শিশুর প্রাণ নিয়ে থামল ট্যাক্সিযাত্রা

পাঁচ ঘণ্টার মারণ যাত্রা। ট্যাক্সির ভিতরে দুর্ঘটনায় জখম এক শিশুকে নিয়ে উদ্বিগ্ন মা। চালক প্রাণপণে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, তিনি যেন থানা-পুলিশ না করেন! এক-একটি করে হাসপাতাল পড়ছে পথে। চালক নেমে যাচ্ছে। পরক্ষণেই ফিরে এসে বলছে, শিশুটিকে ভর্তি করতে নারাজ ওরা।

Advertisement

সংবাদসংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

প্রতীকী চিত্র

পাঁচ ঘণ্টার মারণ যাত্রা।

Advertisement

ট্যাক্সির ভিতরে দুর্ঘটনায় জখম এক শিশুকে নিয়ে উদ্বিগ্ন মা। চালক প্রাণপণে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, তিনি যেন থানা-পুলিশ না করেন! এক-একটি করে হাসপাতাল পড়ছে পথে। চালক নেমে যাচ্ছে। পরক্ষণেই ফিরে এসে বলছে, শিশুটিকে ভর্তি করতে নারাজ ওরা।

এই ভাবে পাঁচ ঘণ্টা গাড়ির মধ্যে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকেই মারা গেল চার বছরের ছেলেটা।

Advertisement

‘দিল’হীন দিল্লি! আরও এক বার এই তকমা জুড়ে গেল রাজধানীর গায়ে। যেমন গিয়েছিল নির্ভয়ার ঘটনার পরে। যেমন গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের ইসলামপুরের বাসিন্দা মহম্মদ মতিবুর দে়ড় ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থেকে মারা যাওয়ার পরে।

এ বারের ট্যাক্সিচালক অবশ্য ধরা পড়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় থানায় তার নামে অভিযোগ জানান মৃত শিশুটির বাবা-মা। তাঁদের অভিযোগ, সেদিনই দুপুর বেলা ইন্দিরা বিকাশ কলোনিতে বাড়ির বাইরে খেলছিল ছোট্ট রোহিত। চালক রাহুল ট্যাক্সি নিয়ে ‘ব্যাক’ করতে গিয়ে তাকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম হয় রোহিত। রাহুল তখন রোহিতের মা বাসন্তীদেবীকে বলে, চলুন তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যাই। মা-ও সঙ্গে সঙ্গে ছেলেকে নিয়ে উঠে বসেন ট্যাক্সিতে।

বাসন্তীর কথায়, ট্যাক্সি চলতে শুরু করতেই রাহুল বলতে থাকে, তিনি যেন ব্যাপারটি পুলিশকে না জানিয়ে মিটমাট করে নেন। বাসন্তী বলেন, ‘‘আমি মোবাইল নিয়ে যাইনি। তাই কাউকে কিছু জানাতে পারছিলাম না।’’ মাঝখানে রাহুল একটি হাসপাতালের সামনে ট্যাক্সি থামায়। মা-ছেলেকে ট্যাক্সিতে বসিয়ে রেখে হাসপাতালে ঢুকে যায়। কিছু ক্ষণ পরে বেরিয়ে এসে জানায়, হাসপাতাল ভর্তি নিতে চাইছে না। এর পরে এইমস, হিন্দু রাও-সহ আরও চারটি হাসপাতালের সামনে ট্যাক্সি নিয়ে যায় সে। কিন্তু প্রতিবারই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে একই কথা বলে। ‘‘সাড়ে পাঁচটা নাগাদ রোহিত এক বার চোখ খোলে। সেই শেষ,’’ বলেন বাসন্তী।

রোহিতের বাবা কাঠের কাজ করেন। ছ’টা নাগাদ একটি পাবলিক বুথ থেকে তাঁকে ফোনে সব জানান বাসন্তী। দু’জনে তখন ছেলেকে নিয়ে ছোটেন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যু হয়েছে রোহিতের। কান্না ভেজা গলায় বাসন্তী বলেন, আমার আরও তিন সন্তান আছে। জানতে চাইছে রোহিত কোথায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন