মিষ্টি খাওয়ার ঝোঁক ভাব কমাবেন কী করে? ছবি: এআই।
জীবন থেকে চিনি বাদ দিতে হবে। তা হলেই আক্ষরিক অর্থে জীবন 'মধুর' হয়ে উঠতে পারে। চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ— সকলেই বলেন, চিনি, মিষ্টি খাবার, কৃত্রিম শর্করা দেওয়া পানীয় খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে শরীর থাকবে নীরোগ। ওজন তো নিয়ন্ত্রণে থাকবেই, তার সঙ্গে দূর হবে নানা ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি। কিন্তু মিষ্টির লোভ সামলানো কি এত সহজ! চায়ে চিনি খাওয়া ছাড়লেও হাতের কাছে কেক, মাফিন, গুড়ের মিষ্টি দেখলে নিজেকে আটকানো বড়ই মুশকিল।
মিষ্টির প্রতি এমন চাহিদা তৈরি হওয়ার নির্দিষ্ট কিছু কারণ থাকে। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও অনেক সময় মিষ্টি খাওয়ার ঝোঁক বেড়ে যেতে পারে। তবে রোজের ডায়েটে কয়েকটি ভেষজ পানীয় যোগ করতে পারলেই এই সমস্যাকে বশে রাখতে পারেন।
কেশর-দুধ: দুধ গরম করে তার মধ্যে এক চিমটে কেশর আর কয়েকটি শুকনো গোলাপের পাতা মিশিয়ে মিনিট পাঁচেক রেখে দিন। ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে এই পানীয় খেতে হবে। নিয়ম করে এই পানীয় খেলেই কমবে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা। যাঁদের দুধ খেলে সমস্যা হয় তাঁরা আমন্ড মিল্ক ব্যবহার করতে পারেন।
কেন উপকারী?
কেশর সেরোটনিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। এই হরমোন মন-মেজাজ ভাল রাখতে সাহায্য করে। মন ভাল থাকলে মিষ্টির প্রতি ঝোঁক বাড়ে না। গোলাপের মিষ্টি সুবাস মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে। গরম দুধে থাকে কেসিন নামক প্রোটিন, যা দীর্ঘ সময় পেটকে ভরাট রাখার অনুভূতি তৈরি করে। সাধারণত রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হয়, সেই সময় এই পানীয় চুমুক দিলে, মনও ভরবে আর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেও হবে না।
মেথি-দারচিনির জল: গরম জলে ১ চা চামচ মেথি আর আধ চা চামচ দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে মিনিট দশেক ঢেকে রাখুন। তার পর জলটি ছেঁকে নিয়ে আরও কিছু ক্ষণ গরম করে নিন। কাপে জলটি ঢেলে নিয়ে লেবুর রস মিশিয়ে গরম পানীয়ে চুমুক দিন।
কেন উপকারী?
মেথিতে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পাচন প্রক্রিয়ার গতি কমিয়ে দেয়। মেথি রক্তের শর্করার মাত্রা চটজলদি বেড়ে যেতে বাধা দেয়। মেথি শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। খিদে কমাতেও সাহায্য করে। দারচিনিও ‘ফাস্টিং ব্লাড সুগার’ কমাতে সাহায্য করে, ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। দারচিনির মিষ্টত্ব মিষ্টি খাওয়ার মতো তৃপ্তি দেয়। শরীরে যখন ক্লান্তি আসবে, তখন এই পানীয় খেলে শরীর চাঙ্গা হবে। খাওয়ার পরেও এই পানীয়ে চুমুক দিতে পারেন। আর যে দিন মানসিক ভাবে ক্লান্ত লাগবে, মন-মেজাজ বিগড়ে থাকবে, তখনও এই পানীয় খেলে উপকার পাবেন।