Delhi Rain

উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমের রাজ্যগুলি বৃষ্টিতে ভাসছে, অথচ দেশের ১২টি রাজ্যে দেখা নেই বৃষ্টির

মৌসম ভবনের বৃষ্টির তথ্য বলছে, ১ জুন থেকে মৌসুমি বায়ুর ঢোকার পর একমাত্র তামিলনাড়ু ছাড়া দক্ষিণের সমস্ত রাজ্যেই বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ১১:৩৪
Share:

বৃষ্টিতে ভাসছে উত্তরের রাজ্যগুলি। ছবি: পিটিআই।

দেশের এক প্রান্ত যখন অতিবৃষ্টিতে নাজেহাল, অন্য প্রান্তে ধরা পড়ল ঠিক বিপরীত ছবি। গত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির কারণে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের প্রায় সবক’টি রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকশো শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে হিমাচল প্রদেশে। তেমনই বৃষ্টিতে হাবুডুবু অবস্থা দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে।

Advertisement

উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারত যখন ভাসছে, পর্যাপ্ত বৃষ্টির আশায় মুখিয়ে রয়েছে দেশের ১২টি রাজ্য। তার মধ্যে রয়েছে মধ্য, দক্ষিণ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি, যেমন— তেলঙ্গানা, কেরল, কর্নাটক, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড। এখনও এই রাজ্যগুলিতে মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি। ফলে বৃষ্টির ‘অভাবে’ ভুগছে দেশের এই প্রান্তগুলি।

মৌসম ভবনের বৃষ্টির তথ্য বলছে, ১ জুন থেকে মৌসুমি বায়ুর ঢোকার পর একমাত্র তামিলনাড়ু ছাড়া দক্ষিণের সমস্ত রাজ্যেই বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম হয়েছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কেরল এবং কর্নাটকে ভারী বৃষ্টি হলেও তা কিন্তু সীমিত থেকেছে উপকূল অঞ্চলগুলিতেই। গোটা রাজ্যে সেই বৃষ্টির প্রভাব পড়েনি। ফলে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক এবং কেরলের একাংশে শস্যচাষে প্রভাব পড়েছে।

Advertisement

তেলঙ্গানার রাজ্য উন্নয়ন এবং পরিকল্পনা দফতর (টিএসডিপিএস) মঙ্গলবার জানিয়েছে, ১ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে বৃষ্টি হয়েছে ১৫০.৪ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ২৪ শতাংশ কম। রাজ্যে এই সময় স্বাভাবিক বৃষ্টির পরিমাণ থাকে ১৯৭.৫ মিলিমিটার। তবে গত বছরে ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। গত বছরে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ২০০ মিলিমিটার বেশি ছিল।

কেরলের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, এ বছরে রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতি ৩১ শতাংশ। রাজ্যের ৯-১৪টি জেলায় বৃষ্টির ঘাটতির পরিমাণ বেশি। তুলনায় অন্ধ্রপ্রদেশে এই ঘাটতির পরিমাণ একটু কম। এই রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতি ১৯ শতাংশ। পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে বিহারে বৃষ্টির ঘাটতি ৩৩ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডে ৪৩ শতাংশ এবং ওড়িশায় ২৬ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের ছবিটাও এক। একমাত্র অসম ছাড়া উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। অরুণাচল প্রদেশে এই মরশুমে ৪৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় ২৮ শতাংশ কম। অন্য দিকে, রাজস্থানে ২৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ১৫৫ শতাংশ বেশি।

মৌসম ভবন জানিয়েছে, পশ্চিমি ঝঞ্ঝা এবং মৌসুমী বায়ুর কারণে উত্তরের রাজ্যগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সেই ঝঞ্ঝা ধীরে ধীরে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের দিকে এগোচ্ছে। ফলে আগামী দিনে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে এই দুই রাজ্যে। অন্য দিকে, বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। এই ঘূর্ণাবর্তের কারণে দক্ষিণ ভারতে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। কিন্তু দক্ষিণে বৃষ্টি কম হওয়ার কারণ কী? এ প্রসঙ্গে মৌসম ভবন জানিয়েছে, এর মূল কারণ হল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন