—প্রতীকী চিত্র।
কেজি পেঁয়াজ নিলেন। কিন্তু দাম না-দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ক্রেতা। টাকা চাইতেই ঘুরে এসে আগ্নেয়াস্ত্র বার করলেন এক জন। গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা বাজার। দিনের বেলা বাজারের উপর এক দোকানদারকে খুন করে পালিয়েছিলেন ‘মানিক-জোড়।’ ঘটনার ২৫ বছর পরে তাঁদের শাস্তি ঘোষণা করল ফিরোজ়াবাদের বিশেষ তফসিলি জাতি-জনজাতি আদালত। দলিত সব্জি দোকানদারকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল দুই দোষীর।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ফিরোজ়াবাদের নাগলাবাড়ি এলাকায় একটি বাজারে এক দোকানদার এবং দুই ব্যবসায়ীর বচসা হয়েছিল। লিল্লু ওরফে রিয়াজুদ্দিন এবং কালাম নামে দু’জন রাকেশ কুমার নামে এক সব্জি ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে গুলি চলে। গুলি লেগে দোকানেই লুটিয়ে পড়েন দলিত সব্জি বিক্রেতা। অকুস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পালিয়ে যান আততায়ীরা।
খুনের তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে, ২ কেজি পেঁয়াজের দাম না মিটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন দুই খদ্দের। তাঁদের কাছ টাকা চাওয়া ‘কাল’ হয়েছিল দোকানদারের। তাঁকে খুন করেন ২২ এবং ২৩ বছরের দুই যুবক। তাঁদের সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন।
বছরের পর বছর ধর সেই মামলা চলছিল। ২০০৮ সালের ১৯ এপ্রিল পুলিশ চার্জশিট পেশ করে আদালতে। বলা হয়, ওই ঘটনায় মোট চার জন জড়িত। লিল্লু, কালাম, ইকরার এবং ববি ওরফে পারভেজ়। তাঁদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। লিল্লুর কাছ থেকে মেলে আগ্নেয়াস্ত্র। মৃতের ভাই মুকেশ কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুন-সহ তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ।
এর মধ্যে পারভেজ় এবং ইকরার নামে দুই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছে। লিল্লু এবং কালাম জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে গত বছর আবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার ২৫ বছর পর অবশেষে তাঁদের শাস্তি ঘোষণা করল আদালত।
শাস্তি মকুবের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন লিল্লু। তাঁর দাবি, গরিব পরিবারের সন্তান তিনি। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্য। তাঁকে জেলে পাঠালে পুরো পরিবার ভেসে যাবে। একই আবেদন করেছিলেন কালামও। তবে তা গ্রাহ্য করেনি আদালত। ছয় প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান এবং তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক নবনীতকুমার গিরি। একই সঙ্গে দু’জনকেই ৫০ হাজার টাকা করে জরিমা করেছেন।