কল্পকাহিনি নয়। বাস্তবের চরিত্র মেইগো মার্ক। কিন্তু তাঁর ভ্রমণ-কাহিনির জেরে ইতিমধ্যেই প্রায় কিংম্বদন্তী এস্টোনিয়ার ২৬ বছরের যুবক। হেঁটে বিশ্বভ্রমণ শুরু করেছেন তিনি। সম্প্রতি হাজির হন গুয়াহাটিতে। যান শিলংয়েও। মার্ক চাইছেন, হেঁটে গোটা নিরক্ষরেখা, অর্থাৎ ৪০ হাজার ৭৫ কিলোমিটার দুরত্ব পার করতে।
এস্টোনিয়ার রাজধানী তালিনের আলাকোলা এলাকার বাসিন্দা মেইগো বছর দু’য়েক আগে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ৮ হাজার ৯২০ কিলোমিটার রাস্তা পার হয়ে তিনি গুয়াহাটিতে পৌঁছেও তরতাজা, হাসিখুশি। বেড়ানোর নেশাতেই এ পথে এগিয়েছেন মেইগো। ছোট থেকেই তিনি ভ্রমণপাগল। কৈশোরেই বাস-ট্রাকে ইউরোপ, আমেরিকা, আরিজোনা মরুভূমি ঘুরে ফেলেছিলেন। ২০১৪ সালে তাঁর মনে হয়, হেঁটে মাটির আরও কাছাকাছি হয়ে দেশ ঘুরলে কেমন হয়। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। তিনি জানান, তাঁর ঘোরার পিছনে কোনও মহৎ উদ্দেশ্য নেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এক জন স্বার্থপর ভবঘুরে। দেশভ্রমণের মধ্যে দিয়ে নিজেকে চিনতে চাই। নতুন মানুষ চিনতে চাই।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার পরিকল্পনা ৯ বছরে ৪৫টি দেশ ঘুরে একটি বই লিখব। এর মধ্যেই আমি ১৩০টি পরিবারের সঙ্গে থেকেছি।’’ কিন্তু এই সফরে টাকা আসছে কোথা থেকে? মেইগো জানান, তিনি সুরকার। জমানো টাকা পর্যাপ্ত না থাকায় তালিনের বাড়িটি বন্ধক রেখেছেন। খুলেছেন নিজের ব্লগ। সেখানে সকলকে সাহায্যের জন্য আবেদনও জানিয়েছেন।
মেইগোর রাকস্যাকে খাওয়ার জন্য শুধু থাকে বাদাম, জুস, ফল। ইউরোপের ১১টি দেশের ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার রাস্তা পার করে তিনি তুরস্ক ও ইরান আসেন। সেখান থেকে ভারত হয়ে নেপাল-ভুটান। গুয়াহাটিতে ডিজিপি মুকেশ সহায় তাঁরে সম্বর্ধনা জানান। গুয়াহাটি থেকে মেঘালয়, শিলচর হয়ে তিনি মণিপুর যাবেন। সেখান থেকে ঢুকবেন মায়ানমারে। যাবেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। কোরিয়া, জাপানে যাবেন জাহাজে। জাপন থেকে চক্র শেষ করতে যাত্রা শুরু হবে কানাডা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা হয়ে ফের ইউরোপের উদ্দেশে। পাকিস্তানে যাওয়া হয়নি। নিরাপত্তার ভয়ে তাঁর পরিবার মেইগোকে সে দেশে যেতে নিষেধ করেছিল।