যে কোনও মাসের ১৩,১৪,১৬ ও ১৯ তারিখে জন্ম হলে পূর্বজন্মের কর্মফলের ঋণ ভোগ করতে হয়

এমন কিছু নম্বর বা জন্ম তারিখ আছে, যা সংখ্যাতত্ত্বের নিয়ম অনুসারে পূর্ব জন্মের কর্ম ফলের ঋণ বহন করে আনে। সেই নম্বরগুলি হল ১৩, ১৪, ১৬ আর ১৯। মিষ্টিক বা সাইকিকরা এই চারটি সংখ্যাকে ইংরেজিতে ‘করমিক ডেট নম্বর’ বলেন।

Advertisement

অসীম সরকার

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০০:০০
Share:

শুনতে অদ্ভুত লাগে কেউ যদি যে কোনও মাসের ১৩,১৪,১৬ বা ১৯ তারিখে জন্ম গ্রহণ করেন, তাঁকে পূর্বজন্মের কর্ম ফলের ঋণ এই পৃথিবীতে জীবিত থাকাকালীন কর্ম করে শোধ করতে হয়।

Advertisement

এমন কিছু নম্বর বা জন্ম তারিখ আছে, যা সংখ্যাতত্ত্বের নিয়ম অনুসারে পূর্ব জন্মের কর্ম ফলের ঋণ বহন করে আনে। সেই নম্বরগুলি হল ১৩, ১৪, ১৬ আর ১৯। মিষ্টিক বা সাইকিকরা এই চারটি সংখ্যাকে ইংরেজিতে ‘করমিক ডেট নম্বর’ বলেন। প্রশ্ন হতে পারে আরও তো নম্বর বা জন্ম তারিখ আছে যাদের পূর্ব জন্ম আছে,তারা কি কর্ম ফল বহন করেন না? এই রকম আরও প্রশ্ন হয়, যেমন ১১ বা ২২ বা ৩৩ এই ডবল ডিজিট নম্বরগুলিকে কেন অ্যাঞ্জেলিক বা মাস্টার নাম্বার বলা হয়। অ্যাঞ্জেলিক সংখ্যার লোকেরা যত সহজে দেবতা বা স্পিরিট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন, অন্য নম্বরের বা অন্য জন্ম তারিখের লোকের দ্বারা তা হয় না বললেই চলে। এই প্রশ্নের উত্তর মনোবিজ্ঞানের ভাষায় বললে বলা চলে যে, সবার ইএসপি (ইক্সট্রা সেন্সরি পারসেপশন) সমান হয় না। সবার সাইকিক অনুভূতি সমান হয় না বা হতে পারে না।

প্রথম ঋণ সংখ্যা ১৩(তেরো)

Advertisement

১৩ সংখ্যাকে সারা বিশ্বে আনলাকি থারটিন বলে। অনেকে ১৩ নম্বরকে প্রচণ্ড ভয়ের চোখে দেখে। যেখানে ইউরোপে অনেক পুরসভায় বাড়ির নম্বর ১২ পর ১২এ বা ১২বি তারপর ১৪ নম্বর দিয়ে বাড়ির নম্বর নির্দেশ করে। ১৩ সংখ্যাটির কোনও উল্লেখ থাকে না। সিনেমা হলে ১৩ নম্বরের কোনও চেয়ার থাকে না। ১৩ নিয়ে এই রকম নানা ফোবিয়া কাজ করে।

বলা হয় ১৩ সংখ্যার লোকেরা পূর্ব জীবনে সব সময় ‘শর্ট কাট’ অনুসরণ করতে চাইত। ফলে বর্তমান এই জীবনে এমন জায়গায় জন্ম হয় বা এমন পরিবেশে বাস করতে হয় যেখানে কঠিন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কর্ম করে সেই ঋণ শোধ করতে হয়। এই জীবনে তাঁকে অনেক হার্ডলস বা বাধা অতিক্রম করতে হয়। এমনিতে ১৩ সংখ্যার জাতক/জাতিকারা বিশেষভাবে অলস প্রকৃতির।

তাই ১৩ তারিখে জন্ম হলে আপনাকে ফোকাস করতে হয় এই দুটি শব্দের উপর— “কঠোর পরিশ্রম”। এর কোন বিকল্প নেই। আপনি কি জানেন টমাস আল্ভা এডিসন ১৩ তারিখে জন্মেছিলেন? তাঁর সমস্ত আবিষ্কার ছিল কঠোর পরিশ্রমের ফল এবং খুব দারিদ্র অবস্থার মাধ্যমে জীবন সংগ্রাম করে অনেক কিছুর আবিষ্কারকর্তা হিসেবে তাঁর নাম অমর হয়ে আছে।

১৩ সংখ্যার গুহ্যতত্ত্ব বা অকাল্ট সিগ্নিফিকেন্স সম্বন্ধে কিরো হিব্রু গুহ্যবিদদের দেওয়া ব্যাখ্যায় এই রকম ভাবে বলছেন যে, কিছু নরকঙ্কালের হাতে কাস্তে এবং তা দিয়ে তারা ফসল কাটছে, আর একটা মাঠে অনেক নতুন ঘাস গজিয়েছে আর তার মধ্যে অনেক যুবক-যুবতী ফসল তুলছে। সেখানে বলা আছে, যে এর তাৎপর্য জানবে সে ক্ষমতার অধিকারী হবে এবং সবাইকে শাসনে আনবে। ১৩ নিয়ে আরও ব্যাখ্যা আছে, স্থানের অভাবে উল্লেখ করলাম না।

কিরো বলছেন এই সংখ্যা নির্দেশ করে পরিকল্পনার পরিবর্তন, পরিস্থিতির পরিবর্তনকে। তাই এটা কোনও অশুভ নম্বর নয়। কিরো ১৩ সংখ্যাকে আর পাঁচটা সংখ্যার মতোই স্বাভাবিক চোখে দেখেছেন।

দ্বিতীয় ঋণ সংখ্যা ১৪(চোদ্দ)

১৪ সংখ্যার অকাল্ট তাৎপর্য হল, ১৪ হচ্ছে গতির নম্বর, অনেক মানুষ বা বস্তুর সমন্বয়। প্রাকৃতিক শক্তি থেকে বিপদ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন, প্রচণ্ড গতিবেগ সম্পন্ন ঝড়, জলোচ্ছ্বাস,আগুন বা অগ্ন্যুপাতের ঘটনা।

এই নম্বর অবশ্যই টাকাপয়সা সংক্রান্ত ব্যাপারে সৌভাগ্যদায়ক। বাজি ধরা, এবং ব্যবসাগত পরিবর্তন সংক্রান্ত এই সকল কাজে সব সময় বিপদ ও ভয়ংকর ঝুঁকি থাকবে। এই সংখ্যার আধিভৌতিক অভিশাপ থেকে বাঁচতে সব সময় সাবধানে কাজ করতে হবে এবং দক্ষতাকে হাতিয়ার করতে হবে।

আপনি যদি ১৪ তারিখে জন্মান, তার মানে গত জন্মে আপনি ক্ষমতার যাচ্ছেতাই ভাবে অপব্যবহার করেছেন। ফলে এ জীবনে আকস্মিক বিপদে আপনাকে পড়তে হবে। এই সব আকস্মিকতা থেকে বাঁচতে জীবনের সব ক্ষেত্রে সংযম চাই। সব রকম অপচয় বন্দ করতে হবে। নতুবা আরও জটিল কর্মফলে জড়িয়ে পড়তে হবে।

তৃতীয় ঋণ সংখ্যা ১৬ (ষোলো):

যে কোনও মাসের ১৬ তারিখে জন্ম হলে আপনি পূর্বজন্মে এমন কিছু কর্ম করেছেন, যার ফল এই জীবনে জীবিত থাকাকালীন আপনাকে ভোগ করতে হবে। আপনার গত জন্মের আত্ম-অহংকার, দম্ভ ও গর্বিত স্বভাব কী ভাবে তাঁদের ক্ষতি করেছে সেটা তখন ভেবে দেখেননি। আজকে বা এ জীবনে যখন বড় কোনও লক্ষ্য বা আশাকে সামনে রেখে তা পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন আপনি বুঝতে পারচ্ছেন তা পেতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হছে। এমনকী আপনার লক্ষ্য পূরণ আদৌ হচ্ছে না। আপনার তখন মনে হচ্ছে নিজেকে ধ্বংস করে দিতে।

সাইকিকদের মতে ষোলো সংখ্যার কর্ম ফল ভোগ খুবই জটিল এবং এই কর্মফল এক জীবনে ভোগ হবে কিনা তা বলাও মুশকিল।

কিরো ১৬ তারিখকে দুর্ভাগ্যজনক সংখ্যা বলে অভিহিত করেছেন। ১৬ তারিখ নিয়ে কী বলেছেন সেটা দেখে নেওয়া যাক। এই সংখ্যা অকাল্ট বা গুহ্যতত্ত্বে অদ্ভুত প্রতীক বহন করছে। একটা টাওয়ারের উপরে বজ্রপাত হয়েছে, আর সেখান থেকে একটা মানুষ নীচে পড়ছে। তার মাথার মুকুট। এই প্রতীককে স্যাটার সিটাডেল বলে।

এই সংখ্যা আগে থেকে একটা সতর্কতা দিতে চাইছে যার মধ্যে চরম অঘটন কিছু আছে। এটা একটা দুর্ঘটনা প্রবণ নম্বর। অনেক রকমের আসন্ন বিপদের ঈঙ্গিত আছে এই নম্বরের ভিতর। যে কোনও সময়ে যে কোনও ধরনের আতঙ্কজনক কিছু জীবনের যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে তার জন্য পূর্ব থেকে নিজেকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

৪র্থ ঋণ সংখ্যা ১৯ (উনিশ)

১৯ সংখ্যার ক্ষেত্রে সাইকিকরা বা হিব্রু মিসটিকরা বলছেন, গত জীবনে এই নম্বরের লোকেরা বিশাল প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। সেই সময়ে তিনি এই ক্ষমতার প্রভাবে নানা রকমের সুযোগ-সুবিধা আত্মস্বার্থে বা নিজের ভোগে ব্যবহার করছেন। যা ছিল প্রকৃতি বিরুদ্ধ। যে কোনও প্রকৃতি বিরুদ্ধ কাজই অশুভ কর্ম ফল সৃষ্টি করে, যা পরবর্তী জীবনে সঞ্চার করে এবং তা ঋণ হিসেবে আমাদের কাছে আসে। তাই এ জীবনে ১৯ সংখ্যার জাতক/জাতিকাদের শিখতে হবে কী ভাবে চারপাশের সমাজের মানুষের জন্য এমন ভাবে সেবা বা কর্ম দিতে যাতে গত জীবনের ঋণ শোধ করা যায়। সমাজের মানুষের কাছ থেকে নিজের নিঃস্বার্থ কাজের সমর্থন পেতে হবে।

মজার কথা কিরো ১৯ সংখ্যার জাতক/জাতিকাদের মধ্যে কোনও দুর্ভাগ্যজনক কিছু দেখেনি। তিনি ১৯ সংখ্যাকে ফরচুনেট বা সৌভাগ্যের সংখ্যা বলে অভিহিত করেছেন। হিব্রু-কাবালায় এই সংখ্যার অকাল্ট বা গুহ্য তাৎপর্য হচ্ছে “সূর্য”। তাকে বলা হয় “স্বর্গের রাজকুমার”। তাই এই সংখ্যা সম্বন্ধে কিরো বলছেন, এই সংখ্যা মানে আসন্ন সাফল্য ও সুখের প্রতিক। এই নম্বর বয়ে আনে সাফল্যময় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, যার মূলে আছে সুখ ও সৌভাগ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন