য একসঙ্গে শরীরের উপযোগী ব্যায়াম করা যেতে পারে দিনের কোনও না কোনও সময়ে।
কণিকা মনে করাচ্ছেন, বয়স বেড়ে গেলে স্বল্প পরিশ্রমে পেশি দ্রুত সবল, সুঠাম হয় না। এই সময়ে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হয়, হাড় দুর্বল হয়ে যায়। তবে তার পরেও শরীরচর্চা, নিজের যত্ন নেওয়াটা জরুরি। শরীরের চাহিদা, সমস্যা বুঝে ব্যায়াম করা প্রয়োজন। নিখুঁত গড়ন পাওয়ার চেয়ে লক্ষ্য হওয়া উচিত সুস্থ থাকা। তাঁর পরামর্শ, সকালে বা টিভি দেখার সময়েও ১৫ মিনিট যোগাভ্যাস করা যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা করাটাই জরুরি।
মা হওয়া, বয়স বৃদ্ধি, খাটাখাটনি সব মিলিয়ে কখনও কখনও মায়েদের কাছে তাঁদের জীবন ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে। তবে ফিটনেস প্রশিক্ষকদের মতে, ধৈর্য নিয়ে শান্ত ভাবে কাজ সামলানোই একমাত্র উপায়। সেই সঙ্গে দরকার সুস্থ থাকার দিকে নজর দেওয়া। শরীরচর্চা তারই অঙ্গ।