Winter Diseases

নাগাড়ে হাঁচি-কাশি, শীতকালীন অ্যালার্জি-ব্রঙ্কাইটিস বাড়ছে, সুস্থ থাকতে কী খাবেন, বাদ দেবেন কী কী?

সর্দি-কাশি, গলা ব্যথার সমস্যা ঘরে ঘরে। শ্বাসকষ্টও ভোগাচ্ছে। ঘরে ঘরে জ্বর, গা হাত-পায়ে ব্যথা। শীতকালীন অ্যালার্জি ও ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যাও বেড়েছে। সুস্থ থাকতে কী করণীয়, জেনে নিন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৩২
Share:

টানা হাঁচি, শুকনো কাশি হচ্ছে, এই সময়ে কী খাবেন আর কী নয়? ছবি: শাটারস্টক।

মরসুম বদলের সময় এলে সর্দি-কাশি, জ্বর হয়েই থাকে। প্রতি বছরই এমন হয়। তবে এ বছরে জ্বর, কাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। ঘরে ঘরে ভাইরাল জ্বর। হাঁচি শুরু হলে থামতে চাইছে না, শুকনো কাশি সারছেই না। গলা ব্যথা, ঢোঁক গিলতে কষ্ট, সেই সঙ্গে হাত ও পায়ে নিদারুণ যন্ত্রণা। কমবেশি অনেকেই ভুগছেন এই সমস্যায়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শীতের সময়ে জীবাণুর প্রকোপ বাড়ে। সে সঙ্গে দূষণের পাল্লাও ভারী হয় এই সময়ে। দুইয়ে মিলেই যত গোলমাল ঘটাচ্ছে। শীতকালীন অ্যালার্জি, ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়ার লক্ষণও দেখা দিচ্ছে। তাই এই সময়টাতে অনেক বেশি সাবধানে থাকতে হবে।

Advertisement

সকলেরই হয়তো কম-বেশি পরিচয় রয়েছে ব্রঙ্কাইটিসের সঙ্গে। 'ব্রঙ্কাস' শব্দটির অর্থ শ্বাসনালি। ব্রঙ্কাসের প্রদাহকে বলা হয় ব্রঙ্কাইটিস। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, শ্বাসের সঙ্গে জীবাণু, বাতাসের নানা ধরনের দূষিত পদার্থ শরীরে ঢোকে। এই সব দূষিত পদার্থ ব্রঙ্কাসের মিউকাস মেমব্রেনে প্রদাহ বাড়িয়ে তোলে। তখন শ্বাসকষ্ট, বুকে কফ জমে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের কারণেও ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। যখন তিন সপ্তাহের মধ্যে রোগীর নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, সেটি অ্যাকিউট। তার বেশি সময় ধরে সমস্যা থাকলে তখন সেটি ক্রনিক হয়ে যাবে। সাধারণত কাশি-জ্বরের যে উপসর্গ দেখা যায়, তা-ই ব্রঙ্কাইটিসে খানিক বেড়ে যায়। গলা ধরে থাকা, গলায় কিছু আটকে থাকার অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। এর সঙ্গে জ্বরের মতো উপসর্গ থাকবেই। শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তা ছাড়া অ্যালার্জিক রাইনিটিসের সমস্যাও এখন বেশি। এর থেকেও নাগাড়ে হাঁচি, কাশি, চোখ জ্বালা বা চোখে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

শীতকালীন অসুখ থেকে বাঁচতে কী খাবেন, কী নয়?

Advertisement

এমন খাবার খেতে হবে, যা প্রদাহনাশক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। রোজের পাতে রাখুন নানা রকম ছোট মাছ, তিসি বা সূর্যমুখীর বীজ, নানা ধরনের বাদাম। এগুলিতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা প্রদাহ নাশ করে।

আদাও প্রদাহনাশক। আদা দিয়ে চা অথবা আদা-দারচিনি ফোটানো জল খেলে সর্দি-কাশি, গলা ব্যথায় আরাম হবে।

অ্যালার্জিক রাইনিটিস বেশি ভোগালে রোজ সকালে শসা-পুদিনার রস করে খেতে পারেন। একটি মাঝারি মাপের শসা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এক মুঠো পুদিনা পাতা ধুয়ে রাখুন। মিক্সারে শসা ও পুদিনা জল দিয়ে ভাল করে পিষে নিন। এ বার এই মিশ্রণ ছেঁকে নিয়ে পান করুন।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের রস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আনারস বা মুসাম্বির রস এ ক্ষেত্রে উপকারী। আনারসে ব্রোমালেইন নামে এমন একটি উপাদান থাকে, যা মিউকাসের ক্ষরণ বন্ধ করতে পারে। গলা ব্যথা বা গলায় সংক্রমণ হলেও আনারসের রস কাজে আসতে পারে। মুসাম্বিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তা ছাড়া রোজ সকালে আমলকির রস পান করলেও সাইনাস, ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা কমবে।

এক কাপ জলে হলুদগুঁড়ো বা কাঁচা হলুদের টুকরো এবং আদা দিয়ে ভাল করে ফোটান। ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে তা ছেঁকে নিন। এ বার তাতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। গলা ব্যথায় আরাম দেবে এই পানীয়।

একটি প্যানে জল গরম করুন। তার মধ্যে এক মুঠো তুলসিপাতা দিয়ে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। এ বার ছাঁকনির সাহায্যে তা ছেঁকে নিয়ে চায়ের মতো খেতে পারেন। হাঁচি বা কাশির সমস্যা যাঁদের বেশি, তাঁরা সকালে চা বা কফি না খেয়ে, তুলসির চা খেলে উপকার পাবেন।

কী খাবেন না?

কফ-বর্ধক খাবার, যেমন দুধ, পনির, মাখন এবং ফ্লেভার্‌ড দই বেশি খাওয়া চলবে না। অ্যালার্জি বা ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা থাকলে দুগ্ধজাত খাবার কম খাওয়াই ভাল।

মিষ্টি, চিনি দেওয়া পানীয়, কার্বোনেটেড পানীয়, কেক-পেস্ট্রি, সাদা পাউরুটি শ্বাসনালির প্রদাহ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

কর্ন অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল বা সয়াবিন তেল এড়িয়ে চলাই ভাল। রান্নায় অল্প সর্ষের তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

হিস্টামিন যুক্ত খাবার, যেমন অ্যালকোহল, চিজ়, প্রক্রিয়াজাত মাংস, চকোলেট, কোকো কম খাওয়াই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement