প্রথমেই একটু বলি ‘কল্পতরু’ কি জিনিস।
‘কল্পতরু’ কথাটি এসেছে পুরাণ থেকে। এটি হল কল্পান্তস্থায়ী বৃক্ষ। দেবাসুরের সমুদ্রমন্থনের কথা কম বেশি আমরা সকলেই জানি। দেবাসুরের সমুদ্রমন্থনের সময় সমুদ্রগর্ভ থেকে এটি উত্থিত হয়।পরে কল্প শেষ হলে আবার সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়। এই জন্যই এর নাম হয়েছে কল্পতরু।এটি হল অভীষ্ট ফলদায়ক বৃক্ষ।এই গাছের তলায় দাঁড়িয়ে কোনও কিছু জিনিস প্রার্থনা করলে তা অচিরেই লাভ হয়। পুরাণ মতে, দেবরাজ ইন্দ্রের স্বর্গোদ্যানে নাকি এই গাছ ছিল এবং এই গাছের কাছে যে যা চাইতো তাই পেত।এটি ইন্দ্রলোকের সর্বকামনা-পূরণকারী দেবতরু।কল্পতরুর সঙ্গে ভগবানের স্ব ভাবের তুলনা করা হয়।
স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণদেব অনেকবার নিজেই ভক্তদের বলেছেন, “ভগবান কল্পতরু।কল্পতরুর নীচে বসে যে যা চাইবে,তাই পাবে।তবে শ্রীরামকৃষ্ণদেব এও বলেছেন যখন সাধন-ভজনের দ্বারা মন শুদ্ধ হয় তখন খুব সাবধানে কামনা করতে হয়।কারণ কল্পতরু বৃক্ষের নীচে প্রার্থনা করলে ভালো-মন্দ যা সব চাওয়া যায় তাই পাওয়া যায়।
১লা জানুয়ারি কাশীপুর উদ্যানবাটীতে হাজার হাজার ভক্ত কল্পতরু উৎসব উপলক্ষ্যে হাজির হন।কেন হাজির হন এত মানুষ?এক কথায় বলা যেতে পারে ‘চৈতন্য হোক’ অর্থাৎ অনুভুতি, জ্ঞান, বোধের, জাগরণ ঘটুক রামকৃষ্ণসত্ত্বায়।
আমাদের মনের চাওয়ার কোনও শেষ নেই। ভালো বাসনা পুরণ হলে মনটা প্রসারিত হয়। অন্তরে শুভবোধের জন্ম হয় এবং প্রজ্ঞা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য কল্পতরু ভগবানের কাছে কেবল জ্ঞান-বৈরাগ্য-ভক্তি-বিশ্বাস চাইতে হয়। এতে মনের আনন্দ বৃদ্ধি পায় এবং জীবনটাও হেসে খেলে কাটানো যায়।