ছবি : সংগৃহীত।
মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হলে ওজন না বাড়িয়েও কিছু স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাবার খাওয়া যেতে পারে। যাতে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেপূরণও হবে, অথচ ওজন বাড়বে না। চাইলে এমন খাবার পাওয়া যায়, যাতে প্রক্রিয়াজাত চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট নেই।
প্রক্রিয়াজাত চিনি ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অন্য দিকে, অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটও শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। কিন্তু এমন মিষ্টি খাবারও রয়েছে, যা প্রক্রিয়াজাত চিনি বর্জিত এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে ভরপুর।
১. ফল বা ফল দিয়ে তৈরি খাবার
মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর জানাচ্ছেন, মিষ্টির সবচেয়ে ভাল এবং প্রাকৃতিক বিকল্প হল ফল।এতে রয়েছে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং প্রচুর ফাইবার। যা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরি বলে মনে করেন পুষ্টিবিদেরা। এ ছাড়াও ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। যা শরীরকে দূষণমুক্ত করে। ফলে অস্বাস্থ্যকর মেদ জমতে পারে না। ফল কী ভাবে খাবেন?
তাজা ফল: এক বাটি আপেল, পেঁপে, পেয়ারা, কমলা, বেরি জাতীয় ফল অথবা কয়েক টুকরো কলা বা আম খেতে পারেন। তবে ফলের রস করে না খেয়ে ফল চিবিয়ে খান। তাতে ফাইবার যাবে শরীরে। যা পেট অনেক ক্ষণ ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
ফ্রুট চাট বা ফলের রায়তা : টুকরো করে কাটা ফলের উপর লেবুর রস, চাটমশলা বা গোলমরিচ ছড়িয়ে খেতে পারেন। অথবা নানা রকমের ফলের টুকরোর সঙ্গে সামান্য টকদই আর ভাজা মশলা মিশিয়ে রায়তা বানিয়েও খেতে পারেন।
আপেলের মিষ্টি: আপেল সেদ্ধ করে তাতে সামান্য দারচিনি এবং একটু গোলমরিচ, অল্প মধু বা খেজুরকুচি মিশিয়ে খেতে পারেন।
২. স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস
পুষ্টিবিদ রুজুতা দ্বিবেকর বলছেন, কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার আছে, যা ততটা ক্ষতিকর নয়। এমনকি, চাইলে বাড়িতে তৈরি করা মিষ্টিও খেতে পারেন। শুকনো ফলও খাওয়া যেতে পারে।
খেজুর বা কিশমিশ: মিষ্টি খেতে ইচ্ছা হলে খেজুর বা কিশমিশ খেতে পারেন। এগুলি প্রাকৃতিক মিষ্টি খাবার, যা দ্রুত শক্তি যোগায় অথচ চিনির মতো ক্ষতিকর নয়।
ডার্ক চকোলেট : ৭০ শতাংশ বা তার বেশি কোকো আছে, এমন ডার্ক চকোলেটের একটি ছোট টুকরা খেতে পারেন। এটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর এবং মিষ্টি খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষাও কমায়।
শুকনো ফলের লাড্ডু: খেজুরবাটা, ওটস, এবং বিভিন্ন বাদাম দিয়ে ঘরে লাড্ডু তৈরি করতে পারেন। এতে চিনি কম থাকে এবং ফাইবার ও প্রোটিন বেশি পাওয়া যায়।
চিয়া বীজের পুডিং: চিয়া বীজ, কাঠবাদামের দুধ বা সাধারণ দুধ সামান্য মধু বা খেজুরকুচি মিশিয়ে সারা রাত ফ্রিজে রেখে দিন। সকালে এটি একটি স্বাস্থ্যকর ডেসার্ট হিসাবে খেতে পারেন।
মনে রাখা জরুরি
পরিমিত খান: স্বাস্থ্যকর বিকল্প হলেও, পরিমাণের দিকে নজর দিন। কোনও কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
সঠিক সময়: রমিতা জানাচ্ছেন, মিষ্টি খাওয়ার সেরা সময় হল সকালবেলা বা দুপুরের খাবারের ঠিক পরে। দিনের এই সময় বিপাক হার বেশি থাকে, ফলে ক্যালোরি দ্রুত খরচ হয়। রাতে মিষ্টি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
জল পান করুন: রুজুতা বলছেন, ‘‘মিষ্টি খেলে তার পরে এক গ্লাস হালকা গরম জল বা লেবুর জল পান করতে পারেন। এটি হজমে সাহায্য করে এবং মেদ জমার ঝুঁকি কিছুটা কমায়।’’