খুঁটির গণধর্ষণে অভিযুক্তেরা অধরাই

খুঁটির পুলিশ সুপার অশ্বিনী সিংহ জানান, ধর্ষিতাদের মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিয়ো রেকর্ড করার পরে মেমোরি কার্ড খুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও ভাবে এক জনের মোবাইলের ‘মেমোরি’-তে তা সেভ হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাঁচ জন সদস্যকে গণধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পরেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে শুক্রবার এক অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। ঘোষণা করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকার পুরস্কারও।

Advertisement

গত মঙ্গলবার খুঁটি জেলার ওচাং গ্রামে একটি স্কুল চত্বর থেকে ওই পাঁচ তরুণী এবং তাঁদের ৬ পুরুষ সহকর্মীকে বন্দুক দেখিয়ে তুলে নিয়ে যায় জনা ছয়েক দুষ্কৃতী। কয়েক ঘণ্টা পরে তাঁরা ছাড়া পেয়ে ফিরে এসে জানান, মেয়েদের প্রত্যেককে ধর্ষণ করা হয়েছে। পুরুষদের নিজেদের প্রস্রাব খেতে বাধ্য করা হয়েছে। মোবাইলে সেই ছবিও তুলে রেখেছে দুষ্কৃতীরা। বুধবার খুঁটি থানা এবং খুঁটি মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।

খুঁটির পুলিশ সুপার অশ্বিনী সিংহ জানান, ধর্ষিতাদের মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিয়ো রেকর্ড করার পরে মেমোরি কার্ড খুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও ভাবে এক জনের মোবাইলের ‘মেমোরি’-তে তা সেভ হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকেই ওই অভিযুক্তের ছবি মিলেছে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্তা, দুই নার্স এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলের দুই শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাঁরা প্রত্যেকেই ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ওই স্কুলের বাইরে নারী পাচার বিরোধী সচেতনতা বাড়াতে একটি পথনাটিকার আয়োজন করেছিল সংস্থাটি। বেলা ১২টা নাগাদ দু’টি মোটরবাইক এবং একটি গাড়িতে চড়ে জনা ছয়েক যুবক সেখানে আসে এবং বন্দুক দেখিয়ে পাঁচ মহিলা-সহ ১১ জনকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁদের একটি জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে পুরুষদের নিগ্রহ করা হয়। এর পর তাঁদের গাড়িতে আটকে রেখে তরুণীদের ধর্ষণ করা হয়। পরে কার্যত বিবস্ত্র অবস্থায় তাঁদের এবং তাঁদের সহকর্মীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁরা ফিরে এসে গোটা ঘটনা জানান।

খুঁটি মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা। জনজাতি অধ্যুষিত ওই গ্রামটি নারী পাচারের জন্য কুখ্যাত। মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারীদের ডেরা বলেও চিহ্নিত। সম্প্রতি প্রশাসনকে উপেক্ষা করে ওই এলাকাকে কার্যত মুক্তাঞ্চল বলে ঘোষণা করে ‘পাথলগ়়ড়ি’ আন্দোলনকারী সংগঠন। এর পিছনে মাওবাদী, নারী পাচারকারী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের মদত রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। সেখানে ‘অনুমতি ছাড়া বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ’ বলে বোর্ডও টাঙানো হয়েছে। ধর্ষিতারা জানিয়েছেন, ধর্ষণের পর তাঁদের দ্রুত এলাকা ছে়ড়ে চলে যেতে বলা হয়। তাতেই এই সন্দেহ আরও দানা বেঁধেছে।

এই ঘটনার তদন্তে একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। আগামী কাল তাঁরা রাঁচী পৌঁছবেন। ঘটনাস্থলেও যাবেন কমিটির সদস্যেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন