কোর্টের রায়ে পতনের মুখে কুমারস্বামী

ধাক্কার কারণটা নিঃসন্দেহে ২২৫ আসন (এক জন মনোনীত সদস্য) বিশিষ্ট কর্নাটক বিধানসভার সমীকরণ। গত দু’সপ্তাহে শাসক জোটের ১৬ জন সদস্য ইস্তফাপত্র দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০২:২১
Share:

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়ের পরে পতনের মুখে কর্নাটকের কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার। আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর আস্থা ভোট। তার আগে আজ বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ইস্তফা নিয়ে রায় দিতে গিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, তাঁদের ব্যাপারে স্বাধীন ভাবেই সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার। তবে আস্থা ভোটে এই বিধায়কদের জোর করে হাজির করানো চলবে না। ‘সাংবিধানিক ভারসাম্য’ রাখতেই শীর্ষ আদালত এমন নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই রায় কর্নাটকের শাসক জোটের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

ধাক্কার কারণটা নিঃসন্দেহে ২২৫ আসন (এক জন মনোনীত সদস্য) বিশিষ্ট কর্নাটক বিধানসভার সমীকরণ। গত দু’সপ্তাহে শাসক জোটের ১৬ জন সদস্য ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। তবে এ দিনই কংগ্রেস বিধায়ক রামলিঙ্গ রেড্ডি জানান, তিনি ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করে আস্থা ভোটে সরকারের পক্ষে ভোট দেবেন। দু’জন নির্দল বিধায়ক বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছেন। বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা আগামিকাল বিধানসভায় হাজির না হলে সরকার পক্ষের শক্তি ১১৮ থেকে ১০০ তে নেমে যাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক ১১৩ থেকে ১০৫-এ পৌঁছবে। বিজেপির বিধায়ক ১০৫। দু’জন নির্দল সমর্থন করলে হবে ১০৭। ফলে বিজেপির পক্ষে বিকল্প সরকার গড়ার কাজ সহজ হয়ে যাবে। কংগ্রেস ও জেডিএসের বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা মুম্বইয়ের হোটেলে। বহু চেষ্টাতেও তাঁদের পাশে টানতে পারেননি শাসক জোটের নেতারা। বিজেপি নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পার দাবি, সংখ্যা না থাকায় কুমারস্বামী হয়তো আগামিকাল ‘দারুণ বক্তৃতা দেওয়ার পরে’ ভোটাভুটিতে না গিয়ে ইস্তফা দিয়ে দেবেন। উত্তেজনার মধ্যেই কুমারস্বামী ও ইয়েদুরাপ্পা আজ ছুটেছেন মন্দিরে।

সকালেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ জানায়, বিধায়কদের ইস্তফা নিয়ে স্পিকার কখন, কী পদক্ষেপ করবেন, সেটা তাঁর ক্ষমতার মধ্যে পড়ে। কোর্টের মন্তব্য, ‘‘আদালতের কোনও নির্দেশে স্পিকারের এই ক্ষমতায় প্রতিবন্ধকতা আসা উচিত নয়। স্পিকার তাঁর সময় মতো সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন।’’ আবেদনকারী ১৫ বিধায়কের সম্পর্কে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, বিধানসভার চলতি অধিবেশনে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁদের জোর করা চলবে না। অধিবেশনে তাঁরা যোগ দেবেন কি না, সেটা তাঁদের উপর ছেড়ে দিতে হবে।

Advertisement

এর পরেই উচ্ছ্বসিত ইয়েদুরাপ্পা বলেন, ‘‘বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নৈতিক জয় হয়েছে।’’ কুমারস্বামীকে আদালতের রায় নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেও তিনি মন্তব্য করেননি। তবে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাওয়ের টুইট, ‘‘কোর্টের নির্দেশের পরে বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা দলের হুইপ অগ্রাহ্য করার সুযোগ পেয়ে যাবেন। এই রায় সংবিধানে হুইপের মূল্য সম্পর্কে ভুল নজির সৃষ্টি করছে। কোর্টের রায় আইনসভার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। এটা খুবই খারাপ রায়। যা দলত্যাগীদের রক্ষা করতে সাহায্য করবে, ঘোড়া কেনাবেচার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’’ তবে রায় নিয়ে কংগ্রেসের মিডিয়া বিভাগের প্রধান রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা ও মুখপাত্র-আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির বক্তব্যের বিভেদও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সুরজেওয়ালা রায় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন, আর এই মামলার আইনজীবী সিঙ্ঘভির দাবি, শীর্ষ আদালতে তাঁদের ‘জয়’ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন