ইনার লাইন পারমিট চালু সংক্রান্ত আইনের সঙ্গে ভূমি ও রাজস্ব সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী পাশ হওয়ার পর অগ্নিগর্ভ মণিপুরের কুকি এলাকাগুলি। লড়াই বেধেছে দু’পক্ষে। সরকারি হিসেবে, আজ সন্ধে পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা অন্তত ৮ জন। তার মধ্যে সাত বছরের এক শিশুও রয়েছে।
গত কাল মণিপুর বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে ‘প্রোটেকশন অব মণিপুর পিপল বিল, ২০১৫’-এর পাশাপাশি ‘মণিপুর ল্যান্ড রেভেনিউ অ্যান্ড ল্যান্ড রিফর্মস অ্যাক্ট’ ও ‘মণিপুর শপ অ্যান্ড এসটাবলিসমেন্ট অ্যাক্ট’-এর সংশোধনী পাশ হয়। সে সব এখন রাজ্যপালের সম্মতির অপেক্ষায়। ওই সংশোধনীতে ভূমিপুত্রের ভিত্তিবর্ষ ও মেইতেইদের জমি কেনা নিয়ে আপত্তি তোলে মণিপুরের কুকি ও নাগারা। এমনিতেই মণিপুরের কুকিরা পৃথক রাজ্যের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালাচ্ছেন। সংঘর্ষবিরতিতে থাকা কুকি জঙ্গিরাও শান্তি আলোচনার প্রধান শর্তই কুকি এলাকার স্বশাসন।
মণিপুরের নাগা ও কুকিরা পার্বত্য উপজাতি। কিন্তু সংখ্যাগুরু সমতলের মেইতেইরা সাধারণ তালিকাভুক্ত ছিলেন। উপজাতি এলাকায় তাঁরা জমি কিনতে পারতেন না। নতুন সংশোধনীতে ১৯৫১ সালের পর রাজ্যে আসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জমি কেনায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হল। মেইতেইদের জমি কেনার অধিকার অবাধ করা হল। তা নিয়েও কুকিরা বেজায় ক্ষিপ্ত। আইন সংশোধন ও নতুন আইন প্রণয়নের বিরুদ্ধে তাঁরা গত কালই বন্ধ ডেকেছিলেন। আইন পাশ হওয়ার খবর ছড়ানোর পর গত কাল রাত ৮টা থেকে কুকি অধ্যূষিত চূড়াচাঁদপুর জেলায় ৫ কুকি বিধায়ক ও কুকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফুংজাথাং টংসিং-এর বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। আগুনে পুড়ে এক জনের মৃত্যু হয়। জেলাশাসক ঘটনাস্থলে যেতে গেলে তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। দমকলের গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিরাট পুলিশ ও আধা সেনা বাহিনী এলাকায় পৌঁছয়। শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। পরিস্থিতি সামলাতে জারি করা হয় কার্ফু। তাতে কয়েক জনের মৃত্যু হয়।
আজ সকাল থেকে ফের দফায়-দফায় সংঘর্ষ হয় মণিপুরে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, লাঠি ও কাঁদানে গ্যাসে কাজ না হওয়ায় পুলিশ গুলি চালায়। তাতে অন্তত ২ জন মারা যান। জখমের সংখ্যা প্রায় ২০ জন। রাতেও সংঘর্ষ চলছে।