“কর্মপ্রধান জগৎ করি রাখা
যো যশ করহি
সো তস ফল চাখা”।।
---কবি তুলসী দাস
মহাকবি তুলসীদাস তাঁর রচিত ‘রামচরিত মানস’ গ্রন্থে উপরোক্ত শ্লোকটি উল্লেখ করে বলেছিলেন,যে যেরকম কর্ম করবে সেই অনুযায়ী ফলভোগ করবে, কারণ এই জগত হল কর্মপ্রধান। আবার অন্য একটি শাস্ত্রোক্ত শ্লোকে বলা হয়েছে--
“আয়ুঃ কর্মঞ্চ বিত্তঞ্চ
বিদ্যা নিধনমেব চ।
পঞ্চৈ তানি হি সৃজ্যন্তে
গর্ভস্থসৈব দেহিনঃ”।।
অর্থাৎ , আয়ু, কর্ম, বিত্ত, বিদ্যা, এবং নিধন এই পাঁচটি মানুষের মাতৃগর্ভে নির্দষ্ট হয়ে যায়।
চাকরি, জীবিকা ও দশম ভাব
সনাতন জ্যোতিষশাস্ত্রে লগ্নভাব থেকে জীবিকা, চাকরি, কর্মস্থল ও যশ নির্দেশিত হয়।দশম ভাব কর্ম ও কর্মের প্রকৃতি নির্দেশিত হয়। দশম ভাব কর্ম ও কর্মের প্রকৃতি নির্দেশ করে।একাদশ ভাব নির্দেশ করে কর্মের সাফল্য ও উপার্জন।চতুর্থ ভাব গৃহ থেকে কর্মোপার্জন,পঞ্চম ভাব স্ব নিযুক্তিগত জীবিকা নিজের প্রতিভা, মেধা ও মানসিক ক্ষমতা ব্যবহার করে উপার্জন, ষষ্ঠ ভাব কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা বা গোষ্ঠীর অধীনস্থ কর্ম সম্পাদন থেকে উপার্জন নির্দেশ করে।
পরিবর্তন ও বদলি
গোচরে বৃহস্পতি, কেন্দ্রস্থান (লগ্ন, চতুর্থ,সপ্তম ও দশম) অথবা ত্রিকোণে (তৃতীয়, পঞ্চম ও নবম) অথবা অতিরিক্ত দ্বিতীয়, একাদশ ভাবে লগ্ন বা চন্দ্র সাপেক্ষে অবস্থান করলে চাকরি ক্ষেত্রে শুভ পরিবর্তন আসে।কিন্তু এক্ষেত্রে বৃহস্পতির দৃষ্টি উপরোক্ত ভাবে থাকলে শুভ হয় না।
গোচরে বৃহস্পতি , ষষ্ঠ, অষ্টম, দ্বাদশ ভাবে লগ্ন বা চন্দ্র সাপেক্ষে অবস্থান করলে চাকরিক্ষেত্রে অশুভ পরিবর্তন আসে। মকর ও কুম্ভ রাশিতে বৃহস্পতি কখনোই অশুভ ফলদাতা হয় না বা নিষ্ফলা হয়। এছাড়াও বক্রী বৃহস্পতি গণনা তার আগের ভাব বা ঘর থেকে করাতে হবে। বৃহস্পতি যেহেতু বছর নির্ধারক গ্রহ তাই তার গোচর ফলেই শুভাশুভ পরিবর্তন হয় কর্মক্ষেত্রে। রাশি বা লগ্নের তৃতীয় বা একাদশ ভাবে শনি বা রাহুর অবস্থান থাকলে (দৃষ্টি নয়) অথবা রাশি বা লগ্নের নবমে শনি বা রাহুর অবস্থান বা দৃষ্টি থাকলেই চাকরিক্ষেত্রে জাতক-জাতিকার বদলি হয়।
আবার হোরাশাস্ত্র বা প্রশ্নজ্যোতিষ অনুসারে, প্রশ্নলগ্নের চতুর্থ বা দশমে যদি শুভগ্রহ (বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও বলবান চন্দ্র) থাকে তাহলে বদলি হবে না কিন্তু যদি প্রশ্নলগ্নের চতুর্থ বা দশমে পাপগ্রহ (শনি, মঙ্গল, রাহু, রবি ও বলহীন চন্দ্র )থাকে তাহলে বদলি হবে।