— প্রতীকী চিত্র।
৬৫ বছর বয়সী এক মুসলিম দর্জি রামলীলা বার্ষিক অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর পৈতৃক জমির একটি অংশ দান করলেন। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়লেন তিনি।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের গোপীগঞ্জ এলাকার বাদাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল রহিম সিদ্দিকী ওরফে কাল্লু তার পৈতৃক জমির প্রায় তিন বিঘে আদর্শ রামলীলা সমিতিকে দান করেন। জানা গিয়েছে, এত দিন পর্যন্ত ওই সমিতির অনুষ্ঠানের জন্য কোনও স্থায়ী ঠিকানা ছিল না। গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় তারা অনুষ্ঠান করত। এই কারণে আব্দুল জমি দানের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তাঁর পৈতৃক ভিটের বেশ খানিকটি অংশ ওই সমিতির হাতে তুলে দেন। আব্দুল জানান, তিনি স্বেচ্ছায় জমিটি দান করেছেন এবং রামলীলা কমিটির নামে সমস্ত আইনি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেন, “মঞ্চায়ন, পোশাক সংরক্ষণ এবং সংশ্লিষ্ট উপকরণ রাখার জন্য স্থায়ী স্থানের অভাব তাঁকে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যায় ফেলেছিল।” বাদাগাঁওয়ে প্রায় ৬ হাজার হিন্দু ও মুসলিমদের এক সঙ্গে উৎসব উদযাপনের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। আব্দুল নিজেও রামলীলা পরিবেশনায় বিভিন্ন ভূমিকা পালন করেছেন এবং পরে মঞ্চ পরিচালনায় সহায়তা করেছেন।
প্রাক্তন গ্রামপ্রধান রাধেশ্যাম মিশ্র পিটিআইকে বলেন, “প্রায় ৯৪ বছর ধরে গ্রামে রামলীলা অনুষ্টান আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু নির্দিষ্ট স্থানের অভাবে সব সময়ই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আব্দুল এগিয়ে এসে তাঁর পৈতৃক জমি দান করে একটি স্থায়ী সমাধানের প্রস্তাব দেন, যা সকলেই আনন্দে গ্রহণ করেছেন।”
আদর্শ রামলীলা সমিতির সম্পাদক বিনয় শুক্ল জানান, আব্দুল ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের সামনে তাঁর জমি অনুদানের ঘোষণা করে দিয়েছে। তবে কমিটির নামে জমি অনুদানের বাকি কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে। তিনি বলেন, “ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পর দান করা জমিতে নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ১৫ ফুট বাই ৩০ ফুট মাপের একটি স্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে, যার একটি বেসমেন্ট থাকবে। বেসমেন্টে পোশাক পরিবর্তন, মেকআপ এবং রামলীলার উপকরণ সংরক্ষণের জন্য ঘর থাকবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা নির্মাণে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তিনি আব্দুলের এই পদক্ষেপকে ভারতের সম্মিলিত সংস্কৃতি এবং ভ্রাতৃত্বের একটি শক্তিশালী উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছেন।