কোন কোন ওষুধের কারণ কিডনির জটিল অসুখ হতে পারে? ছবি: ফ্রিপিক।
কিডনির রোগ দিন দিন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে। সাধারণত কিডনির সমস্যা দু’টি কারণে হতে পারে। অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিসের সমস্যা থেকে কিডনির ক্ষতি হয়। একে বলে ‘ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ়’। তা ছাড়া, কোনও সংক্রমণ থেকে, দুর্ঘটনায় চোট পাওয়ার কারণে কিংবা অতিরিক্ত কোনও ওষুধ নেওয়ার ফলেও কিডনির সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি’। রোজের কিছু চেনা ওষুধেই ক্ষতি হতে পারে কিডনির। অনেক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই নিজে থেকে ওষুধ খান অনেকে। এতেই সমস্যা বাড়ে।
রোজের কোন কোন ওষুধ কিডনির ক্ষতি করে?
ব্যথানাশক ওষুধ
‘নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ’ (এনএসএআইডি) গোত্রের যে সব ওষুধ আছে, সেগুলি বেশি ডোজ়ে খেতে শুরু করলে কিডনির ক্ষতি হবে। আইবুপ্রফেন, অ্যাসপিরিনের মতো ব্যথানাশক যে সব ওষুধ সাধারণত দোকান থেকে কিনে খান, সেগুলি অতিরিক্ত মাত্রায় রোজ খেতে থাকলে হরমোনের গোলমাল হবে। এই ওষুধগুলি শরীরে রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্য নষ্ট করে, ফলে অতিরিক্ত টক্সিন জমতে থাকে, যা কিডনির রোগের কারণ হয়ে ওঠে।
অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড অ্যান্টিবায়োটিক
অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড গোত্রের যে সব অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায় যেগুলি ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ ঠেকাতে প্রেসক্রাইব করেন চিকিৎসকেরা, সেগুলি যদি যখন তখন খেয়ে নেওয়ার অভ্যাস থাকে, তা হলে সমূহ ক্ষতি। এই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে কিডনির সুস্থ কোষগুলির ক্ষতি হতে থাকে, বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ বাড়ে, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে নেক্রোসিস। এটি হলে কিডনি ফেলিয়োরের ঝুঁকি বাড়বে।
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (পিপিআই)
এই গোত্রের ওষুধগুলি সাধারণত সকালে খালি পেটে খাওয়া হয়। গ্যাস বা হজমের সমস্যা থাকলে, অনেকেই সকালে খালি পেটে এই ধরনের ওষুধ খান। এই ওষুধগুলি দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারের ফলে কিডনিতে প্রদাহ হয় এবং কিডনির অসুখের ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ
উচ্চ রক্তচাপের কিছু ওষুধ, বিশেষ করে অ্যাঞ্জিয়োটেনসিন রিসেপ্টর গোত্রের ওষুধগুলি চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ইচ্ছামতো খেতে থাকলে শরীরে জলশূন্যতা দেখা দেবে। এই ওষুধগুলি কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে ক্ষতি করতে পারে।
তা ছাড়া কেমোথেরাপি ও মানসিক রোগের ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে খেতে থাকলে তার থেকেও কিডনির জটিল রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।