বিক্ষোভে পুলিশের লাঠি। শুক্রবার পটনায়। ছবি: শ্যামলী দে।
ভোটের মুখে আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষে উত্তাল হল পটনা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে, তা সামাল দিতে পুলিশকে শূন্যে গুলি চালাতে হয়। যদিও গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে বিহার পুলিশ।
নিষাদ সম্প্রদায়কে তফসিলি জাতির তালিকায় সামিল করার দাবিতে এ দিন পটনার গাঁধী ময়দান এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করতেই পরিস্থিতি খারাপ হয়। শুরু হয় দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি। বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালায়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায় পুলিশ। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় পুলিশ শূন্যে ১০ রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় জখম ৫০ জন। ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশের লাঠি চালানোর নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। বিজেপিও পুলিশের সমালোচনা করেছে।
গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করে পটনার এসএসপি মনু মহারাজ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালাতে হয়েছে। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়েছে। তবে গুলি চালানো হয়নি। তার কোনও প্রশ্নই নেই।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, নিষাদ সম্প্রদায়কে তফসিলি জাতি তালিকায় সামিল করার দাবিতে আন্দোলন করছেন মুকেশ সাহানি। গুজরাতের হার্দিক পটেলের রাস্তাতে তিনিও বিহারের নিষাদ সম্প্রদায়ের জন্য আন্দোলন করছেন। মুকেশের মুম্বইয়ে সিনেমার সেট তৈরির ব্যবসা রয়েছে। তিনি রাজনীতিতে ভাগ্যপরীক্ষা করতে চাইছেন বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। কয়েক দিন ধরে পটনায় থেকে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করছিলেন মুকেশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে গাঁধী ময়দানের সভায় হাজির থাকার জন্য নিষাদ সম্প্রদায়ের মানুষদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পুলিশি ব্যবস্থাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
সকালে হাজার দশেক লোক গাঁধী ময়দান লাগোয়া রামগোলাম চকে গাঁধী মূর্তির সামনে জড়ো হন। সেখানে ভাষণের পরে মিছিল করে রাজভবনের দিকে অভিযান শুরু হয়। জয়প্রকাশ মোড়ের সামনে পুলিশ আন্দোলনকারীদের আটকায়। তারা ‘পটনা পুলিশ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিতেই পুলিশকর্মীরা তেড়ে যান। শুরু হয় লাঠিচার্জ। আন্দোলনকারীরাও ইট ছোড়েন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পুলিশ গুলি চালায়। পিছু হটেন বিক্ষোভকারীরা।
২৮ অগস্ট পটনা শহরের গর্দানিবাগে মাদ্রাসা শিক্ষকদের উপরে লাঠি চালায় পুলিশ। তার জেরে বদলি হন জেলাশাসক এবং এসএসপিকে। এ দিনের ঘটনা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশ-প্রশাসন মহলে উদ্বেগ রয়েছে।