রাজস্থানে চুরির সন্দেহে যুবককে মারধরের অভিযোগ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মাটি কাটার যন্ত্র (আর্থ মুভার)-এর সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এক তরুণকে! ওই অবস্থাতেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের বিওয়ার জেলায়। আক্রান্ত তরুণের নাম ইয়াকুব। পেশায় গাড়িচালক। ইয়াকুব সিমেন্ট এবং গাড়ি থেকে ডিজ়েল চুরি করছিলেন বলে সন্দেহ হয় গাড়ির মালিকের। স্রেফ ওই সন্দেহের বশেই তিনি ইয়াকুবকে মাটি কাটার যন্ত্র থেকে উল্টো ঝুলিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনায় ইতিমধ্যে অভিযুক্ত গাড়িমালিক তেজপাল সিংহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় রাজস্থান সরকারকে। বিজেপি শাসিত রাজস্থান সরকারের আমলের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস শিবির। ভিডিয়োটি ঘিরে বিতর্ক বৃদ্ধি পেতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস)-র ১৭০ ধারায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিওয়ারের রায়পুর থানার সাব ইনস্পেক্টর নবল কিশোর জানান, ওই ভিডিয়োয় এক তরুণকে মাটি কাটার যন্ত্র থেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গিয়েছে। ওই তরুণকে মারধর করছিলেন তেজপাল। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে তেজপাল ওই তরুণের উপর অত্যাচার করছিলেন। ইয়াকুব সিমেন্ট এবং ডিজ়েল চুরি করেছেন বলে সন্দেহ করছিলেন তেজপাল। পুলিশ সূত্রে খবর, তেজপাল একটি কারখানা চালান। তেজপালের হয়ে গাড়ি চালাতেন ইয়াকুব। প্রায় আড়াই মাস আগে সিমেন্ট বোঝাই গাড়ি নিয়ে ইয়াকুবকে জয়পুরে পাঠিয়েছিলেন তিনি।
তবে স্থানীয় থানার কর্তব্যরত আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই মারধরের ঘটনায় চালকের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অপর এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আক্রান্তের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পর রাজস্থানের বিজেপি সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রদেশ কংগ্রেস শিবির। কংগ্রেস নেতা তথা রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের প্রশ্ন, রাজস্থানে কি ‘দুষ্কৃতীরাজ’ চলছে? সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, “পুলিশ এবং প্রশাসনের মদতে এই ভয়ঙ্কর খেলা কবে বন্ধ হবে, সাধারণ মানুষ তা জানতে চাইছেন।” রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিংহ দোতাসরাও বলেছেন, “এই অমানবিক ও নিষ্ঠুর ঘটনা বিজেপির আমলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক দলে দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।”