বিপর্যস্ত: তখনও চলছে উদ্ধারকাজ। সোমবার হিমাচলপ্রদেশের কাঙ্গড়া জেলার নুরপুরে। ছবি: পিটিআই
গভীর খাদে স্কুলবাস পড়ে মৃত্যু হল ৩০ জনের। মৃতদের মধ্যে ২৭ জনই স্কুলপডুয়া বলে জানিয়েছেন হিমাচল প্রদেশের পরিবহণমন্ত্রী গোবিন্দ সিংহ ঠাকুর। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার নুরপুরে। বাসটিতে থাকা মৃত পড়ুয়াদের বয়স ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মৃত ছাত্রছাত্রীরা নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। বাসের ৬৭ বছর বয়সি ড্রাইভার মদনলাল এবং স্কুলের দু’জন শিক্ষিকারও দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার ক্লাস শেষ হওয়ার পরে স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল বাসটি। মকওয়াল অঞ্চলের একটি পাহাড়ি বাঁকের কাছে হঠাৎই চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মুহূর্তে বাসটি রাস্তা থেকে পিছলে প্রায় ১৫০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। রাস্তা থেকে গড়িয়ে পড়ে খাদের মাঝামাঝি আটকে যায় বাসটি। দুর্ঘটনাটি ঘটতেই স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারের কাজে নেমে পড়েন। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি থেকে বার করে আনা হয় একের পর এক শিশুর মৃতদেহ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারীরা।
ওয়াজ়ির রাম সিংহ পাঠানিয়া মেমোরিয়াল পাবলিক স্কুলের ওই বাসটিতে মোট ৪২টি আসন ছিল বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাসটিতে সব মিলিয়ে ৪০ জন সওয়ারি থাকার কথা বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছেন পুলিশ সুপার সন্তোষ পাটিয়াল।
আরও পড়ুন: ভারত বন্ধ ঘিরে সতর্কতা
বাসটি আদৌ চালানোর মতো অবস্থায় ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আর কী-কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উদ্ধার: জখম পড়ুয়াদের নিয়ে হাসপাতালের পথে স্থানীয়রা। সোমবার নুরপুরে। ছবি: এএফপি
প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিলেন। পরে আরও দশটি দেহ উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনার কিছু ক্ষণ পরেই কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কয়েক জন আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কাংড়া ডক্টর আরপিজেএমসি হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মোট ৫০ জনের একটি দলকে ঘটনাস্থলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে হিমাচল প্রদেশ সরকার। আহত কয়েক জনকে পঞ্জাবের পঠানকোটের হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে।
এত জন শিশুর মৃত্যুতে দেশ জুড়ে শোকের ছায়া। টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও শোক প্রকাশ করে টুইটারে বার্তা দিয়েছেন। এই দুঃসময়ে মৃত ও আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর। দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে ঘোষণা করেছেন তিনি।