রুপোলি পর্দায় ফুটবে অসম বিস্ফোরণে পঙ্গু তরুণের গল্প

ছবি মুক্তির আগেই চর্চার কেন্দ্রে ছিল সিনেমাটি। ২০০৮ সালের ধারাবাহিক বিস্ফোরণে প্রতিবন্ধী যুবকের শরীরের আকাঙ্খা মেটানোর তৃষ্ণা, অন্য দিকে অসমীয়া ছবিতে প্রথম চুম্বনদৃশ্য— এই দু’য়ের মিশেল নিয়েই মুক্তি পেল কঙ্কন ডেকার ছবি ‘বিউটিফুল লাইভস’। ছবির পোস্টারে লেখা— যৌনতা শুধু ব্যাভিচারিতা নয়, এ এক প্রয়োজনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৫
Share:

ছবি মুক্তির আগেই চর্চার কেন্দ্রে ছিল সিনেমাটি। ২০০৮ সালের ধারাবাহিক বিস্ফোরণে প্রতিবন্ধী যুবকের শরীরের আকাঙ্খা মেটানোর তৃষ্ণা, অন্য দিকে অসমীয়া ছবিতে প্রথম চুম্বনদৃশ্য— এই দু’য়ের মিশেল নিয়েই মুক্তি পেল কঙ্কন ডেকার ছবি ‘বিউটিফুল লাইভস’। ছবির পোস্টারে লেখা— যৌনতা শুধু ব্যাভিচারিতা নয়, এ এক প্রয়োজনও।

Advertisement

বলিউডি সিনেমার ধাক্কায় ‘সাকিরা আহিব বকুলতলার বিহুলৈ’ ছবিটি এক সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে দিয়েছিল বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ। তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় রাজ্যজুড়ে। তা নিয়ে আলফা নেতা পরেশ বরুয়াকে ফেসবুকে খোলা চিঠি লেখেন পরিচালক হিমাংশুপ্রসাদ দাস। তার জেরে এখন তাঁকে নিয়মিত থানায় হাজিরা দিতে হচ্ছে। এ বারের রাজ্য বাজেটে ঘোষণা করা হয়, অসমের কোনও মাল্টিপ্লেক্স একটি পর্দায় অসমীয়া ছবি দেখাতে থাকলে মিলবে ৫০ শতাংশ কর ছাড়।

এমনই পরিস্থিতিতে রাজ্যের ৪৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল ‘বিউটিফুল লাইভস’।

Advertisement

ওই সিনেমায় দেখানো হয়েছে, ২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর গুয়াহাটির গণেশগুড়ি বিস্ফোরণে দুই পা ও একটি হাত অকেজো হয়ে যায় ২৮ বছরের অজয়ের। সুস্থ হয়ে উঠলেও তার জীবন বদলে যায়। হুইল-চেয়ারে বন্দি থাকলেও তাঁর যৌন আকাঙ্খা মাথাচাড়া দিতে থাকে। কিন্তু সঙ্গ দেয় না শরীর। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-সহ একাধিক উৎসবে প্রশংসিত হয় ছবিটি।

ছবির নায়িকা জুরি দত্ত অবশ্য ওই চুম্বনদৃশ্য নিয়ে নিয়ে মামলা ঠুকেছেন। তাঁর দাবি, পরিচালক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ছবিটি শুধু চলচ্চিত্র উৎসবে যাবে। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে না। মামলাটি খারিজ হয়। কার্যবাহী প্রযোজক ভাস্করজ্যোতি লেখারু জানান, অনেক অনিশ্চয়তার পর শুক্রবার মুক্তি পেল ছবিটি। আশার কথা, দর্শকদের কেউ ছবিকে কোনও অশ্লীলতা খুঁজে পাননি।

পরিচালক জানান, বিস্ফোরণের প্রাথমিক ভয়াবহতা, তদন্তের পরও অনেক গল্প অজানা থেকে যায়। এ ছবির গল্প ও চরিত্ররা কাল্পনিক। কিন্তু ঘটনা সত্য। নিউরোসার্জন নভনীল বরুয়ার কাছ থেকে এমন অনেকের কাহিনি জানতে পেরেছিলেন তিনি। তার ভিত্তিতেই লেখা চিত্রনাট্য। সিনেমা-পাগল কঙ্কনবাবু অয়েল ইন্ডিয়ার ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারের লোভনীয় চাকরি ছেড়ে, সঞ্চিত সব টাকা ঢেলে ছবিটি তৈরি করেছেন। মুম্বই জেডইই থেকে পাশ করা কঙ্কনের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ছিল বাবা ও মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে তৈরি ‘ভাঙা সপুন’। তাঁর স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘সীতা’ও কান চলচ্চিত্র উৎসব-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশংসা পেয়েছিল।

অজয়ের ভূমিকায় এনএসডির প্রাক্তনী বলরাম দাস জানান, তাঁর সামনে এমন কোনও চরিত্রের উদাহরণ ছিল না। ইন্টারনেট ঘেঁটে, বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে চরিত্রের বেদনা, হতাশা, যন্ত্রণা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। অন্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অশ্রুমণি বরা, পাকিজা বেগম, জয়ন্ত ভাগবতী, প্রগতি দেবী, প্রাণকৃষ্ণ মহন্ত। এক মাত্র গানটি গেয়েছেন জুবিন গর্গ। সাউন্ড ডিজাইন অস্কারজয়ী স্লামডগ মিলিওনিয়ার খ্যাত অমৃৎ প্রীতম দত্তের। মুম্বইয়ের এম চন্দনের ক্যামেরায় মঙ্গলদৈ, কাজিরাঙা, মাজুলি ও গুয়াহাটির প্রেক্ষাপটে জীবন্ত হয়ে উঠেছে ‘বিউটিফুল লাইভস’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন