মমতা-চন্দ্রদের অনুরোধই সার, ফেরালেন উপরাজ্যপাল বৈজল

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ ফেরালেন দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল। এক বার মমতার একক অনুরোধ, দ্বিতীয় বার চন্দ্রবাবু, বিজয়ন, কুমারস্বামীর সঙ্গে মমতার সম্মিলিত অনুরোধ। এই ‘প্রত্যাখ্যান’ ঘিরেই আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে নীতি আয়োগের বৈঠক উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ০৪:০৮
Share:

একজোট: আলোচনায় চার মুখ্যমন্ত্রী। (বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দোপাধ্যায়, এইচ ডি কুমারস্বামী, পিনারাই বিজয়ন এবং এন চন্দ্রবাবু নায়ডু। শনিবার নয়াদিল্লির অন্ধ্র ভবনে। ছবি: পিটিআই

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ ফেরালেন দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল। এক বার মমতার একক অনুরোধ, দ্বিতীয় বার চন্দ্রবাবু, বিজয়ন, কুমারস্বামীর সঙ্গে মমতার সম্মিলিত অনুরোধ। এই ‘প্রত্যাখ্যান’ ঘিরেই আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে নীতি আয়োগের বৈঠক উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল।

Advertisement

আমলাদের অলিখিত ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে গত প্রায় চার মাস ধরে দিল্লি সরকারের কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। বিষয়টিকে হাতিয়ার করে গত ৬ দিন ধরে উপরাজ্যপালের বাসভবনের বৈঠকখানায় ধর্নায় বসেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং তাঁর কয়েক জন মন্ত্রী। রবিবার সকালে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে চেয়ে শনিবার বিকেলেই দিল্লি পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরু থেকেই কেজরীবালের অবস্থানকে সমর্থন করেছিলেন তিনি। দিল্লি পৌঁছে ধর্নায় বসা কেজরীবালের সঙ্গে দেখা করতে তৎপর হন মমতা। সেই মতো বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ উপরাজ্যপালের দফতরে চিঠি দিয়ে অনুমতিও চান। কিন্তু তাঁকে কেজরীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি উপরাজ্যপালের দফতর। অনুমতি না মেলায় সন্ধ্যার দিকে অসুস্থ অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করতে এইমস-এ যান মমতা। সেখান থেকে ফেরার পথে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে দেখা করতে অন্ধ্রভবনে যান তিনি।

মমতা অন্ধ্রভবনে পৌঁছনোর কিছু পরে সেখানে পৌঁছন আরও দুই অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী। কর্নাটকের কুমারস্বামী এবং কেরলের পিনারাই বিজয়ন। চার মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ফের উপরাজ্যপালকে চিঠি দেন। এ বারে চিঠির বক্তব্য, কেজরীর ব্যাপারে আলোচনার জন্য উপরাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করতে চান তাঁরা। চিঠিতে সইও করেন বিজয়ন-মমতারা। কিন্তু বৈজল বাসভবনে নেই, এই যুক্তিতে সেই সাক্ষাতের অনুমতিও দেয়নি উপরাজ্যপালের দফতর।

Advertisement

পরপর দু’বার উপরাজ্যপালের দফতরের এই প্রত্যাখ্যানে ক্ষুব্ধ মমতারা। সূত্রের খবর, কাল সকালে নীতি আয়োগের বৈঠক শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের চা-চক্রে বিষয়টি তুলবেন তাঁরা। মমতা বলেন, ‘‘জেলবন্দি কোনও কয়েদিকেও তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়। কিন্তু কেজরীবালের সঙ্গে আমাদের তো বটেই, শুনেছি, তাঁর স্ত্রীকেও দেখা করতে দিচ্ছে না!’’ বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের এই তৎপরতাকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা বিজয় গয়াল বলেন, ‘‘দিল্লিতে যখন মুখ্যসচিবকে নিগ্রহ করা হয়েছিল, তখন এই মুখ্যমন্ত্রীরা কোথায় ছিলেন?’’

সব অ-বিজেপি দলকে একজোট করে ফেডারাল ফ্রন্ট গঠনের ব্যাপারে গত কয়েক মাস ধরেই তৎপর মমতা। কেজরীর ধর্নাকে উপলক্ষ করে সেই চেষ্টাই চালালেন তিনি। এবং সেই চেষ্টায় কেরলের সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের উপস্থিতি এবং মমতার সঙ্গে একই চিঠিতে সই করার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন