৩০ ডিসেম্বর মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও শিলচরে পুরনো ৫০০, ১ হাজার টাকার নোট বদল চলছে চোরাপথে— আজ তার প্রমাণ মিলল। পুলিশ-সিআরপির যৌথ অভিযানে নোট বদল চক্রের ৭ জনকে গ্রেফতার করা হল। বাজেয়াপ্ত হল পুরনো ২ লক্ষ ২১ হাজার টাকার নোট।
কাছাড়ের পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন জানিয়েছেন, গত সোমবার শিলচরের এক হোটেলে ওঠে মিজোরামের তিন মহিলা— লিয়ান খোমেই, লালফাক জুয়ালি ও সি মিংথাঙ্গি। তিন জনেরই বাড়ি আইজল। গোয়েন্দা সূত্রে সিআরপি তাদের সঙ্গে প্রচুর বাতিল নোট থাকার কথা জানতে পারে। তা ২ কোটি টাকা বলে খবর গিয়েছিল সিআরপি-র কাছে। সেই সময় থেকে হোটেলে নজরদারি চলছিল। জানা যায়, কাছাড় জেলার ভাগাবাজারের সেবুল হোসেন লস্কর ও শরিফুদ্দিন লস্কর ঘনঘন হোটেলে আসা-যাওয়া করছে। পরে যোগ হয় শিলচর শহরের আশ্রম রোডের রঞ্জন পাল ও মালুগ্রামের বলবীর সিংহ।
আর দেরি করা ঠিক নয় ভেবে আজ দুপুরে পুলিশ-সিআরপি হোটেলে তল্লাশি চালায়। সেই সময় ঘরে ছিল জুয়ালি ও মিথাঙ্গি। লিয়ান খোমেই বেরিয়েছিল এক বান্ডিল বাতিল নোট নিয়ে। পরে তাকেও খুঁজে বের করা হয়। হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ২ লক্ষ ২১ হাজার টাকার বাতিল নোট। ১ হাজার টাকার ১৮৩টি নোট ও ৫০০ টাকার ৭৬টি। তিন মহিলাকে হোটেলে বসিয়ে রেখে দালালদের গ্রেফতারের ছক কষে পুলিশ। ধৃত মহিলাদের দিয়ে ফোন করিয়ে ডেকে আনা হয় দালালদের। একে একে চার জন। পরে ৭ জনকেই গ্রেফতার করা হয়।
রাকেশবাবু জানিয়েছেন, আয়কর-সহ অন্য বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারাও জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি আসার আগে এই ব্যাপারে আর কিছু জানাতে রাজি নন পুলিশ সুপার। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্তা জানান, কোন ব্যাঙ্কে দু’দিন ধরে নোট বদল হচ্ছিল, তা তাঁরা জেনে গিয়েছেন। ওই ব্যাঙ্ককর্তাকেও একইসঙ্গে ডেকে পাঠানো হবে। তারা কয়েক জনের গতিবিধির উপর নজর রাখছেন। আরও অনেককে এই মামলায় গ্রেফতার করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে দুয়েকজন ‘রাঘব-বোয়াল’ও জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা। ওই পুলিশকর্তা আরও জানিয়েছেন, আজ লিয়ান খোমেই ৬ লক্ষ টাকা বদল করেছে। তবে ধৃতদের কাছে এখনও তেমন কোনও নতুন টাকা পাওয়া যায়নি। ফলে নোট বদলের শর্তগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দালালদের সঙ্গে ৫০ শতাংশ হারে চুক্তি হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। অর্ধেক টাকা মিজো মহিলারা নিয়ে যাবেন। বাকিটা বিভিন্ন জায়গায় ভাগ হবে।