Aadhaar

আধারের মাধ্যমে বিপুল সাশ্রয়, আয়ুষ্মান ভারতের মতো তিন প্রকল্প সম্ভব, দাবি জেটলির

২০১৬ সালে মোদী সরকারের নেতৃত্বে আধার বিল পাশ হয় সংসদে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:০৪
Share:

অরুণ জেটলি।—ফাইল চিত্র।

আধারের পরিকল্পনা ইউপিএ সরকারের। তবে তার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে মোদী সরকারের আমলে। দাবি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির। রবিবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তুলে ধরেছেন আধারের মাধ্যমে প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা এবং কোটি কোটি টাকা সাশ্রয়ের কথা। আধারের মাধ্যমে লেনদেনে যে টাকা সাশ্রয় হয়, তা দিয়ে তিনটি বৃহত্ প্রকল্প চালানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

অরুণ জেটলি জানান, গত ২৮ মাসে মোট ১২২ কোটি আধার নম্বর ইস্যু হয়েছে দেশে। ভারতের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশের নাম ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করা হয়েছে। আধারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলির আওতায় থাকা বিভিন্ন প্রকল্পকেও। প্রত্যক্ষ হস্তান্তরিত ও উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের আওতায় এই মুহূর্তে ২৮ কোটি ৮০ লক্ষ গ্রাহক রয়েছেন। বায়োটেকনোলজি প্রযুক্তির মাধ্যমে আধারের সঙ্গে সংযুক্ত তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকির টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। ৫৮ কোটি ২৪ লক্ষ মানুষের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তির কাজ শেষ। ১০০ দিনের কাজের জন্য আধারের মাধ্যমেই ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে টাকা ঢুকে যায় ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষের।

২০১৬ সালে মোদী সরকারের নেতৃত্বে আধার বিল পাশ হয় সংসদে। যার পর গত বছর মার্চ পর্যন্ত ৯০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা গিয়েছে বলে দাবি অরুণ জেটলির। এ ভাবে চললে সাশ্রয়ের টাকাতেই আয়ুষ্মান ভারতের মতো তিন তিনটি প্রকল্প চালানো যাবে। বিনামূল্যে চিকিত্সা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষের কাছে। তার একটি পরিকল্পনাও পেশ করেন জেটলি। তিনি জানান, আয়ুষ্মান ভারতের প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্পের আওতায় পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা পর্যান্ত স্বাস্থ্যবিমা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। তাতে উপকৃত হবেন ১০ কোটি ৭৪ লক্ষ দরিদ্র পরিবার। জেলা এবং সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলিতেও বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবেন তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মিথ্যে বলছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী’, রাফাল কাণ্ডে সীতারামনের পদত্যাগ চাইলেন রাহুল​

তিনি বলেন, আয়কর দফতরের তরফে ২১ কোটি মানুষের প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার জুড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন আধারের মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি লেনদেন হয়। বেছে বেছে ভুয়ো গ্রাহকদের আধার নম্বর বাতিল করা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই উদ্যোগকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কও। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, এ ভাবে চললে লেনদেনে আধার কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করা যাবে।

জেটলি জানিয়েছেন, আধারের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পে ৪২৫ কোটি ভর্তুকি দেয় সরকার। আর এই ভর্তুকির টাকার পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। আগে সরকারি টাকা পেতে নাজেহাল হতে হতো সাধারণ মানুষকে। বসে থাকতে হতো দালালদের ভরসায়। আবার টাকা হাতে পাওয়ার পর তাদের কমিশনও দিতে হতো। কিন্তু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার জুড়ে যাওয়ায় এখন সরাসরি অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকে যায় তাঁদের। তাতে যে টাকা সাশ্রয় হয় তা দরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজে লাগায় সরকার।

আধার পরিকল্পনা যদিও ইউপিএ সরকারের মস্তিষ্কপ্রসূত। কিন্তু তাদের কৃতিত্ব দিতে নারাজ অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, ইউপিএ আমলে আধার প্রকল্প মাথায় এসেছিল শ্রী নন্দন নিলেকানির। তবে কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। তাই লোকও ছিল না প্রকল্প পরিচালনার। তৎকালীন সরকারের মধ্যেই আধার নিয়ে দ্বিমত ছিল। অনেকেই এর বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও নাম নথিভুক্তির কাজ শুরু হয়েছিল। তবে অত্যন্ত ধীর গতিতে এগোচ্ছিল কাজের গতি। মানা হচ্ছিল না নিয়ম-কানুনও। যে কারণে ভারতীয় নাগরিক না হওয়া সত্ত্বেও আধারে নাম উঠছিল অনেকের। তাই তখন আধার নিয়ে আপত্তি তুলেছিল বিজেপি।

অরুণ জেটলির টুইট।

আরও পড়ুন: দিলীপের মমতা-স্তুতিতে স্তম্ভিত গোটা দল, তোলপাড় শুরু বিজেপিতে​

কিন্তু হাল ছাড়েননি নিলেকানি। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হন তিনি। প্রকল্প সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন। মোদী আধারের গুরুত্ব বুঝেছিলেন। তাই পুরোদমে কাজ শুরু হতে সময় লাগেনি। কিন্তু কোথায় কৃতিত্ব নেবে তা নয়, ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ তুলে সেই কাজে বাধা দিতে শুরু করে কংগ্রেস। তবে মোদী সরকার আধারের সফল বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন