আমাদের বাঙালিদের বারো মাসে তেরো পার্বন। বৈশাখ থেকে চৈত্র পর্যন্ত প্রতি মাসে কোনও না কোনও উৎসব আছেই। প্রত্যেক পুজোর আলাদা আলাদা গুরুত্ব এবং উপকারিতা আছে। তেমনই সরস্বতী পুজোয় হাতেখড়ি দেওয়ার গুরুত্ব এবং উপকারিতা আছে।
১। মা সরস্বতী হলেন বিদ্যার দেবী। তিনি আমাদের বিদ্যা দান করেন। আমরা বড়, ছোট সকলেই সরস্বতী পুজো করি ও নিজের নিজের প্রার্থনা জানাই। প্রায় প্রত্যেক বিদ্যা প্রতিষ্ঠানেই সরস্বতী পুজো হয়। সন্তানদের বিদ্যার সুচনা হওয়ার আগেই সরস্বতী ঠাকুরের কাছে শুভ কামনা হেতু হাতেখড়ি দেওয়া হয়। পুরোহিত মহাশয় স্লেট ও খড়িকে পবিত্র করেন, এরপর নতুন জামা কাপড় পরিহিত জাতক/জাতিকাকে মায়ের সামনে বসিয়ে প্রথম লেখা শেখানো হয়। শুক্লা পঞ্চমীর খুব শুভ দিন, শুভ দিনের একটা গুরুত্ব আছে সাফল্যের জন্য।
হাতেখড়ির উপকারিতা বা মাহাত্ম্য
সরস্বতী মায়ের পুজো করে তাকে সাক্ষী রেখে হাতেখড়ি দিলে সেই জাতক/জাতিকার প্রভূত বিদ্যালাভ হয়, এটাই আমাদের বিশ্বাস। সব কাজেরই একটা অনুশাসন থাকে। অনুশাসন না থাকলে ঠিকঠাক কোনও কাজ পরিচালনা করা যায় না। হাতেখড়ি দেওয়াটা একটা অনুশাসনের অঙ্গ। হাতেখড়ি দেওয়াটা বিদ্যার প্রথম সোপান। হাতেখড়ির কারণে প্রত্যেক পরিবার বা ব্যক্তি পুস্তক বা বাদ্যযন্ত্রকে দেবতা বলে গণ্য করেন বা ভক্তি করেন। সেই জন্য পড়া, গীত বা বাদ্যের ঘরকে আমরা শিক্ষার মন্দির বলি।
২। হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাদে অন্য ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী পুজো করেন না বা হাতেখড়ি দেন না। তাতে কি তাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা হয় না? অবশ্যই হয়। কারণ তারা বিদ্যা শুরু করার আগে দান ধ্যান বা অন্য কোনও প্রথার মাধ্যমে বিদ্যার দেবতা বা দেবীকে শ্রদ্ধাভক্তি জানায়।