মানব জীবনে গৈরিক রঙের প্রভাব সূদূর প্রসারী।
সমাজের চোখে অচ্ছুৎ সেই চণ্ডালিকা মেয়েটি কুয়ো থেকে জল তুলতে তুলতে আকস্মিক শুনতে পেল এক স্নিগ্ধ, দীপ্ত কণ্ঠ —“ জল দাও আমায় জল দাও, যে মানব আমি সেই মানব তুমি কন্যা। ” এক চরম সত্যের উপলব্ধি সমাজের কুসংস্কারকে ভেঙেচুরে, জাতপাতের বেড়াজাল টপকে এক নিতান্ত সাধারন জীবনকে করলো আলোকময়, উজ্বল, উদ্ভাসিত। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে ফিরে তাকিয়ে চাণ্ডালিকা দেখতে পেল এক দিব্য পুরুষকে। মুখে যার স্নিগ্ধ হাসি, দীপ্ত চাহনি, গৈরিক বসনে বুদ্ধশিষ্য আনন্দ।
মানব জীবনে গৈরিক রঙের প্রভাব সূদূর প্রসারী। গৈরিক রঙ অত্যন্ত শুভ রঙ। এই রঙ মনের কুসংস্কারকে দূর করে সংস্কারি করে তোলে চিত্তকে। ত্যাগের অন্যতম প্রতীক এই গেরুয়া রঙ।এই জন্য সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর সঙ্গে গৈরিক রঙটি ওতোপ্রতো ভাবে জড়িয়ে আছে। সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে বা উপনয়নের মতো অনুষ্ঠানে এই বসন আবশ্যিক। বৃহস্পতি ও মঙ্গল উভয়েরই রঙ গৈরিক। এই রঙের মূল বৈশিষ্ট্য হল এই রঙ মনের ওপর বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিগত প্রভাব সৃষ্টি করে। এই রঙ পরিধান করলে মনে শান্তি আসে, কালিমা দূর করে, ধীরে ধীরে আত্মচেতনা বৃদ্ধি পায়। রাশিগত দিক থেকে দেখতে গেলে দেখা যায়, যাদের বৃহস্পতি ও মঙ্গল অশুভ তাদের ক্ষেত্রে এই রঙ বেশি কার্যকরী। রাশি বা লগ্ন দিয়ে এই রঙ বিচার হয় না। জন্মছক নির্ভুলভাবে বিচার করে রঙ নির্ধারণ করা উচিত। তবে সাধারন ভাবে বলা যায় যে মীন, ধনু, মেষ ও লগ্নের ক্ষেত্রে এই রঙ বেশি কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। কোনও মানুষ যদি পথভ্রষ্ট হয় তাহলে দীর্ঘদিন গৈরিক রঙের জামা কাপড় পরলে ধীরে ধীরে সুস্থ পথে চলার পথ খুঁজে পায়।