26/11

২৬/১১-র চক্রী রাণাকে ভারতের হাতে তুলে দিতে পারে আমেরিকা

২৬/১১ মুম্বই হামলার আর এক ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলির ঘনিষ্ঠ তাহায়ুর হুসেন রাণা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:৪৮
Share:

তাজ হোটেলে হামলা, ইনসেটে তাহায়ুর হুসেন রাণা।—ফাইল চিত্র।

পূর্ণ সহায়তা করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। সব কিছু ঠিক থাকলে, খুব শীঘ্র ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহায়ুর হুসেন রাণাকে হাতে পাবে ভারত।এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় জেল খাটছে সে। সেখানে তার হাজতবাসের মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে। তার পর ভারতের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।

Advertisement

গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মার্কিন সরকারের এক প্রতিনিধি পিটিআইকে জানিয়েছেন, “এখানে হাজতবাসের মেয়াদ শেষ হোক আগে। তার পর রাণাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে।ভারত এবং আমাদের তরফে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে উদ্দেশ্য সফল হয়।”তবে দুই দেশেই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। তাই প্রত্যর্পণ নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চায় না দিল্লি ও ওয়াশিংটন।

২৬/১১ মুম্বই হামলার আর এক ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলির ঘনিষ্ঠ তাহায়ুর হুসেন রাণা। মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত কার্টুন ছাপায় ২০০৮ সালে ডেনমার্কের একটি সংবাদপত্রের অফিসে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে দু’জনকে গ্রেফতার করে মার্কিন পুলিশ। সেই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন মুম্বই হামলার সঙ্গে রাণার সংযোগ ধরা পড়ে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কর্নাটকে ফের রাজনৈতিক টানাপড়েন! জল্পনার মধ্যেই মুম্বইয়ের হোটেলে তিন কংগ্রেস বিধায়ক​

জানা যায়, হেডলির সঙ্গে মিলে মুম্বইয়ে একটি ভুয়ো অভিবাসন দফতর খুলেছিল সে। মানুষকে কানাডা ও আমেরিকার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার আড়ালে হামলার ছক কষছিল তারা। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানায়, শুধু হেডলি নয়, হামলার আগে মুম্বই ঘুরে গিয়েছিল রাণাও। তাজ হোটেলেই উঠেছিল সে। রাণা যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে। উল্টে দাবি করে, ভিসার কাজেই মুম্বইয়ে পা রেখেছিল সে। তাও সস্ত্রীক। ইচ্ছাকৃতভাবে হেডলি তাকে ফাঁসাচ্ছে বলেও দাবি করে রাণার পরিবার।

২০১১ সালে তাহায়ুর হুসেন রাণার বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবাকে তথ্য জোগানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তবে ২৬/১১ মামলায় তাকে নিষ্কৃতি দেয় মার্কিন ফৌজদারি আদালত। ২০১৩ সালে ১৪ বছরের জেল হয় তার। তবে যে হেতু আগে থেকেই সে জেলবন্দি ছিল, তাই ২০২১ সালেই সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার আগেই মার্কিন সরকারের সঙ্গে মিলে প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে ফেলতে চায় ভারত সরকার।

সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সম্প্রতি মার্কিন সফরে যায় ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-এর একটি দল। মার্কিন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁদের। রাণার হাজতবাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কাগজপত্র সংক্রান্ত সব ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সেখানে।

আরও পড়ুন: লাইন দিয়ে কুকুর খুন, ভয়ঙ্কর অত্যাচারের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল

মার্কিন মার্কিন বিচার ব্যবস্থা অনুযায়ী, যে অপরাধে আগেই সাজা হয়ে গিয়েছে, দ্বিতীয়বার তার জন্য কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। তাই শুধুমাত্র ২৬/১১ এবং ভুয়ো অভিবাসন দফতর সংক্রান্ত জালিয়াতি মামলা নিয়েই রাণার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে চান ভারতীয় গোয়েন্দারা। এ ছাড়াও দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স সেন্টার ও দেশের বিভিন্ন শহরে ইহুদিদের ধর্মীয় সংস্থায় হামলার চালানোর ছক কষছিল বলে রাণার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। খতিয়ে দেখা হবে সেগুলিও।

এই মুহূর্তে ‘শাটডাউন’ চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তাই তাহায়ুর হুসেন রাণার প্রত্যর্পণ কবে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি মার্কিন বিদেশ দফতর ও বিচার বিভাগ। ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস এমনকি রাণার আইনজীবীও মুখ খুলতে রাজি হননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন