Inflammation reason and effects

প্রদাহ কী, তা শরীরের ক্ষতিই বা করে কী ভাবে? কোন কোন খাবার সেই ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পারে

বলিউড তো বটেই, হলিউডের তারকারাও মুক্ত কণ্ঠে স্বীকার করেছেন, তারুণ্য ধরে রাখার জন্য তাঁরা প্রদাহ নাশক খাবার খেতে শুরু করছেন। তাতে তাঁদের শরীরও সুস্থ রয়েছে। কিন্তু এই প্রদাহ আসলে কী বস্তু?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:১৭
Share:

ছবি : সংগৃহীত।

অভিনেত্রী বিদ্যা বালন বলেছিলেন, তাঁর রোগা না হওয়ার মূল কারণ ছিল ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ। সমান্থা রুথ প্রভু বলেছিলেন, তাঁর অটো ইমিউন ডিজ়িজ-এর প্রকোপ কমাতে সাহায্য করেছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি খাবার। মাঝে অত্যন্ত ওজন বেড়ে গিয়েছিল অর্জুন কপূরের। অভিনেতা বলছিলেন, ইনফ্ল্যামেশনই তাঁর জীবনের খলনায়ক। ওজন বৃদ্ধি থেকে শুরু করে ত্বকে বয়সের ছাপ, সব কিছুই হয়েছে ওই একটি সমস্যার কারণেই।

Advertisement

বলিউড তো বটেই, হলিউডের জেনিফার অ্যানিস্টন, গিনেথ প্যালট্রো, সেলেনা গোমেজের মতো তারকারা মুক্ত কণ্ঠেই স্বীকার করেছেন, তারুণ্য ধরে রাখার জন্য তাঁরা প্রদাহ নাশক খাবার খেতে শুরু করছেন। কিন্তু এই প্রদাহ আসলে কী বস্তু?

প্রদাহ কী?

Advertisement

এক কথায় এর জবাব দিলে চমকে যেতে পারেন। কারণ প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন আদতে শরীরের এক ধরনের ‘সুরক্ষা কবচ’, যা রোগ প্রতিরোধ শক্তির জন্য জরুরি। মুম্বইয়ের এক পুষ্টিবিদ লিমা মহাজন ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিয়োতে এ ব্যাপারে সবিস্তার আলোচনা করেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘শরীরে যখন কোনও আঘাত লাগে বা সংক্রমণ হয়, তখন শরীর নিজেকে রক্ষা করার জন্যই ওই প্রক্রিয়াটি শুরু করে। শরীরে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয় যাতে শ্বেত রক্তকণিকা দ্রুত ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে।’’ কিন্তু তা যদি হবে, তা হলে সবাই প্রদাহ নাশ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন কেন?

প্রদাহ শরীরের ক্ষতি করে কখন?

পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, শরীরের সমস্যা সারানোর জন্য যে প্রদাহ শুরু হয়, তা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখনই সমস্যার সূত্রপাত। কারণ, তখন ওই অতিরিক্ত প্রদাহ সুস্থ কোষ এবং সুস্থ পেশিতন্তুকেও আক্রমণ করতে শুরু করে। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের ফলে হৃদরোগ, ধমনীতে ব্লকেজ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস বা অস্থিসন্ধির ব্যথা এমনকি, অ্যালঝাইমার্স এবং ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে অতিরিক্ত প্রদাহ থেকে।

প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এমন ৫টি খাবার

রক্তে প্রদাহের মাত্রা কমিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে যে সমস্ত খাবার তার মধ্যে অন্যতম হল—

হলুদ: এতে আছে কারকিউমিন, যা সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রদাহবিরোধী উপাদান। তবে হলুদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে হলে এর সঙ্গে সব সময় গোলমরিচ খাওয়া জরুরি। সঙ্গে খানিক আদা মিশিয়ে খেতে পারলে তা প্রদাহ কমানোর ক্ষেত্রে দারুণ ‘ওষুধ’ হতে পারে।

চর্বি বেশি রয়েছে এমন মাছ: ইলিশ, কাতলা, শিঙি, আড়, চিতল, পমফ্রেট এবং ভেটকি মাছে চর্বি থাকে বেশি। ফলে প্রচুর ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও থাকে, যা প্রদাহ কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।

বিশেষ কিছু ফল ও সব্জি: কালো জাম, কালো আঙুর, বেদানা, বীট, লাল বাঁধাকপি, কালো গাজর এবং বেগনি রঙের শাঁস থাকা রাঙা আলুতে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন, যা প্রদাহ কমাতে পারে। পাশাপাশি প্রদাহ থেকে হওয়া কোষের ক্ষতিও কমাতে পারে।

সবুজ শাকসব্জি: পালংশাক, ব্রকোলিতেও প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও ভিটামিন থাকে যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমানোর পাশাপাশি প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে।

এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল: এতে থাকা ওলিওক্যানথাল আইবুপ্রোফেন ওষুধের মতো প্রদাহ নাশে সাহায্য করে।

কী কী খাবেন না?

শুধু প্রদাহ কমানোর জন্য উপকারী খাবার খেলেই চলবে না। এর জন্য কিছু ক্ষতিকর খাবার এড়িয়ে চলাও জরুরি। বিশেষ করে অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং অতিরিক্ত ডুবো তেলে ভাজা খাবার শরীরে প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement