অলংকরন: তিয়াসা দাস
অসুস্থ ঠাকুমাকে দেখতে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের এটা এলাকার এক মহিলা। কিন্তু কত সময়ের মধ্যে সেখান থেকে ফিরতে হবে, তার নিদান আগেই দিয়ে দিয়েছিলেন ওই মহিলার স্বামী। মায়ের বাড়িতে থাকার মেয়াদ ঠিক হয়েছিল মোটে ৩০ মিনিট। কিন্তু অসুস্থ ঠাকুমার সঙ্গে দেখা করার পর বাড়ির সকলের সঙ্গে কথা বলে ফিরতে ৪০ মিনিট পেরিয়ে যায়। আর এই ১০ মিনিট দেরি হওয়ার অপরাধেই ওই মহিলার ভাইয়ের মোবাইলে ফোন করে তাঁকে তিন তালাক দেন তাঁর স্বামী!
এই খবর সামনে আসতেই চাঞ্চল্য পড়ে যায় সব মহলে। গত বছরই সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক প্রথাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছিল। তার পরেই আইনসভায় পেশ করা হয় তিন তালাক প্রতিরোধকারী বিল। গত ২৭ ডিসেম্বর লোকসভায় পেশ হওয়া তিন তালাক বিলটি আইনে পরিণত হলে তিন তালাক জামিন-অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধের তকমা পাবে। অভিযুক্ত স্বামীর জরিমানা ও তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের সাজা হবে।
সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মহিলা জানান, প্রথমে অসুস্থ ঠাকুমাকে দেখতে যাবার অনুমতিই দিচ্ছিলেন না তাঁর স্বামী। বহু অনুরোধের পর শেষে অনুমতি মেলে মাত্র ৩০ মিনিটের জন্য বাপের বাড়ি যাওয়ার। যতটা সম্ভব তাড়াতাড়িই সেখান থেকে ফেরবার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাও ১০ মিনিটের মতো দেরি হয়ে যায়। কিন্তু এই ‘অপরাধ’-এর এমন ‘শাস্তি’ জুটবে তাঁর কপালে, এমন কল্পনাতেও আসেনি তাঁর। এই ঘটনায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: রাম, কৃষ্ণ গাঁজা খেতেন না, আপনারা কেন! কুম্ভমেলায় সাধুদের কল্কে কেড়ে নিলেন রামদেব
এর সঙ্গেই তাঁর অভিযোগ, বিয়ের সময় পণের দাবিও করেছিলেন তাঁর স্বামী। কিন্তু আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় সেই দাবি পূরণ করা সম্ভব হয়নি তাঁর পরিবারের পক্ষে। এর জেরে মাঝে মাঝেই শারীরিক নির্যাতন করা হত তাঁকে। ক্রমাগত মারধরের কারণে একবার তাঁর গর্ভপাতও হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ, মোদী জমানায় আকাশচুম্বী বেকারত্বের মুখোমুখি ভারত, বলল রিপোর্ট
সরকারের সহায়তা চেয়ে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন ন্যায়-বিচার না পেলে তাঁর সামনে আত্মহত্যা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। এটার আলিগঞ্জের এরিয়া অফিসার অজয় ভাদুরিয়া বলেছেন, এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হবে এবং প্রশাসনের তরফে যাবতীয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সমস্যা সমাধানের জন্য।