বাস্তু হল স্থাপনের কলা ও বিজ্ঞান। বাস্তশাস্ত্রের কোনও জাত নেই। বাস্তু যে মানবে সে ফল পাবে। কারণ বাস্তু উপদেষ্টা বিশ্বকর্মা বলেছেন, এ শাস্ত্র মানব কল্যাণের জন্য স্থাপন করা হল।
বাস্তু দেবতা কী?
পুরাণ অনুসারে সুরাসুর যুদ্ধের সময়, অন্ধাকাসুরকে বধ করেছিলেন মহাদেব। সেই সময় তাঁর কপাল থেকে ঘাম পড়েছিল তা থেকেই এক বিরাট ও ভয়ঙ্কর পুরুষের আবির্ভাব হয়। স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল- এই ত্রিলোককে ভক্ষণ করতে উদ্যত সেই বিশাল পুরুষকে দেবাদিদেব মহাদেব ও অন্যান্য দেবতারা কায়দা করে ঘুম পাড়িয়ে বাস্তুদেবতা বা বাস্তুপুরুষ রূপে আমাদের সামনে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় থেকে সকল দেবতা তাঁর শরীরে অবস্থানের অঙ্গীকার করে বর দেন। এই বাস্তু পুরুষ সকল মানুষে দ্বারা কালে কালে এই পৃথিবীতে বাস্তুপুরুষ রূপে পূজিত হবেন। সেই থেকে বাস্তুগৃহ নির্মাণে বাস্তুদেবতার পূজা হয়ে আসছে পৃথিবীতে।
বাস্তুপুরুষের অবস্থানঃ
পারিবারিক সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ করতে বাস্তুদেবতার ভূমিকা আছে, এটা আমরা সকলেই মানি। তাই বাস্তু পুরুষের অবস্থানের সম্যক ধারণা থাকা উচিত।
দেবগণের দ্বারা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভের সময় বাস্তুপুরুষের মস্তক ছিল উত্তর-পূর্ব কোণে আর পা ছিল দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে। তারপর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর বাস্তুপুরুষের অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। সেই কারণে উত্তর, পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম এই চার দিক বৈশাখ থেকে চৈত্র পর্যন্ত ক্রমানুসারে বাস্তুপুরুষের দৃষ্টি থাকে। বাস্তুপুরুষ বিভিন্ন সময়ে তিনটি অবস্থায় অবস্থান করে থাকেন। সেই তিনটি অবস্থান হল নিত্যবাস্তু,চরবাস্তু ও স্থির বাস্তু।
বাস্তুপুরুষ উপুড় হয়ে অবস্থান করেন। কিন্তু যখন আমরা পূজা করি, তখন কিন্তু তাঁর সম্মুখ ভাগকে কল্পনা করে করি।
বাস্তু পুরুষের মাথায় গৃহ নির্মাণ করা অশুভ। উক্ত গৃহে বসবাস করলে গৃহের মালিকের নানা রকম বিপদের মধ্যে পড়ার আশঙ্কা থাকে। শরীর ও স্বাস্থ্যের অবনতির সম্ভাবনা থাকে।
বাস্তুপুরুষের পাদদেশে গৃহ নির্মাণ করলে, জমানো টাকাপয়সা খরচ হয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। ঋণগ্রস্থতা, গুপ্তশ্ত্রুতা ও মামলা মোকদ্দমায় জড়ানোর আশঙ্কা থাকে।
বাস্তুপুরুষের ক্রোড়দেশে গৃহ নির্মাণ বিশেষ শুভ। পরিবারের ধন-সম্পত্তি,সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের নির্মান বিশেষ কল্যাণকর।