থাইরয়েডেও ওজন কমবে, মনও ভরবে, এমন ৫ জলখাবারের রেসিপি রইল।
থাইরয়েড হলে অনেকের ওজন খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে যায়, আবার অনেকের কমে যায়। হাইপোথাইরয়েডিজ়ম থাকলে ওজন বৃদ্ধি দ্রুত হয়। নিয়মিত ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। তাতে হরমোন নিঃসরণ আয়ত্তে থাকলেও ওজন কমে না। হাইপোথাইরয়েডিজ়মে যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা বিলক্ষণ জানেন, ওজন কমানো কতটা কঠিন। শরীরচর্চা করেও লাভ হয় না তেমন। থাইরয়েডের সঙ্গে যদি অন্যান্য হরমোন জনিত সমস্যাও দেখা দেয়, তা হলে স্থূলত্ব সর্ব ক্ষণের সঙ্গী হয়ে যায়। তলপেট, ঊরুতে মেদ জমে বেশি। থাইরয়েডের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি, কিন্তু খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে সমান্য খেয়াল রাখলেই এই সমস্যার মোকাবিলা করা যেতে পারে। বিশেষ করে সকালের জলখাবারে যদি ‘লো-কার্ব’ অর্থাৎ, কার্বোহাইড্রেট কম আছে, এমন কিছু খাবার রাখা যায়, তা হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে রোজের খাবারে জ়িঙ্ক, আয়োডিন, কপার, আয়রন, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ই- এর সঠিক ভারসাম্য জরুরি। কপার এবং আয়রন, দু'টিই থাইরয়েডের মোকাবিলা করতে পারে। আবার বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, ছোলা জাতীয় খাবার থাইরয়েড বাড়িয়ে দিতে বাড়ে। থাইরয়েড বেড়ে গেলে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, যেমন পনির, চিজ়ও ডায়েট থেকে বাদ দিতে বলা হয়। থাইরয়েড থাকলে কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়াই ভাল। তা হলে জলখাবারে কী খাবেন?
ওট্সের ইডলি
এক কাপ ওট্স ব্লেন্ড করে নিতে হবে। খুব বেশি মিহি করার প্রয়োজন নেই। ১/৪ চা চামচ সর্ষে, ১/২ চা চামচ জিরে, ১ চা চামচ বিউলির ডাল ভেজে নিতে হবে যত ক্ষণ পর্যন্ত না সোনালি রং ধরছে। এর পর ছড়িয়ে দিন এক চিমটে হিং। এর পর ছোট করে কেটে নেওয়া কাঁচালঙ্কা, কারিপাতা, ধনেপাতা, ১ চা চামচ কুচিয়ে নেওয়া আদা ভেজে নিতে হবে। আধ কাপ সুজি, ডালিয়া বা সিমোলিনা ভেজে নিতে হবে মাঝারি আঁচে। এর পর ওটস মিশিয়ে নিয়ে আবার কম আঁচে ভেজে নিয়ে স্বাদ মতো নুন যোগ করে নিন। ইডলি প্লেটে অল্প একটু তেল দিয়ে ব্যাটার অল্প অল্প করে দিয়ে দিন। বেশি আঁচে স্টিম করে নিন ১১ থেকে ১২ মিনিটের মতো। ওট্সের ইডলি তৈরি হয়ে যাবে।
মুগ ডালের চিল্লা
মুগডাল বেটে তাতে স্বাদ মতো নুন, মিষ্টি, ঝাল দিয়ে তৈরি করুন মিশ্রণ। ফ্রাইং প্যানে সামান্য তেল বা ঘি দিয়ে মুগডালের মিশ্রণটি অল্প ছড়িয়ে দু’ পাশ ভেজে তুলে নিন। সয়াবিন সেদ্ধ করে পেঁয়াজ, আদা, রসুন দিয়ে কষিয়েও চিল্লার ভিতরে পুর হিসাবে দিতে পারেন। প্রোটিন, ফাইবারে সমৃদ্ধ এই খাবার পেট ভর্তি রাখে অনেক ক্ষণ।
পালং শাকের অমলেট
সামান্য কয়েকটি পালং শাকের পাতা মিহি করে কুচিয়ে নিন। এ বার একটি পাত্রে নুন, গোলমরিচ দিয়ে ডিম ফেটিয়ে নিন। এর মধ্যে দিয়ে দিন পালংশাকের পাতা। চাইলে ডিমের গোলায় মেশাতে পারেন অলিভ, অরিগ্যানো এবং চিলি ফ্লেক্স। এ বার কড়াইতে সামান্য মাখন বা অলিভ অয়েল দিয়ে হালকা আঁচে ডিম ভেজে নিন।
সুজির উপমা
মরসুমি সব্জি দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন মুখরোচক উপমা। সাদা খোলায় সুজি হালকা করে নেড়ে নিন। এ বার কড়াইতে এক চামচ সাদা তেল দিয়ে তাতে গোটা সর্ষে, কারিপাতা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজকুচি দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজ হালকা বাদামি হলে তাতে বিন্স, ক্যাপসিকাম ও অন্য কোনও সব্জি দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। এ বার তাতে সুজি ও অল্প জল দিয়ে ঢেকে বসিয়ে দিন। সিদ্ধ হয়ে গেলে ভাল করে নাড়াচাড়া করুন, যাতে ঝুরঝুরে হয়।
নারকেলের উপমা
নারকেল বেটে দুধ তৈরি করে নিন। এ বার কড়াইতে সাদা তেল গরম করে তাতে গোটা সর্ষে, কারিপাতা, পেঁয়াজকুচি দিয়ে বাদামি করে ভাজুন। তার পর সুজি দিয়ে নাড়াচাড়া করে নারকেলের দুধ দিয়ে দিন। ভাল করে নাড়তে হবে, যাতে কড়াইতে লেগে না যায়। ঝুরঝুরে হয়ে এলে নামিয়ে নিয়ে উপরে নারকেলকোরা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।