বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাতের অনামিকায় প্রভাব ফেলে এই রোগ। ছবি: সংগৃহীত।
আচমকা হাতের আঙুলগুলিতে টান ধরছে? না বেঁকাতে পারছেন, না সোজা করতে। ধীরে ধীরে সেরে উঠছে। কিন্তু মাঝে মধ্যেই এমন ঘটে চলেছে। আর হাতের আঙুল বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এ কথা জানেন কি, নির্দিষ্ট রোগের কারণেই হাতের আঙুল আটকে যাচ্ছে? হাতের আঙুলের আটকে যাওয়ার এই বিশেষ রোগের নাম ‘ট্রিগার ফিঙ্গার’। পোশাকি নাম, স্টেনোসিং টেনোসাইনোভাইটিস। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাতের অনামিকায় প্রভাব ফেলে এই রোগ। তবে অন্যান্য আঙুলও আটকে যেতে পারে।
ট্রিগার ফিঙ্গার রোগের কারণ কী?
হাতের ফ্লেক্সর টেন্ডরে প্রদাহের কারণে এই রোগের জন্ম। ফ্লেক্সর টেন্ডন হল দড়ির মতো এক তন্তু, যা হাতের পেশিগুলিকে আঙুলের হাড়ের সঙ্গে যুক্ত হতে সাহায্য করে। এটির সাহায্যেই হাতের পাঁচটি আঙুল বেঁকিয়ে মুষ্টি তৈরি করা যায়। হাতের অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য এই রোগ হয়। তবে বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবিটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রারাইটিস এবং থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের মধ্যেই ট্রিগার ফিঙ্গারের প্রকোপ বেশি।
ঘরোয়া টোটকায় রোগ উপশম হতে পারে—
ট্রিগার ফিঙ্গারে আক্রান্ত হলে প্রথমেই অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন না চিকিৎসকেরা। নানাবিধ উপায় রয়েছে, যার সাহায্যে ঘরেই রোগ উপশমের সম্ভাবনা থাকে। সেগুলির কয়েকটি নীচে উল্লেখ করা হল।
১. বিশ্রাম: আঙুলের অতিরিক্ত ব্যবহারে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন ব্যক্তি। তাই উপশমের উপায়ের তালিকায় প্রথমটি হল, বিশ্রাম। হাতের কাজ কমাতে হবে। অনেক সময়ে দেখা যায়, তাতেই ধীরে ধীরে সেরে যাচ্ছে এই রোগ। ১-২ সপ্তাহ মতো হাতের আঙুলকে বেশি নাড়াচাড়া করতে দেওয়া যাবে না।
২. স্প্লিনটিং: ট্রিগার ফিঙ্গার সারানোর জন্য আঙুলের এক ধরনের পোশাক হয়। এটিকে ‘স্প্লিন্ট’ বলা হয়। ওষুধের দোকানে বা অনলাইনে অর্ডার করলে চলে আসবে আপনার বাড়িতেই। আঙুলের নীচের অংশে এই জ্যাকেটটি পরে থাকতে হয়। উপরের অংশ নড়াতে হলে নীচের অংশকে বিরক্ত করতে হয় না।
ট্রিগার ফিঙ্গার সারানোর জন্য আঙুলের এক ধরনের পোশাক হয়। এটিকে ‘স্প্লিন্ট’ বলা হয়। ছবি: সংগৃহীত।
৩. ব্যায়াম: হাত এবং আঙুলের ব্যায়াম করলে পেশি মজবুত হয়। টেন্ডনের চারপাশের পেশিগুলিতে টান ধরলে তা সেরে যেতে পারে। যদিও খুব বেশি ব্যায়াম করলে আবার ব্যথা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হয়।