—প্রতীকী চিত্র।
ছোট্ট একটি ঘুপচি ঘর। সূর্যের আলো বড় একটা ঢোকে না সেখানে। তার মধ্যেই ২০ বছর বন্দি হয়ে ছিলেন তিনি। খাবারটুকু পৌঁছে দিতেও সে ঘরের দরজা খোলা হয় না বছরের পর বছর। খাবার থেকে পানীয় জল— সবই দেওয়া হত খুপরির মতো ছোট্ট একটি জানলা দিয়ে।
মানসিক ভাবে সুস্থ নন। এটাই তাঁর ‘অপরাধ’। সেই কারণে নিজের বাবা-মায়ের হাতেই অন্ধকার ছোট্ট একটি ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে হল টানা ২০ বছর। বুধবার ওই পরিবারের চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ার কান্দোলিম গ্রামে। এখানকার একটি বাড়ি থেকে সম্প্রতি বছর পঞ্চাশের ওই প্রৌঢ়াকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। ওই যুবতীর বিষয়ে প্রথম জানতে পারে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এক মহিলা কোনও ভাবে ওই প্রৌঢ়ার কথা জানতে পেরে ই-মেলের মাধ্যমে তা জানিয়েছিলেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। তাঁকে উদ্ধারের আবেদনও করা হয়েছিল ই-মেলটিতে। সংগঠনের তরফে এর পরেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: রান্নাঘরের আলুর ডাঁই সরাতেই বেরিয়ে এল ১৯টি গোখরো!
পুলিশের এক পদস্থ অফিসার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ওই প্রৌঢ়ার দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীরা এবং বাবা-মা তাঁকে অন্ধকার ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন। এমনকী, খাবার ও জল দেওয়ার জন্যও কখনও ঘরের দরজা খোলা হত না।
মহিলা পুলিশের একটি দল অতর্কিতেই অভিযান চালায় ওই বাড়িটিতে। পুলিশ যখন দরজা ভেঙে ওই প্রৌঢ়াকে উদ্ধার করেন তখন তিনি নগ্ন অবস্থায় ছিলেন। প্রথমে নাকি ওই মহিলা ঘর থেকে বেরতেও চাইছিলেন না বলে জানায় পুলিশ।
পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়, মুম্বইয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ওই প্রৌঢ়ার। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক থাকায় বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই বাপের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন তিনি। এর পর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। এই কারণেই অন্ধকার ঘরে তাঁকে বন্দি করে রাখা হত বলে জানায় প্রৌঢ়ার পরিবার।
ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ সুপার কার্তিক কাশ্যপ জানান, প্রাথমিক তদন্তের পর প্রৌঢ়ার দুই ভাই ও স্ত্রীদের গ্রফতার করে পুলিশ।
উদ্ধার করার পর চিকিৎসার জন্য ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠান হয়।