সীমান্তে বাড়ছে সেনা, আস্থা ‘ট্র্যাক টু’ দৌত্যেও

চিনের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলাতে এক দিকে আলোচনার উদ্যোগ, আবার একই সঙ্গে চিনা সেনাকে ঠেকাতে সব রকমের প্রস্তুতি। এখন এই কৌশল নিয়েই এগোচ্ছে নয়াদিল্লি। সিকিমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা সতেরো দিন মুখোমুখি ভারত এবং চিনের সেনা।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে একটি সংক্ষিপ্ত পার্শ্ববৈঠক হতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের। ছবি: সংগৃহীত।

নরমে-গরমে।

Advertisement

চিনের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলাতে এক দিকে আলোচনার উদ্যোগ, আবার একই সঙ্গে চিনা সেনাকে ঠেকাতে সব রকমের প্রস্তুতি। এখন এই কৌশল নিয়েই এগোচ্ছে নয়াদিল্লি। সিকিমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা সতেরো দিন মুখোমুখি ভারত এবং চিনের সেনা। এই এলাকায় নিজেদের জমি শক্ত করতে সেনা জমায়েত বাড়িয়েছে ভারত। তা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি বুঝতে পারছে, বেজিংয়ের সঙ্গে সংঘাত বাড়িয়ে লাভ নেই। তাই পরিস্থিতি প্রশমিত করার ভাবনাও শুরু হয়েছে।

বেজিং-এর সঙ্গে ইতিমধ্যেই ‘ট্র্যাক টু’ আলোচনা শুরু হয়েছে। ৭ জুলাই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে হামবুর্গ যাবেন নরেন্দ্র মোদী। থাকবেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-ও। একটি সংক্ষিপ্ত পার্শ্ববৈঠক হতে পারে দু’জনের। কথা হতে পারে ডোকা লা নিয়ে। এ ছাড়া, সেপ্টেম্বরে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে চিন যাচ্ছেন মোদী। তার আগে অজিত ডোভালের বেজিং যাওয়ার কথা।

Advertisement

এই প্রেক্ষাপটে চিন আজ কিছুটা সুর নরম করে বলেছে, অনর্থক চিন-ভীতি ভারতের নিজের স্বার্থকেই আঘাত করবে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত্রুতা না করে দুই দেশের উচিত সহযোগিতার পথে হাঁটা।

আরও পড়ুন:দিল্লির নজর এখন চিনের বস্ত্র বাজারে

চিনের সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে যাওয়া যে সঠিক রণনীতি নয়, সে কথা মনে করেন শ্যাম সরণ, শিবশঙ্কর মেননের মতো কূটনীতিকরা। তাঁদের মতে, চিনের মতো শক্তিশালী দেশের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলাই বাস্তববুদ্ধির কাজ। তাতে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির সমীহ আদায় করা সম্ভব। সংঘাতের রাস্তায় গেলে ভারতের আমেরিকা-নির্ভরতা বাড়বে।

দেরিতে হলেও তাই বোধোদয় ঘটেছে মোদী সরকারের। সুধীন্দ্র কুলকার্নিকে চিনা নেতৃত্বের সঙ্গে ‘ট্র্যাক টু’ দৌত্য করতে পাঠানো হয়েছে। অবশ্য চিন সম্পর্কে একটি প্রশ্নও দানা বাঁধছে। তা হল, সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে, চিনের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার সঙ্গে চিনা সেনার আগ্রাসী ভূমিকার কোনও সম্পর্ক থাকছে না। ২০১৪ সালে শি চিনফিং-র সঙ্গে মোদীর দ়োলনায় দোলার ঠিক পরেই লাদাখের চুমার এলাকা দিয়ে ঢুকে পড়েছিল চিনা সেনা। আর গত মাসে আস্থানায় চিনফিংকে মোদী যখন সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বলছেন, তার পরেই ভারতে ঢুকে বাঙ্কার ভেঙেছে চিনা সেনা। সে জন্যই এখন নরমে-গরমে চলতে চায় দিল্লি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন