আগে আমাদের বলল না, গোটা দুনিয়া জেনে গেল!

লোকসভায় সুষমা বলেছিলেন, ‘‘প্রমাণ ছাড়া কাউকে মৃত ঘোষণা করা পাপ। আমি সেই পাপ করতে পারব না।’’ সে সময় অভিযোগ উঠেছিল, ইরাকে আইএসের হাতে অপহৃত ভারতীয়দের অবস্থা নিয়ে তিনি ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৫:০৭
Share:

শোকার্ত: ইরাক থেকে স্বজন আর ফিরবেন না। খবর পৌঁছতেই জালন্ধরের বাড়িতে কান্নার রোল। পিটিআই

টিভিতে খবরটা শুনেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না গুরপিন্দ্র কৌর। ইরাকে অপহৃত ভারতীয়দের মধ্যে ছিলেন তাঁর ভাই মনজিন্দ্র সিংহ।

Advertisement

আজ খবরটা জানার পরে গুরপিন্দ্র বলেন, ‘‘টিভিতে দেখে জানলাম। আমাকে সবাই বলত, ওই ৩৯ জন বেঁচে আছে। আর এত বড় খবরটা আজ আমাদের আলাদা করে না জানিয়ে গোটা বিশ্বকে বলে দেওয়া হল? টিভিতে খবর দেওযার পরে দু’ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। অথচ আমাদের কেউ একবার ফোনও করেনি।’’ শোকার্ত গুরপিন্দ্র বলে যান, ‘‘গত চার বছর ধরে মন্ত্রী বলে গেলেন, ওরা বেঁচে আছে। এখন কোনটা বিশ্বাস করব, বুঝতে পারছি না।’’ স্বজনহারাদের আগে খবর না দিয়ে সংসদে কেন মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ? বিতর্কের মুখে পড়ে সুষমা বলেন, ‘‘আগে সংসদকে জানানোটাই আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।’’

গত বছর জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, জোরালো প্রমাণ না পেলে ধরে নেওয়া হবে ভারতীয়রা বেঁচে আছেন। লোকসভায় সুষমা বলেছিলেন, ‘‘প্রমাণ ছাড়া কাউকে মৃত ঘোষণা করা পাপ। আমি সেই পাপ করতে পারব না।’’ সে সময় অভিযোগ উঠেছিল, ইরাকে আইএসের হাতে অপহৃত ভারতীয়দের অবস্থা নিয়ে তিনি ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। এ দিন গুরপিন্দ্রের প্রশ্ন, ‘‘গত নভেম্বরে আমাদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে গেল। ওরা যদি দেহ উদ্ধার করে থাকে, আগে বলল না কেন?’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ছেলেটাকে কেন যে জোর করে পাঠালাম

একই অবস্থা চণ্ডীগড়ের গোবিন্দ্র সিংহের পরিবারের। কাপুরতলা জেলার মুরার গ্রামে ওই বাড়ির সবার আশা ছিল, গেট ঠেলে এক দিন ঘরে ঢুকবেন গোবিন্দ্র। অপেক্ষায় ছিল ১৯ বছরের মেয়ে আর ১৭ বছরের ছেলে। গোবিন্দ্রর ভাই দেবেন্দ্র বলছেন, ‘‘টাকা রোজগার করতে ও ইরাকে গেল ২০১৪ সালে। ওর স্বপ্ন ছিল, ছেলে আমনদীপ ইঞ্জিনিয়ার হবে।’’ আগে চণ্ডীগড়েরই একটি কারখানায় কাজ করতেন গোবিন্দ্র। আজ টিভিতে খবর জানার পরে সব আশা শেষ দেবেন্দ্রদের।

দেবেন্দ্র বলেছেন, ‘‘আমনদীপকে সরকারি চাকরি দেওয়া হোক। নইলে পরিবার চলবে না।’’ আমনদীপ এখন ছোট কারখানায় কাজ করে।

সুষমা স্বরাজের সঙ্গে অন্তত ১২ বার দেখা করেছে গোবিন্দ্রর পরিবার। বারবারই আশ্বাস মিলেছে, গোবিন্দ্র বেঁচে আছেন। দেবেন্দ্র বলছেন, ‘‘কী ভাবে জানব, হরজিত মাসিহ যা বলেছে, সেটাই সত্যি!’’ পঞ্জাবের অমৃতসর, গুরদাসপুর, হোশিয়ারপুর, কাপুরতলা ও জালন্ধরের আরও শ্রমিক ছিলেন ৩৯ জনের ওই দলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন