ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা কেন জরুরি, খরচ কত? ছবি: ফ্রিপিক।
হাত দিয়ে টিউমার বোঝা যায় না অনেক সময়েই। অথচ হালকা ব্যথা রয়েছে স্তনে। স্তনবৃন্ত থেকে ক্ষরণও হচ্ছে। এমন লক্ষণ দেখলে দেরি না করে ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শই দেন চিকিৎসকেরা। তবে শুধু স্তনে অস্বাভাবিকতা দেখলেই নয়, আগে থেকে ম্যমোগ্রাম টেস্ট করিয়ে রাখলে বিপদের ঝুঁকি কম। ৩০ বছর বয়সের পরে ক্যানসার স্ক্রিনিং টেস্ট অতি অবশ্যই করিয়ে রাখার কথা বলেন চিকিৎসকেরা। তার মধ্যে ম্যামোগ্রাম অবশ্যই একটি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।
ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা কী?
ম্যামোগ্রাম হল স্তনের এক্স-রে পরীক্ষা। একে বলা হয় ম্যামোগ্রাফি টেস্ট। স্তনের কোষের অস্বাভাবিক বিভাজন হচ্ছে কি না, অথবা স্তনে মাংসপিণ্ড গজিয়ে উঠেছে কি না, তা চিহ্নিত করতে খুবই কার্যকরী এই পরীক্ষা। স্তনে টিউমার বা সিস্ট হয়েছে কি না জানতে এই পরীক্ষাটি আগে করেন চিকিৎসকেরা। নিজের হাতে পরীক্ষা বা ‘সেলফ এগজ়ামিনেশন’ সব সময়ে সঠিক হয় না। স্তনে টিউমার হচ্ছে কি না, তা হাত দিয়ে বোঝা না গেলেও ম্যামোগ্রাফি এক্স-রে টেস্টে খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে।
ম্যামোগ্রাফি দু’রকম হয়— ১) স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাম টেস্টে পরীক্ষা করে দেখা হয়, ক্যানসারের আশঙ্কা আছে কি না। এটি রুটিং স্ক্রিনিং টেস্ট যা ৩০ পেরোলে সব মহিলারই করিয়ে রাখা উচিত। উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, এই পরীক্ষা করানো জরুরি।
২) ডায়াগনস্টিক ম্যামোগ্রাম টেস্ট তখনই করা হয়, যখন কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। যেমন, স্তনে মাংসপিণ্ড, ব্যথা বা ক্ষরণ হলে তখন এই পরীক্ষা করানো হয়।
খরচ কত?
ম্যামোগ্রাম টেস্টে খুব বেশি সময় লাগে না। খুব কম তেজস্ক্রিয়তার প্রয়োগ হয় এই এক্স-রে পরীক্ষায়। রুটিন স্ক্রিনিং টেস্টের খরচ হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকার মধ্যে। ডায়াগনস্টিক ম্যামোগ্রাম করলে তার খরচ পড়ে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা। ডিজিটাল বা থ্রিডি ম্যামোগ্রামের খরচ একটু বেশি, আড়াই হাজার থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক শুভদীপ চক্রবর্তীর মত, স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রেও যদি সঠিক সময়ে রোগ ধরা পড়ে তা হলে মৃত্যুর আশঙ্কাও অনেকটাই কমে আসে। স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে আগে বহু ক্ষেত্রেই ভুল রিপোর্ট আসত। যার ফলে চিকিৎসায় জটিলতা বাড়ত। এখন চিকিৎসাপদ্ধতি অনেক উন্নত। শুধু স্ক্রিনিং সঠিক সময়ে হলে রোগ নিরাময়ের পথ আরও প্রশস্ত হবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।