প্রতীকী ছবি।
মায়ের পাশ থেকে সদ্যোজাতকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল হনুমানের দল। জন্ম থেকেই স্বরযন্ত্রে সমস্যা থাকায় শিশুটির কান্নার আওয়াজ শোনা যায়নি। পরে তার দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির পাশের একটি পাতকুয়ো থেকে।
ওডিশার কটক জেলার একটি অখ্যাত গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, কটকের তালাবাস্তা গ্রামের রামকৃষ্ণ নায়েকের প্রথম সন্তান জন্ম নেয় ১৬ দিন আগে। জন্মের পর থেকেই ওই শিশুটির মুখ থেকে কোনও শব্দ বেরতো না। তাই জন্মের পর বাড়ি ফিরিয়ে এনেও ফের সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বাবা। সেখানে স্বরযন্ত্রের চিকিৎসার পর দিন তিনেক আগে হাসপাতাল থেকে বাড়ি এসেছিল সে। শনিবার বাড়ির উঠোনে মায়ের পাশে মশারির ভিতর ঘুমাচ্ছিল শিশুটি। সেই সময় একদল হনুমান তাকে তুলে নিয়ে পালায়। পর দিন সকালে বাড়ির পাশে একটি পাতকুয়োর মধ্যে তার মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়।
হনুমান দেখে বা শিশুটিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় কাঁদলেও তার আওয়াজ বেরোয়নি। তা-ই কেউ ঘটনার কথা টের পায়নি সঙ্গে সঙ্গে। কিছু ক্ষণ পর তার মায়ের ঘুম ভাঙে। পাশে শিশু নেই দেখে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। তত ক্ষণে শিশুটিকে নিয়ে চম্পট দিয়েছে হনুমানের দল।
আরও পড়ুন: মাথা কেটে অনুতাপ, বদলা যে নিতেই হত!
শনিবার প্রায় সারা দিনই স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ, দমকল এবং বন দফতরের কর্মীরা এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালান। কিন্তু শিশুটির কোনও খোঁজ মেলেনি। পর দিন সকালে বাড়ির পাশের একটি পাতকুয়োর মধ্যে তার দেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। বন দফতরের এক আধিকারিক সংগ্রামকেশরী মোহন্তি জানান, দফতরের প্রায় ৩০ জনের একটি দল তল্লাশি চালায়। কিন্তু, শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। উঠোন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর বোধ হয় শিশুটিকে বাড়ির পাশের পাতকুয়োয় ফেলে দিয়েছিল হনুমানগুলো। এমনটাই মত তাঁর।
এমনিতেই গোটা ওডিশা জুড়ে হনুমানের অত্যাচার বেশ প্রকট। কয়েক সপ্তাহ আগে কটকের আথাগড় ব্লকের বাসিন্দারা হনুমানের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রাস্তা অবরোধ করেন। বন দফতর হনুমানদের দূরে রাখার জন্য তখন সমস্ত কলাগাছে এক ধরনের ওষুধ দিয়েছিল। তা থেকে কিছু দিন রেহাই মিললেও বন্ধ হয়নি হনুমানদের তাণ্ডব। গত বছরের মার্চেও হনুমানের আক্রমণ থেকে বাঁচতে কেন্দ্রাপাড়া জেলার সমস্ত স্কুল এবং দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন বাসিন্দারা। ওই মাসেই অফিস থেকে ফেরার পথে রাস্তার পাশে গাছে বসে থাকা এক হনুমানের কামড়ে মৃত্যু হয় এক সরকারি কর্মচারীর। কিছুতেই যে কিছু হয়নি, তার প্রমাণ এই শিশুর মৃত্যু।