শেফালি জ়ারিওয়ালা কি ‘অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট’ করাচ্ছিলেন? ছবি: সংগৃহীত।
মাত্র ৪২ বছর বয়সে শেফালি জ়ারিওয়ালার আকস্মিক মৃত্যুতে স্তম্ভিত বিনোদন জগৎ। ২৭ জুন, গভীর রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। প্রাথমিক ভাবে শোনা গিয়েছিল, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ‘কাঁটা লাগা’ খ্যাত তারকার। কিন্তু তার পর নানা সূত্র ধরে কানাঘুষো শোনা যায়, হৃদ্রোগ নয়, অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শেফালির মৃত্যুর কারণ নিয়ে যখন রহস্য ঘনাচ্ছে, তেমন সময়েই সূত্র মারফত খবর, ‘অ্যান্টি-এজিং’ অথবা বার্ধক্য রোধের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন তিনি।
সূত্রের খবর, গত পাঁচ-ছ’বছর ধরে বিশেষ ট্রিটমেন্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন শেফালি। ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ না পড়তে দেওয়া এবং তারুণ্য ধরে রাখার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে। যে ট্রিটমেন্টটি তিনি করাচ্ছিলেন, তা নাকি ভিটামিন সি আর গ্লুটাথায়োন নির্ভর। ত্বকের রং হালকা করা এবং দূষিত পদার্থ বার করে ত্বককে ডিটক্সিফাই করার জন্য প্রয়োজনীয় এই গ্লুটাথেয়োন। প্রশ্ন জাগছে, বয়সের চাকা উল্টো দিকে ঘোরানোর জন্যই কি প্রাণ হারালেন অভিনেত্রী?
আমেরিকার ধনকুবের তথা নেটপ্রভাবী ব্রায়ান জনসন বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখার ট্রিটমেন্টের প্রচার সূত্রেই জনপ্রিয় হয়েছেন। জীবনযাপন, খাওয়াদাওয়ার ধরন পাল্টানো থেকে শুরু করে নানাবিধ ওষুধপত্র এবং ১৬ কোটি টাকার প্লাজ়মা থেরাপি করান ব্রায়ান। নিজেই বহু গবেষণা করে ‘অ্যান্টি-এজিং’-এর লক্ষ্যে হেঁটে চলেছেন। কিন্তু সকলের জন্য কি এই ট্রিটমেন্টগুলি নিরাপদ? না কি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রাণঘাতী হতে পারে?
আমেরিকার ধনকুবের তথা নেটপ্রভাবী ব্রায়ান জনসন। ছবি: সংগৃহীত।
চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জন সৌরদীপ গুপ্ত জানাচ্ছেন, ‘‘ডায়াবিটিসে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে, ক্যানসারের ফলে স্নায়বিক ক্ষতি নিরাময় করতে গ্লুটাথেয়োন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রয়াত অভিনেত্রী কী পরিমাণে, পরামর্শ ছাড়া না কি পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করছিলেন, তা জানা নেই বলে বোঝা যাচ্ছে না যে, কী ভাবে এটি ক্ষতি করতে পারে। কারণ গ্লুটাথেয়োনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। ছোটখাটো অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া থেকে মারাত্মক প্রভাবও দেখা দেয়। যা প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শরীরে র্যাশ থেকে স্টিভেনস-জনসন সিন্ড্রোম (ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) পর্যন্ত হতে পারে। তা ছাড়া কিডনির সমস্যা, পেট ব্যথা, বমি ভাবও দেখা দেয়। আবার এর সঙ্গে যদি ভিটামিন সি দেওয়া হয়, তা হলে কিডনিতে পাথরও হতে পারে। অনেকে ত্বকের রং হালকা করার জন্যে এটি ইনহেলার হিসেবেও ব্যবহার করেন। যার ফলে আবার অ্যাজ়মার জন্ম নিতে পারে। এই সমস্ত প্রতিক্রিয়া মৃত্যুর কারণ হতে পারে বটে, তবে তা বিরল।’’ কিন্তু গ্লুটাথেয়োন ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা আবশ্যিক বলে জানাচ্ছেন প্লাস্টিক সার্জন।
যদিও ময়নাতদন্তের ফল প্রকাশ না পাওয়া পর্যন্ত শেফালির মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।