ভগবতী মা, যিনি মহাশক্তি জগৎ জননী, যিনি দুর্গতিনাশিনী, তিনিই আবার বিপদতারিণী তারা মা। এই তারা আবার দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয় বিদ্যা। লোককথা সাধক বামদেব মনের দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে তার ‘বড় মা’কে ডেকে ডেকে যখন দেখা পেলেন না, তখন একদিন রাগে ক্ষোভে দুঃখে সেই শিলামূর্তি ধরে কাঁদলেন। সেই রাতে মা স্বপ্নে বললেন, “কোশি অমাবস্যার রাত্রে কুশের আসনে বসে আমার পূজা করবি। আমি তোর কাছে আসব।” সেই মতো বামদেব পূজা করলেন। এই কোশি অমাবস্যা রাত্রে সেই শিলামূর্তি থেকে মা তাঁর সন্তান বামদেবকে প্রথম দেখা দিয়েছিলেন। সেই থেকেই সম্ভবত এই কৌশি বা কৌশিকী অমাবস্যাকে তারাপীঠের তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি বলে ধরা হয়।
এই কৌশি অমাবস্যা রাত্রে মায়ের বিশেষ পূজা আরতি হয়ে থাকে। আজও রাতে মহাশ্মশানে বহু দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর ভক্ত, সাধক ও তান্ত্রিকরা আসেন। পূজা পাঠ হোম যজ্ঞ করেন। মায়ের কৃপায় সকলের মনস্কামনা পূরণ হয়। কৌশি অমাবস্যায় তারাপীঠে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। চারিদিকে একটা হই চই ব্যাপার। সর্বদা মায়ের নাম গান চলছে। তারাপীঠ যেন জেগে ওঠে, নতুন ভাবে সেজে ওঠে। মনে হয় মা বিপপত্তারিণী তারা যেন দু’-হাত তুলে আমাদের ডাকছেন। আমাদের অভয় প্রদান করে বলছেন, আমি আছি তোদের ভয় কিসের?
যদি মনের কোনও আশা থাকে, একমনে মাকে জানান, পূজা দিন। হোম-যজ্ঞ মায়ের জন্য বিশেষ আহুতি প্রদান করুন। দেখবেন, মা খালি হাতে ফেরাবেন না।
কৌশি অমাবস্যা রাত্রে যাদের ঘরে তারা মায়ের ছবি-মূর্তি-পদযুগল যাই থাকুক না কেন, সেটিকে কুশের আসনে রেখে পূজা করবেন। একটি শ্বেত পদ্ম নিয়ে ১০৮ বার তারা নাম করে যে কোনও মনকামনা নিয়ে মায়ের পায়ে দিন। পূরণ হবেই হবে।