Elderly care

পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা, বাড়ির প্রবীণ সদস্যেরা একাকিত্বে ভুগছেন না তো? বয়স্কদের মনের খেয়ালও রাখুন

পুজোর আনন্দে যতই মাতুন, বাড়ির বয়স্কদের একাকিত্বে হারিয়ে যেতে দেবেন না। বার্ধক্যেও না হয় ডানা মেলুক রঙিন দিন, তার জন্য উপায় আছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:২১
Share:

পুজোয় আনন্দ করুন, বাড়ির বয়স্কদের মনের খেয়ালও রাখুন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পুজোয় রোজ ঠাকুর দেখছেন। জমিয়ে ভূরিভোজ, আড্ডায় মাতছেন প্রিয়জনেদের সঙ্গে। এই সব কিছুর মধ্যে, বাড়ির প্রবীণ মানুষগুলির মনের খেয়াল রাখছেন তো? বাতের ব্যথা, ডায়াবিটিস বা হার্টের রোগ সামলে অশীতিপর শরীরে সকলের পক্ষে ঠাকুর দেখতে যাওয়া সম্ভব হয় না। হয়তো পাড়ার পুজোর প্যান্ডেলে খানিক সময় কাটানো, না হলে ঘরেতেই বন্দি অবস্থায় অপেক্ষার প্রহর গোনা। জীবনের কোনও না কোনও সময়ে একা বোধ করেছেন প্রায় সব মানুষই। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকা একাকিত্বের রং যেন বেশিই বিষাদময়। সেখানে কোথাও ঘিরে থাকে কারও ফিরে আসার অপেক্ষা, কোথাও একরাশ শূন্যতা।

Advertisement

বার্ধক্য আগেও ছিল। কিন্তু একাকিত্ব এ ভাবে চেপে বসার সুযোগ পেত না। একান্নবর্তী পরিবারে নানা প্রজন্মের মানুষের সঙ্গে থাকার ফলে একা বোধ করার অবকাশ থাকত না। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে এখনকার অনেক প্রবীণই তুলনায় বেশি একা বোধ করেন। আবার সঙ্গীহীন হয়ে পড়লে একা হয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। অনেকের সঙ্গেই আত্মীয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বন্ধুরাও দূরে। তাই পুজোর আনন্দে যতই মাতুন, বাড়ির বয়স্কদের একাকিত্বে হারিয়ে যেতে দেবেন না। বার্ধক্যেও না হয় ডানা মেলুক রঙিন দিন, তার জন্য উপায় আছে।

শরীরের যত্ন

Advertisement

বাড়ির বয়স্ক সদস্যের নিয়মিতভাবে শারীরিক পরীক্ষা করানো উচিত, প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হতে পারে। রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ, ট্রাইগ্লিসারাইড প্রভৃতি যেন সঠিক মাত্রায় থাকে, সেদিকে নজর দিন। এতে তাঁরাও বুঝবেন, যে আপনারা পাশে রয়েছেন। মন থেকে ভয় বা আতঙ্ক অনেকটাই দূর হবে।

বয়স্কদের যদি একাধিক ওষুধ খেতে হয়, তবে তাঁদের ওষুধ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সেগুলি সঠিকভাবে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। উৎসবের আনন্দে যতই মাতুন, সময়ে সময়ে তাঁদের ওষুধ খাওয়াতে ভুলবেন না। যে সময়টা বাড়িতে থাকবেন না, তাঁদের জন্য ওষুধ হাতের কাছেই রেখে যান। একটি তালিকা বানিয়ে দিন, কোন সময়ে কোন ওষুধটা খেতে হবে।

মনের যত্ন

বয়স্কদের সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকা এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। নাহলে একাকিত্ব বোধ হবে। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে যাতে, তাঁরা মানসিকভাবে একাকী না বোধ করেন। রোজ অন্তত এক ঘ্টা সময়ও তাঁদের জন্য রাখুন।

বিভিন্ন বন্ধুবৃত্তে বা কাজে যদি তাঁরা সময় কাটাতে পারেন, তা হলে সবচেয়ে ভাল। স্মার্টফোনে সোশ্যাল মিডিয়া পেজ দেখা বা অ্যাপ ব্যবহার করা শিখিয়ে দিতে পারেন। এতে তাঁদের সময় কাটবে, নির্ভরতাও কমবে। ফলে আত্মবিশ্বাসী হবেন।

বাগান করা, ছবি আঁকা, গান শোনার মতো কাজেও সময় কাটালে ভাল লাগবে।

ঘর সাজিয়ে দিন মনের মতো করে

ঘরের সঙ্গে লাগোয়া যদি বারান্দা থাকে, তা হলে সেখানে আরামকেদারা পেতে দিন। বারান্দা সাজিয়ে দিন সবুজ গাছে। দেখবেন তাঁদের মন ভাল থাকবে। যদি বারান্দা না থাকে, তা হলে ঘরে জানলার কাছে রেখে দিন আরামকেদারা বা গদি দেওয়া চেয়ার। কাছেই ছোট টেবিলে রাখুন ডায়রি-পেন। চা খাওয়ার জায়গা করে দিন। টেবিলের উপর আপনাদের সকলের ছবি বাঁধিয়ে রেখে দিন। পাশে রাখুন ফুলদানি। সম্ভব হলে টাটকা ফুলে সাজিয়ে দিন। দেখবেন তাঁদের ভাল লাগবে।

বয়স্কদের ঘরে অবশ্যই বইয়ের তাক বানিয়ে দিন। তাঁদের পছন্দমতো বই রাখুন তাতে। বই পড়ে অনেকটা সময় কেটে যাবে তাঁদের। বয়স হলে অনেক সময়েই নিজের অনেক পছন্দের কাজ বা শখ পূরণের ইচ্ছা হয়। সেইসব জিনিস তাঁদের হাতের কাছেই রেখে দিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement