ধরা পড়েন প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাকেশ পাল। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় পুলিশ ২৪ জন এসিএস ও এপিএস কর্তাকে হাজতে ঢুকিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।
একের পর এক অভিযুক্ত অসম সিভিস সার্ভিস (এসিএস) ও অসম পুলিশ সার্ভিসের (এপিএস) জনা ২৪ অফিসার। অসম পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (এপিএসসি) টাকার বিনিময়ে নিয়োগ-চক্রের তদন্তে এই পদস্থ আমলারা শুধু অভিযুক্তই নন, তাঁদের গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশ। আপাতত তাঁরা হাজতে। যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান থেকে আমলারা হাজত বাস করছেন, শিবসাগরের সেই দন্ত–চিকিৎসক অংশুমিতা গগৈ প্রাণভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি বুঝে পুলিশ ও রাজ্য প্রশাসন আজ থেকেই তাঁর নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। বরাদ্দ হয়েছে দেহরক্ষী।
সরকারি চাকরির আশায় এপিএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাকেশ পালের অন্যতম সহযোগী, নগর পরিকল্পনা দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার নবকান্ত পাতিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন অংশুমিতাদেবী। অভিযোগ, নবকান্তবাবু চাকরির বিনিময়ে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। অংশুমিতা দেবী বিষয়টি ডিব্রগড়ের এসপিকে জানান। পুলিশ ফাঁদ পাতে। অংশুমিতার হাত থেকে ১০ লক্ষ টাকা নেওয়ার সময় নবকান্তকে পুলিশ হাতেনাতে ধরেন। আর সেই সূত্রে ধরেই ডিব্রুগড় পুলিশ একে একে এপিএসসির নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে জড়িত কর্তাদের ধরতে থাকে। ধরা পড়েন প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাকেশ পাল। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় পুলিশ ২৪ জন এসিএস ও এপিএস কর্তাকে হাজতে ঢুকিয়েছেন। খোঁজা হচ্ছে আরও চার জনকে।
আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছিলেন অংশুমিতাদেবী। তাঁর স্বামী প্রয়াত। শিবসাগরে একটি দাঁতের ক্লিনিক চালান অংশুমিতাদেবী। শিবসাগর পুলিশের তরফে আজ থেকে তাঁকে দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তে ধৃত গীতালি দোলের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন কংগ্রেসী প্রতিমন্ত্রী সুমিত্রা দোলে পাতির। বর্তমানে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সুমিত্রাদেবীর ভাই অশ্বিনী দোলে এসিএস, ভাইয়ের স্ত্রী শিবানী দোলে রেঞ্জার, সুমিত্রা দেবীর বড় ছেলে কারপুন পাতির ও তাঁর স্ত্রী মীনাক্ষী পারমে পাতির, ছোট ছেলে জহর পাতির সকলেই এসিএস। এ নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ধেমাজির এই প্রাক্তন বিধায়ক সুমিত্রাদেবী বলেন, “আমার সাহায্যে নয়, আমার স্বজনরা মেধার জোরেই এসিএস হয়েছেন। এখন ইউপিএসসি পরীক্ষারও প্রস্তুতি নিচ্ছে ওরা। আমি কাউকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি না।’’ এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ছেড়ে তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে সুমিত্রাদেবীর বক্তব্য, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ সভাপতির অনুরোধেই দলবদল করেছি।”