Eye Surgery to Remove Glasses

চশমাটা খসে গেলে মুশকিলে পড়বেন না! দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির চিকিৎসা হয় কলকাতাতেও, খরচ কত?

চশমা আঁটা জীবন থেকে মুক্তি। নাকের ডগায় ভারী চশমা পরতে হবে না। মাইনাস ৫ বা মাইনাস ৬ পাওয়ারকেও নামিয়ে আনা যাবে শূন্যে। তার জন্য লেজ়ার সার্জারি হচ্ছে কলকাতাতেই। কারা করাতে পারেন? খরচ কত?

Advertisement

চৈতালী চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ০৮:৫৩
Share:

চশমা-লেন্স ছাড়াই দূরের দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যাবে। কলকাতাতেও রয়েছে সেই চিকিৎসা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম। গ্রাফিক সহায়তা: এআই।

ছোট থেকেই অরিত্রির মাইনাস পাওয়ারের চশমা। স্কুলে চশমা এঁটে যেতে বরং ভালই লাগত। লোকজন বলত ‘পড়ুয়া’ মেয়ে। কিন্তু গোল বাধল কলেজে গিয়ে। সাজগোজ করে কাজল টানা চোখ যখন ঢাকা পড়ত মোটা মোটা কাচের আড়ালে, মনটা খারাপই হত। কনট্যাক্ট লেন্স পরার সময়টাও তো সেই ৭-৮ ঘণ্টায় বাঁধা। চশমা পরা ছবি ভাল আসে না, এই কথাটা শুনতে শুনতে ক্লান্ত অরিত্রি ইন্টারনেট হাতড়ে জানতে পারে ল্যাসিক সার্জারির কথা। বিয়ের আগে তা করিয়ে চশমা থেকে চিরতরে মুক্তিও পায়। ভারী চশমাকে বিদায় দিয়ে এ যেন এক নতুন জীবন। চশমা আঁটা জীবন থেকে মুক্তি চাইলে কেবল ল্যাসিক সার্জারি নয়, আরও অনেক ধরনের অস্ত্রোপচার হচ্ছে খাস কলকাতাতেই। আগে বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদে ছুটতে হত। এখন সে সুবিধা রয়েছে এ শহরেই। কম সময়ে ও কম যন্ত্রণাদায়ক পদ্ধতিতে লেজ়ার সার্জারি করে পাওয়ার নির্মূল করা সম্ভব। চশমা আর পরতেই হবে না।

Advertisement

নয়া প্রজন্মের একটা অংশ লেজ়ার সার্জারির দিকেই ঝুঁকছে। অনেকেরই বক্তব্য, চশমা পরলে দেখতে ভাল লাগে না। কন্ট্যাক্ট লেন্সও বিস্তর ঝক্কির। আবার পেশাগত কারণেও অনেকে চশমা-লেন্স ছাড়তে চাইছেন। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাই বাড়ছে ল্যাসিক সার্জারি সেন্টার। শুধু ল্যাসিক নয়, স্মাইল প্রো, পিআরকে, ইমপ্ল্যান্টেবল কলামার লেন্স (আইসিএল)-এর মতো অস্ত্রোপচারের পদ্ধতিও চলে এসেছে। চশমা ছাড়তে চাইছেন মানেই ল্যাসিক সার্জারি করতে হবে, তা নয়। কার চোখে কোনটি নিরাপদ, সে চিকিৎসকই ঠিক করবেন। কে কোন পেশায় রয়েছেন, কাকে কত ক্ষণ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়, এই সব কিছুই দেখে নেওয়া হবে আগে। কিছু টেস্টও করিয়ে নেওয়া হবে। চশমা ছাড়ব বললেই তো আর ছাড়া যায় না, অস্ত্রোপচার সকলে করাতে পারবেন কি না, সেটিও বিষয়। সেখানে কর্নিয়ার ধরন এবং বয়সও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই ধরনের অস্ত্রোপচারে সুবিধা আছে, আবার অসুবিধাও।

চশমা আঁটা জীবন থেকে মুক্তি চান? ছবি: ফ্রিপিক।

কলকাতায় কোন কোন ধরনের অস্ত্রোপচার হচ্ছে?

Advertisement

চোখের পাওয়ার কমানোর জন্য অস্ত্রোপচারটি হয় কর্নিয়াতে। এর মধ্যে ল্যাসিক সার্জারির নাম পরিচিত। এটি হল ‘লেজ়ার অ্যাসিস্টেড ইন-সিটু কেরাটোমিলিউসিস’। কর্নিয়ার টিস্যু কেটে পাওয়ার কমানো হয়। তা ছাড়া, স্মাইল বা স্মাইল প্রো (স্মল ইনসিশন লেন্টিকিউল এক্সট্র্যাকশন), পিআরকে (ফোটোরিফ্র্যাক্টিভ কেরাটেকটোমি) সার্জারিও হচ্ছে। প্রতিটির পদ্ধতি আলাদা। লেজ়ার যাঁরা করাতে পারবেন না, তাঁদের জন্য আইসিএল (ইমপ্ল্যান্টেবল কলামার লেন্স) পদ্ধতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর্নিয়ার টিস্যু না কেটে অস্ত্রোপচার করে লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয় চোখে। তাতে আর চশমা পরার প্রয়োজন হয় না। খালি চোখেই দিব্যি স্পষ্ট দেখা যায়।

কলকাতায় নানা ধরনের লেজ়ার সার্জারি হচ্ছে। ছবি: ফ্রিপিক।

ল্যাসিক নতুন রকম অস্ত্রোপচার। তাই সেটি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে করানোই ভাল বলে মনে করেন গ্লকোমা চিকিৎসক নিলয়কুমার মজুমদার। তাঁর পরামর্শ, ল্যাসিক হোক বা ইমপ্ল্যান্টেড লেন্স বসানো, তা সঠিক জায়গায় গিয়ে করানোই উচিত। অস্ত্রোপচার ঠিক মতো না হলে, তখন কর্নিয়ার নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লেজ়ার সার্জারি কী ভাবে করা হয়?

চোখের সামনের দিকে গোল কাচের মতো উত্তল অংশের নাম কর্নিয়া। কর্নিয়ার মধ্য দিয়ে চোখের মধ্যে আলোকরশ্মি প্রবেশ করে ও রেটিনায় কেন্দ্রীভূত হয়। এই অংশটিই আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরণ ঘটিয়ে দেখতে সাহায্য করে। এই কর্নিয়ার যদি গঠনগত সমস্যা থাকে, তখন দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকে। কারও দূরের দৃশ্য দেখতে সমস্যা হয়, আবার কারও কাছের। তাই লেজ়ার প্রয়োগ করা হয় কর্নিয়াতেই। এর পদ্ধতিও নানা রকম। ক্যাটারাক্ট ও রিফ্র্যাকটিভ শল্যচিকিৎসক অয়ন মোহন্ত বুঝিয়ে বললেন, ‘‘যে পাওয়ারের কথা বলা হয় সব সময়ে, তা কিন্তু চশমার পাওয়ার, চোখের পাওয়ার নয়। যেমন, মাইনাস ৫ বা মাইনাস ৭ ইত্যাদি। চোখের ভিতরে কর্নিয়া, লেন্সের নিজস্ব পাওয়ার থাকে। কর্নিয়ার পাওয়ার প্লাস ৪০ থেকে প্লাস ৪৪ এর মতো হয়। ধরুন, যাঁর চশমার পাওয়ার মাইনাস ৫, তাঁর হয়তো কর্নিয়ার পাওয়ার প্লাস ৪৪। এ বার লেজ়ার প্রয়োগ করে কর্নিয়ার পাওয়ার যদি প্লাস ৪৪ থেকে প্লাস ৩৯ –এ নামিয়ে আনা যায়, তা হলেই আর মাইনাস ৫ পাওয়ারের চশমা পরতে হবে না। তখন চশমা ছাড়াই পরিষ্কার দেখা যাবে।’’ এই পদ্ধতিকে বলে ‘এগ্‌জ়াইমার লেজ়ার’। এর কাজ হল কর্নিয়ার টিস্যুকে একটু একটু করে পাতলা করে দেওয়া। লেজ়ার যখন কর্নিয়ার উপর ফেলা হয়, তখন অজস্র ছোট ছোট ‘স্পট’ তৈরি হয়। কর্নিয়ার যে মসৃণ গম্বুজাকৃতি অংশ আছে, সেই জায়গার কোষের স্তরকে পাতলা করে দিয়ে পাওয়ার কমানো হয়। এই পদ্ধতিটি ল্যাসিক, স্মাইল প্রো বা পিআরকে-র ক্ষেত্রে আলাদা। কর্নিয়ার পুরুত্ব অনুযায়ী তা ঠিক করতে হয়।

ল্যাসিক বা স্মাইল প্রো সার্জারি করালে চশমা বা লেন্স পরার প্রয়োজন হবে না। ছবি: ফ্রিপিক।

কর্নিয়ার গড়ে ৫২০ মাইক্রন পুরু হয়ে থাকে। কর্নিয়ার এই পুরু ভাব স্বাভাবিকের আশপাশে থাকলে ল্যাসিক সার্জারি করানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাইক্রোকেরাটোম ব্লেড বা ফেমটোসেকেন্ড লেজ়ার পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রথমেই ৯০ থেকে ১১০ মাইক্রনের একটি স্তর কর্নিয়া থেকে অস্ত্রোপচার করে তুলে নেওয়া হয়। এর পরে ফের লেজ়ার পদ্ধতি (এগ্‌জ়াইমার লেজ়ার) ব্যবহার করে কর্নিয়ার বেশ কিছু কোষকে অপসারণ করা হয়। তার পর আগে থেকে তুলে রাখা কর্নিয়ার স্তরটি (স্ল্যাব) আবার চোখে বসিয়ে দেওয়া হয়। কোষের এপিথেলিয়াম স্তর গঠনের মাধ্যমে কর্নিয়ার স্তরটি ফের জুড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সেলাই করার প্রয়োজন পড়ে না। সার্জারির পরদিন থেকেই চশমা ছাড়া স্পষ্ট দেখা যাবে।

চোখে সার্জারি কারা করাতে পারবেন, কারা নয়?

লেজ়ার দিয়ে পাওয়ার কমিয়ে ফেলা হচ্ছে ঠিকই, তবে তা সকলের জন্য নয়। কিছু নিয়ম আছে। কী কী সেই নিয়ম?

১) বয়স ১৮ বছরের উপরে হতে হবে। এর কমে চোখে অস্ত্রোপচার করা যাবে না, সে পাওয়ার যত বেশিই হোক না কেন।

২) ৬ মাস বা তারও বেশি সময় ধরে চোখে স্থায়ী পাওয়ার রয়েছে, এমন কেউ করতে পারবেন। যাঁদের পাওয়ার ঘন ঘন বদলায়, তাঁরা করাতে পারবেন না।

৩) কর্নিয়ার স্তর পুরু হতে হবে (কম করেও ৫২০ মাইক্রন)।

৪) ড্রাই আই বা শুষ্ক চোখের সমস্যা থাকলে ল্যাসিক সার্জারি করা যাবে না।

চোখে লেজ়ার সার্জারি কারা করাতে পারেন, খরচ কত, জানুন সবিস্তার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কোন অস্ত্রোপচার কাদের জন্য?

ল্যাসিক সার্জারি: মায়োপিয়া রয়েছে, অর্থাৎ দূরের দৃষ্টি অস্বচ্ছ, পাওয়ার মাইনাস ৮ ছাড়িয়ে গিয়েছে, তাঁদের ল্যাসিক করা যেতে পারে। তবে পাওয়ার স্থায়ী হতে হবে এবং কর্নিয়ার বেধ পুরু হতে হবে।

স্মাইল প্রো: আইটি সেক্টরের কর্মী, সাংবাদিকদের জন্য স্মাইল প্রো উপযুক্ত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে হয়, নাইট শিফ্‌ট থাকে বা বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে হয় যাঁদের, তাঁদের জন্য স্মাইল প্রো সার্জারি উপযুক্ত। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি হয়ে গেলে এবং পেশাগত কারণে চোখের উপর চাপ বেশি পড়লে ল্যাসিকের তুলনায় স্মাইল প্রো বেশি কার্যকর হবে।

পিআরকে: সেনাবাহিনীতে রয়েছেন যাঁরা, বায়ুসেনা বা নৌবাহিনীতে রয়েছেন, অথবা পুলিশে চাকরি করেন, তাঁদের জন্য পিআরকে বা ‘ফোটোরিফ্র্যাক্টিভ কেরাটেকটোমি’ অস্ত্রোপচার উপযুক্ত। ল্যাসিকে কর্নিয়ার উপরে হালকা দাগ পড়ে। পুলিশ বা সেনাবাহিনীর চাকরিতে চক্ষু পরীক্ষার সময়ে তা ধরা পড়ে। কাজেই এই পেশায় ল্যাসিক করা নিষিদ্ধ। সে ক্ষেত্রে চোখে পাওয়ার হয়ে গেলে পিআরকে করাই উচিত।

খেলাধূলা করেন যাঁরা, ক্রিকেট বা ফুটবল খেলেন অথবা দৌড়দৌড়ি করতে হয় এমন খেলাধূলা করেন, তাঁদের জন্য পিআরকে উপযুক্ত। যে পেশায় যখন-তখন শরীরে আঘাত লাগার আশঙ্কা থাকে, দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, অথবা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে সেখানে পিআরকে ছাড়া গতি নেই।

আইসিএল: পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন বছরের কোঠায় পৌঁছোলে তখন স্মাইল প্রো-র চেয়ে আইসিএলই ভাল। চোখে ছানি পড়লে বা ছানি পড়ার বয়সে পৌঁছোলে লেজ়ার না করে ইমপ্ল্যান্টেড লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয় চোখে। সেখানেও একটি নিয়ম আছে। কর্নিয়ার পাওয়ার যেমন প্লাস ৪০ থেকে প্লাস ৪৪-এর মধ্যে হয়, চোখের ভিতরের লেন্সের পাওয়ার ১৮-২০ ডায়পটর (ডি)-এর মধ্যে হয়। সেখানে যদি ১৫ ডায়পটরের লেন্স চোখে বসিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে আর আলাদা করে চশমা পরার দরকার হবে না।

লেজ়ার সার্জারি করে চোখের পাওয়ার শূন্যে নামিয়ে আনা যায়। ছবি: ফ্রিপিক।

অস্ত্রোপচারের পরে সতর্কতা

· প্রথম কয়েক দিন হাত দিয়ে চোখ রগড়ানো যাবে না।

· চোখে জোরে জোরে জলের ঝাপটা দেওয়া যাবে না।

· সাঁতার কাটা কয়েক মাস বন্ধ রাখতে হবে।

· শৌখিন লেন্স পরা যাবে না প্রথম কয়েক মাস। পরে পরতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

· অস্ত্রোপচারের পর পরই চোখে ধুলোবালি লাগানো যাবে না।

খরচ কত?

কোন হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করাবেন, তার উপর খরচ নির্ভর করবে। সাধারণত পিআরকে সার্জারির খরচ দু’চোখের জন্য ৩০-৩৫ হাজার টাকা।

ল্যাসিকের খরচ দু’চোখের জন্য ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। ফেমটোসেকেন্ড লেজ়ার করালে খরচ ৮০ হাজারের বেশি। আর মাইক্রোকেরাটোম ব্লেড সার্জারি করালে খরচ পড়বে ৪০ হাজারের মতো।

স্মাইল প্রো সার্জারির খরচ পড়বে দু’চোখের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।

স্পাইল প্রো-র মতোই সিল্ক লেজ়ার আই সার্জারির খরচ দু’চোখের জন্য ১ লক্ষ টাকার বেশি।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিছু হবে কি?

১) ল্যাসিক সার্জারি করালে দু’রকম সমস্যা হতে পারে— ক) ড্রাই আইয়ের সমস্যা হতে পারে, খ) আঘাত লাগলে বা দুর্ঘটনা ঘটলে তখন আবার পাওয়ারের সমস্যা হতে পারে।

২) পিআরকের ক্ষেত্রে ড্রাই আইয়ের সমস্যা বেশি হতে পারে।

৩) সার্জারি করানোর পর প্রথম কিছু দিন চোখের সামনে আলোর রিং বা আলোর ছটা দেখা যেতে পারে। রাতে গাড়ি চালানোর সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। তার পর ধীরে ধীরে এই সমস্যা কমে যাবে।

খেয়াল রাখতে হবে, বিজ্ঞান আর বাণিজ্য কিন্তু এক নয়। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে দৃষ্টিশক্তি উন্নত থেকে উন্নততর করা সম্ভব। তবে চিকিৎসকের দায়ও থেকে যায়। সকলের চোখ এই সার্জারির জন্য উপযুক্ত নয়, চিকিৎসকের দায়িত্ব রোগীকে সেটা বোঝানো। কেউ যদি সেটা না করেন, তাতে রোগীর ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement